ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

সুজনের বিশ্লেষণ

সংরক্ষিত নারী আসনেও ব্যবসায়ীদের আধিক্য

স্টাফ রিপোর্টার
২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনেও ব্যবসায়ীরা এগিয়ে। সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত ৫০ জন সংসদ সদস্যের হলফনামায় দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ  করে এ কথা জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের হলফনামার তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরে সংস্থাটি। 
জানানো হয়, সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত ৫০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৩ জনের (২৬ শতাংশ) পেশা ব্যবসা। এ ছাড়া ৭ জন (১৪ শতাংশ) চাকরিজীবী, ৫ জন (১০ শতাংশ) শিক্ষক, ৫ জন (১০ শতাংশ) গৃহিণী, ২ জন (৪ শতাংশ) আইনজীবী ও ২ জন (৪ শতাংশ) কৃষিজীবী। ৮ জন (১৬ শতাংশ) তাদের পেশা রাজনীতি উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া ৮ জন (১৬ শতাংশ) বিভিন্ন পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

আইন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত দুজনই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার শতকরা ২২.৯২ শতাংশ এবং জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের ১০০ শতাংশই ব্যবসায়ী। অর্থাৎ দলটির দুজন সংসদ সদস্যই পেশায় ব্যবসায়ী।
এর আগে ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন শেষে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের তথ্য বিশ্লেষণ করে সুজন জানিয়েছিল, ২৯৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২০০ জনের পেশা ব্যবসা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার জানান, সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত ৫০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে বার্ষিক ৫ লাখ টাকা বা তার চেয়ে কম আয় করেন মাত্র ১০ জন (২০ শতাংশ)। আয়ের ঘর পূরণ করেননি ২ জন। বছরে ৫ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করেন ২০ জন (৪০ শতাংশ), ২৫ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করেন ১০ জন (২০ শতাংশ), ৫০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা আয় করেন ৫ জন (১০ শতাংশ) এবং ১ কোটি টাকার বেশি আয় করেন ২ জন (৪ শতাংশ)।

কোটি টাকার অধিক আয় করেন যে ২ জন, তারা হলেনÑ শাম্মী আহমেদ (১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ১৭১ টাকা) এবং অপরাজিতা হক (১ কোটি ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭১৭ টাকা)।

বিজ্ঞাপন
তারা উভয়েই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত ২ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১ জনের (৫০ শতাংশ) বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকার কম এবং ১ জনের (৫০ শতাংশ) ৫০ লাখ টাকার অধিক।

দিলীপ কুমার সরকার বলেন, সাধারণ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ৩৭.৩৩ শতাংশ কোটি টাকার বেশি আয় করলেও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই হার ৪ শতাংশ। এখানে সাধারণ আসন এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্যে আয়বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত ৫০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৩০ জন (৬০ শতাংশ) স্নাতকোত্তর (২ জন পিএইচডিসহ), ৮ জন (১৬ শতাংশ) স্নাতক, ৪ জন (৮ শতাংশ) এইচএসসি, ৫ জন (১০ শতাংশ) এসএসসি এবং ৩ জন (৬ শতাংশ) এসএসসি’র চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন।

সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা বহু দিন ধরেই আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। কিন্তু কতোটুকু ইতিবাচক তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠী। কিন্তু সংসদে মাত্র ৫০ জন নারীর জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। তাছাড়া এই সংরক্ষণ ব্যবস্থার সমস্যা হলো এতে কোনো নির্বাচন হয় না এবং প্রার্থীর যোগ্যতাকে বিবেচনায় নেয়া হয় না। বরং দলীয় প্রধানই অনুগ্রহ করে কিছু নারীকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেন। সংরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচিত নারীদের পরবর্তীতে সরাসরি আসনে নির্বাচিত হয়ে আসার যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা তা দেখতে পাচ্ছি না। তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি বহাল রয়েছে। বাংলাদেশেও এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা দরকার। এর ফলে নারীরা তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারবেন এবং প্রকৃত অর্থেই নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে।

পাঠকের মতামত

মনোনয়ন পাইতেও টাকা লাগে। ফকিন্নী হলে টাকা দিবে কোথা থেকে।

Siddq
২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status