ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

পরীমনিকে তলব

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার
mzamin

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত আগামী ২৫শে জুন তাদের হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন। গতকাল ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলাম এ সমন জারির আদেশ দেন। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। কিন্তু আদালত সে আবেদন গ্রহণ করেননি।

ঢাকার সিজেএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির  বলেন, মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় পিবিআই পরীমনি ও জুনায়েদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। আদালত পিবিআইয়ের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৬ ধারা অনুযায়ী দুই আসামি পরীমনি ও জুনায়েদকে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। আগামী ২৬শে জুন আদালতে হাজির হয়ে তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য প্রদানের জন্য সমন জারি করেছেন বিচারক।  

এর আগে নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র  ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন। প্রতিবেদনে আসামি পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে এতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
ক্লাবে খাওয়া দুই বোতল ব্লু লেবেলের দাম ও পার্সেলে নেয়া দুই বোতল ওয়াইনের দাম পরিশোধ না করেই তারা ক্লাব থেকে চলে যায়। ওই চারটি বোতলের দাম ৮৭ হাজার ৬৫০ টাকা। এছাড়া ক্লাবের বারের ভেতরে গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ভাঙচুর করায় আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনে যা বলা হয়: ২০২১ সালের ৮ই জুন তুহিন সিদ্দিকী অমি বনানী কিংস বেকারি শপে অবস্থানকালে পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিম তাকে ম্যাসেঞ্জারে কল করে বনানীর বাসায় যেতে অনুরোধ করেন। বাসায় যাওয়ার পর অমির সঙ্গে পরীমনি এবং ফাতেমা তুজ জান্নাত বনিদের সাক্ষাৎ হয়। পরে পরীমনির অনুরোধে অমিসহ তারা চারজন অমির কালো রঙের জিপ গাড়িতে করে রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবে আসেন। গাড়ির পেছনে পরীমনির সাদা রঙের খালি জিপ গাড়ি বোট ক্লাবে প্রবেশ করে।

ক্লাবের দোতলায় উঠে পরীমনি ও ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি বারের টিভি’র সামনের টেবিলে বসেন। টেবিলে  অমিও বসেন। সৌজন্যতার খাতিরে অমি তাদেরকে স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার নিজ খরচে পরিবেশন করে আপ্যায়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরীমনি একটি এক লিটারের ব্লু-লেবেল মদের বোতল অর্ডার করেন। পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা জিম ও বনি নিমিষেই সেই বোতলের অ্যালকোহল পান করে বোতল খালি করে ফেলেন এবং অনুরূপ আরেকটি বোতলের অর্ডার করেন। তারা ওই বোতলের আংশিক মদ পান করেন।

আড্ডার একপর্যায়ে তাদের ২/৩ টেবিল পেছনে বোটক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাছির উদ্দিন মাহমুদকে আরও দুইজন ব্যক্তির সঙ্গে বসা দেখতে পান অমি। তখন অমি পরীমনিকে নিয়ে নাছির মাহমুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং পুনরায় তাদের টেবিলে এসে বসে মদ্যপানসহ গল্পগুজব করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর নাছির মাহমুদ ও তার সঙ্গে থাকা আরও দুইজন যখন বার থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পরীমনি নাছির মাহমুদকে ডেকে বললেন, ভাই আমি আসলাম, আর আপনি এক্ষুনি চলে যাচ্ছেন? আমাদের সঙ্গে আরেকটু বসেন। আসেন কিছুক্ষণ গল্প করি। তখন পরীমনির অনুরোধে নাছির মাহমুদ ফিরে এসে পুনরায় তার টেবিলে বসেন। কিছুক্ষণ পর ড্রিংকস শেষে পরীমনি ওয়েটারকে আরও এক লিটারের তিনটি ব্লু লেবেল মদের বোতলসহ দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দেয়ার জন্য অর্ডার করেন। ওয়েটার তখন পরীমনিকে দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দিলেও ব্লু লেবেল মদের বোতল স্টকে না থাকায় পার্সেল দিতে পারেননি। তখন পরীমনি ডিসপ্লেতে থাকা একটি ব্লু লেবেল বোতল পার্সেল করে দিতে বললে ওয়েটার জানান বোতলটি বিক্রির জন্য নয় এবং ক্লাবের মেম্বার ছাড়া পার্সেল দেয়া যাবে না। কিন্তু পরীমনি জোর করে ওই বোতল নিতে চান এবং টেবিলে হট্টগোল করতে থাকেন। পরীমনি উত্তেজিত হয়ে কার্ডহোল্ডার বের করে দুই-তিনটি ব্যাংক কার্ড দেখিয়ে বলেন, ‘আমি কি ফকিরনি? আমার বিল আমি পরিশোধ করবো। আমি এটা নেবোই।

পরিমনির সঙ্গে থাকা ফাতেমা বনি ও জিম তাকে বুঝাতে গেলে তাদেরকে থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পরীমনি খুবই উত্তেজিত হয়ে টেবিলের ওপর থাকা গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ফ্লোরে এদিক-ওদিক ছুড়তে থাকেন। তখন নাছির মাহমুদ ক্লাবের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পরীমনিকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এতে পরীমনি আরও ক্ষেপে গিয়ে একটি অ্যাশট্রে নিয়ে তার দিকে ছুড়ে মারেন। যা তার ডান কানের উপরে মাথায় লাগে। তখন নাছির মাহমুদ ক্লাবে পরীমনিকে সঙ্গে করে আনায় অমির উপর রেগে যান এবং বলেন, ‘এ রকম বেয়াদব মহিলা নিয়ে কেন ক্লাবে আসেন, কাল আপনার নামে নোটিশ হবে। এক্ষুনি এদেরকে নিয়ে বেরিয়ে যান। তখন জিম তেড়ে এসে বাদী নাছির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে ২/৩টা কিলঘুষি মারেন। এরপর আবারও পরীমনি বারের ভেতরে যত্রতত্র গ্লাস ছুড়ে ভাঙচুর করতে থাকেন। একটি গ্লাস নাছির মাহমুদের বুকে লাগলে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। তখন নাছির মাহমুদ বোট ক্লাব ত্যাগ করে চলে যান। ক্লাব ত্যাগ করার মুহূর্তে পরীমনিকে ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে বলার জন্য ক্লাবের নিচে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশ দিয়ে যান। নাছির মাহমুদ আহত অবস্থায় ওই রাতে আড়াইটার দিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

বার ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সিকিউরিটি গার্ড পরীমনিকে বারবার বললেও তারা যেতে চাননি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সিকিউরিটি গার্ড বারের লাইট ও এসি কমিয়ে দেয়। তারপরও পরীমনি যেতে না চাইলে অমি তাকে বার থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং পরীমনির সঙ্গে থাকা জিম ও সিকিউরিটি গার্ড তাকে ধরে গাড়িতে তুলে দেয়। ক্লাবে তাদের খাওয়া দুই বোতল ব্লু লেবেলের দাম ও পার্সেলে নেয়া দুই বোতল ওয়াইনের দাম পরিশোধ না করেই তারা ক্লাব থেকে চলে যায়। এই চারটি বোতলের দাম ৮৭ হাজার ৬৫০ টাকা। এছাড়া ক্লাবের বারের ভেতরে গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ভাঙচুর করায় আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
 

পাঠকের মতামত

All Concern of the country Making her Famous like this with exchange of ??? why ??? Still now drama of purpose is going on and no judgement ?

sami
২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status