ঢাকা, ৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

নামকাওয়াস্তে উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি

স্টাফ রিপোর্টার
২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার
mzamin

নির্বাচনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক তলানিতে। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর আরও কোণঠাসা দলটির অবস্থান। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে অর্থ নষ্ট করতে চাচ্ছেন  না নেতারা। তারা আস্থা রাখতে পারছেন না নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর। নির্বাচনের জন্য মাত্র ৮টি ফরম বিক্রি করতে পেরেছে দলটি। জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাচন কমিশনকে বলছেন দন্তহীন বাঘ। আবার নেতৃত্ব নিয়ে দলাদলি করলেও উপজেলা নির্বাচনে নেই রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও। জাতীয় পার্টির দপ্তরের তথ্যানুযায়ী মাত্র ৮টি ফরম বিক্রি হয়েছে। ফরম বিক্রি হয়েছে রংপুরে ৩টি, দিনাজপুর, নরসিংদী, খাগড়াছড়ি সদর, বরিশাল সদর ও মূলাদীতে।

বিজ্ঞাপন
কেন নির্বাচনে যাচ্ছেন না তারা? গাইবান্ধার জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, সারাজীবন দলের রাজনীতি করে আসছি। কিন্তু এখন জাতীয় পার্টির অবস্থান তলানীতে। একটা নির্বাচন করতে মিনিমাম একটা খরচ হয়ে থাকে। এই টাকাটাই পানিতে ফেলে দেয়া হবে। এখানে দুইটি বিষয় জড়িত।

 প্রথমত লাঙ্গলের জন্য ভোট চাওয়াটা এখন বোকামো। আমাদের অবস্থান যাচ্ছেতাই। আর দ্বিতীয়ত আমি ভোট বেশি পেলেই যে জয়লাভ করবো তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। আনোয়ারুল ইসলাম নামে এক নেতা বলেন, ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জাতীয় পার্টি হারিয়ে যাবার পথে। আমাদের এলাকায় যতই গ্রহণযোগ্যতা থাক আমরা নির্বাচনে গেলে জামানত রক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা নিজেদের সংসদের সিট নিয়েই খুশি। নিজের স্ত্রীর সিটের জন্য দল বিক্রি করতেও পিছপা হন না। একটা সমাবেশ করতে পারেন না। এমন নেতৃত্ব দিয়ে দল চলে না। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে নেই বড় কোনো দল। আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা দেয়া হচ্ছে না। অন্য দল না থাকলেও নির্বাচনে লাঙ্গল দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই লাঙ্গল নিতে আগ্রহী নন নেতারা। দলটির এতটাই অবস্থা করুণ যে লাঙ্গলের দুর্গ হিসেবে পরিচিত রংপুরেও নেই লাঙ্গলের ডামাডোল। রংপুরের জাতীয় পার্টির এক নেতা বলেন, একটা সময় এরশাদ সাহেব সশরীরে উপস্থিত হতে না পেরেও জয়লাভ করেছেন। সেই দল এখন প্রার্থী দিতে পারে না। এসব তথ্য কী চেয়ারম্যানের (জিএম কাদের) কানে যায় না? তিনি বড় বড় কথা বলেন আমরা একটা সময় হাততালি দিতাম। এখন তার কথা শুনলেই বোঝা যায় তিনি নাটক করছেন।

  চলতি বছরের ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে মাত্র ১১টি আসন পায় জাপা। আওয়ামী লীগ ২৬টি আসন ছেড়ে দিলেও তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে হার দেখেন। ছাড়ের আসনের ৯টিতে জামানত পর্যন্ত রক্ষা হয়নি। লাঙ্গলে ভোট পড়ে মাত্র ৪ শতাংশ। যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন। ছাড়ের বাইরে ২৩৯টি আসনের মধ্যে ২৩৫টিতেই জামানত হারান লাঙ্গলের প্রার্থীরা। এরপর মার্চে হওয়া দুই সিটি করপোরেশন, ৯ পৌরসভা এবং ১৩ ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এর মাত্র দুটিতে প্রার্থী দিতে পেরেছিল জাপা। কিন্তু সেখানেও জামানত রক্ষা করতে পারেননি তারা।  নির্বাচনের বিষয়ে দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রশাসনের মাথায় ঢুকে গেছে আওয়ামী লীগ চারবার ক্ষমতায় এসেছে তারা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। তাই আমাকে আওয়ামী লীগকে খুশি করতে হবে। এই কারণে এই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে বলে আমরা মনে করছি না। আমাদের অনেক ভালো প্রার্থী এগিয়ে আসছে না।  নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আসলে দন্তহীন বাঘ। তাদের অধীনে যারা থাকবে তাদের কথা না শুনলে তাদের করার কিছু থাকে না। তারা শুধু শাস্তির জন্য রেফার করেন, এটুকুই। এদিকে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেকটি জাতীয় পার্টি গঠিত হয়েছে। নেতৃত্ব নিয়ে দু’পক্ষের প্রতিযোগিতা হলেও তাদেরও কোনো প্রাথী নেই উপজেলা নির্বাচনে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status