শেষের পাতা
বলা হয়েছিল আপনি না গেলেও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবারজাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ১৬ তারিখ (গত ১৬ই ডিসেম্বর) সবাইকে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি নির্বাচনে যাবো না। ১৭ তারিখ (মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন) নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিলাম। তারপরে চাপ এলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ। প্রত্যক্ষ চাপের কথা বলবো না, আপনারা বুঝে নিবেন। পরোক্ষ চাপ হলো আমাকে বলা হয়েছিল আপনি নির্বাচনে না গেলেও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে।
গতকাল জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, গেল জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় নাই। আমরা গেলেও যা হয়েছে, না গেলেও তাই হতো। আমরা না গেলেও নির্বাচন হতো, জাতীয় পার্টি হয়তো যেতো। সরকারের এমন প্রস্তুতি ছিল। বিএনপি আন্দোলনে পরাস্ত হয়েছে, আমি তাদের দোষ দিচ্ছি না।
জিএম কাদের বলেন, কিংস পার্টিগুলোর কী হয়েছে? ১৪ দলীয় জোটের কী অবস্থা? আওয়ামী লীগের গৃহপালিত মিত্রদের কী হয়েছে? জনগণের ওপর ভরসা রেখে রাজনীতি করতে হবে। তাই রাজনীতি করতে হবে হয় গলায় ফুলের মালা না হয় ফাঁসির রশি, এটা যারা গ্রহণ করতে পারবে তারাই রাজনীতিতে সফল হতে পারবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন ছিল জীবন-মরণের সংগ্রাম। তারা নির্বাচন করতে না পারলে তাদের অস্তিত্ব সংকট হবে। বিদেশি কিছু শক্তির কথায় পরিষ্কার বোঝা গেছে তিনটি বড় শক্তি নির্বাচনকে সফল করতে চেয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছিল। তারা সিরিয়াসভাবেই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম বিএনপি’র আন্দোলন সফল হবে না। বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে কোনো সরকারের পতন হয়নি। আমরা আশা করেছি আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র সঙ্গে আমাদের দর কষাকষির সুযোগ হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ চায় আমরা যেন বিএনপি’র দিকে না যাই আর বিএনপি চায় আমরা যেন আওয়ামী লীগের দিকে না যাই। দেখেছি, বিএনপি অন্দোলনের নামে ফাঁদে পড়ে যায়। আন্দোলনে সহিংসতার নামে তাদের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলো এবং সাজা দেয়া হলো। এভাবে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা হলো। এমন অবস্থায় মাঠে থাকলাম আমরা ও আওয়ামী লীগ। তখন প্রশ্ন এলো, আমরা নির্বাচনে না গেলে অওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে কোনো দর কষাকষিতে আসে নাই। স্পষ্ট বোঝা গেছে গ্রহণযোগ্যতার জন্য তারা লালায়িত ছিল না। তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টিকে অনুগত বিরোধী দলের ক্যাটাগরিতে ফেলতে পারছিল না। আমার ধারণা, আমার প্রতি তাদের অবিশ্বাস ছিল। তারা আমাকে দিয়ে অনুগত বিরোধী দল সৃষ্টি করতে পারবে না। কিছু পচা, মরা ও আবর্জনা আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে আমাদের অনুগত বিরোধী দল করতে চেয়েছে। আমি এতে রাজি হই নাই। অনেকেই প্রচার করেছে, গ্রহণযোগ্যতার জন্য জাতীয় পার্টিকে বিক্রি করা হয়েছে, আসলে গ্রহণযোগ্যতার জন্য তারা কোনো দলই কিনতে চায়নি। বিভিন্ন চাপের কারণে সরকার আমাদের সঙ্গে সমঝোতা শুরু করেছে। তারা দর কষাকষিতে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়নি। তখন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। সবাই বললো, আমাদের দল অন্দোলনে নেই, নির্বাচনে না গেলে ভবিষ্যতে দল টিকিয়ে রাখে যাবে না। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করেছি। তার অর্থ হচ্ছে, রাজনীতি করবো গলায় মালা নেয়ার জন্য অথবা রাজনীতি করবো না। এখন রাজনৈতিক চরিত্র পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। এখন রাজনীতি হচ্ছে গলায় মালা নিবেন না হলে ফাঁসির রশির জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ১৬ই ডিসেম্বর ২৬ জনের একটি তালিকা দেয়া হলো, যে তালিকায় আমাদের ১০০ জনের, ৭০ জনের বা ৫০ জনের তালিকা অনুসরণ করা হয়নি। তাদের ইচ্ছেমতো ২৬ জনের তালিকা করে বলে দিলো, জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের পক্ষে আমরা প্রত্যাহার করলাম। সেখানে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আরও অনেক প্রার্থী ছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেক শক্তশালী প্রার্থী ছিলেন। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল তারা আওয়ায়ামী লীগের অন্য প্রার্থীদের জেতানোর জন্য চেষ্টা চালিয়েছে। সেই ২৬ জনের তালিকা দিয়ে ঘোষণা করা হলো জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়া হলো। বাস্তবতা হচ্ছে নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। আমরা বলেছিলাম নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে। আইনশৃংখলা বাহিনী দলীয় নেতা কর্মীদের মতো কাজ করবে না। ২৬টি তালিকা দেয়ার পরে আমি বলেছিলাম আমাদের আরও ১০ থেকে ১৫ জন ভালো প্রার্থী আছেন, যারা সুষ্ঠু নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবেন। তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারা শুধু আমার স্ত্রীর আসন দিয়ে বলেছে, বাকিটাও প্রসেস করা হচ্ছে। তারা দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নিশ্চিত করেছিল নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। তখন প্রশ্ন এলো আমার স্ত্রীর জন্য দল বিক্রি করে দিয়েছি। আমি ৩০ বছর ধরে উত্তরায় বসবাস করছি। সেখান থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি আমাদের ছিল। আমার স্ত্রী ২০১০ সাল থেকে সরাসরি জাতীয় পার্টি করছেন। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছিলেন। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর আমার নির্বাচনী এলাকা দেখাশোনা করেছেন। নেতাকর্মীরা তাকে লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের পরামর্শে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়েছে। অথচ ব্যাপকভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে। সিলেটের আতিকুর রহমানের আসনের বিপরীতে আমার স্ত্রীর আসন নেয়া হয়েছে, আসলে আমাকে ছোট করতেই এই অপপ্রচার করা হয়েছিল। আমাকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করা হয়েছে শুধু জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে।
রংপুর-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, পরবর্তীতে যখন আমরা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখন নির্বাচনে ভালো করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের ঘোষণা অনুযায়ী ছাড় দেয়া ২৬টি সিট জনমনে এবং নেতাকর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ওই ২৬ জন ভেবেছিল তারা এমপি হয়ে গেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তারা আমলে নেয়নি। আবার যারা ২৬টি আসনের বাইরে ছিল তাদের মাঝে ছড়ানো হয়েছে কয়েকশ’ কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে পার্টি। তারা বলেছে, আমরা এমপি হতে না পারলে টাকার ভাগ চাই। আমার দোষ দেয়া হলো, আমি কাউকে টাকা-পয়সা দেইনি। আরেকটি অপপ্রচার করা হয়েছিল, আমি নাকি বিরোধীদলীয় নেতা হবার জন্য নির্বাচনে গিয়েছিলাম। বিরোধীদলীয় নেতা কে হবেন আপনারা জানতেন? এটা নিয়ে তো গবেষণাই চলেছে, যদিও আইনতভাবে আমাদেরই হবার কথা। মনোনয়ন বোর্ডে সিনিয়র নেতারা ছিলেন, তাদের মতামতের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাই মনোনয়ন বাণিজ্যের কথা আসে না। আমার নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, আমি নাকি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছি এবং সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। আমি মনোনয়ন দেয়ার সময় সকল প্রার্থীকে জানতে চেয়েছি নির্বাচন করার মতো টাকা আছে? সবাই বলেছে আছে। অনেকেই আমাদের কাছে টাকা চেয়েছে আবার স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে দর কষাকষি করেছে।
বর্ধিত সভার স্বাগত বক্তব্যে মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রশাসনের ভূমিকা ও অর্থের অভাবে আমাদের অনেক জনপ্রিয় নেতা নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছে প্রশাসন। নির্বাচনের পর অনেক সহকর্মী ভুল বুঝে দূরে সরে গেছেন, ভালো থাকলে দুঃখ নেই। কিন্তু যারা প্রার্থী হলেন না, নির্বাচন করলেন না তারা গেলেন কেন? পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিনিধিত্ব করেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তার নেতৃত্বেই জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, এডভোকেট সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, উপদেষ্টা আশরাফুজ্জামান আশুসহ বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, এসএম আব্দুল মান্নান, এটিইউ তাজ রহমান প্রমুখ। বর্ধিত সভায় আগামী ১২ই অক্টোবর জাতীয় পার্টির কাউন্সিল বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এ ছাড়াও আগামী ৩০শে আগস্টের মধ্যে সকল পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
একালের মীরজাফর
Most important mirjafor
এই কথাগুলো দিল্লির পারমিশন নিয়ে বলেছেন তো ? নাকি ভ্রম হয়ে গেছে ? এর আগে বলেছিলেন, “দিল্লির পারমিশন ছাড়া কিছু বলবেন না।” জনগণের কালেকটিভ মেমোরি এগুলো ভোলে না।
once বেঈমান always বেঈমান। এর আগেও অনেকবার বেঈমানী কর
দুনিয়ার সব গোপালভাঁড় চি....বাটপার ...নির্ল....এক থালাতে থাকলে তাকে জাপা বলে!
রাজনীতি করতে হবে হয় গলায় ফুলের মালা না হয় ফাঁসির রশি, এটা যারা গ্রহণ করতে পারবে তারাই রাজনীতিতে সফল হতে পারবে। জনাব আপনার এ নীতিকথাটি সুন্দর হয়েছে! তবে আপনি নিজেও এর উপর থাকতে পারেননি।
once বেঈমান always বেঈমান। এর আগেও অনেকবার বেঈমানী কর
সহজ সরল গৃহপালিত। তেল মারাই যার মুখ্য কাজ।
You are broker of dusty politics, same as your bother Earshad. Yours main target not politics, earn money by selling politics.
গৃহপালিতদের মুখে এইসব কথা মানায় না।
এই বার বসে বসে বাতাসা খাও, হে বড় নেতা। দেশ তো রসাতলে গেছেই। রসগোল্লাও খাও।