বিশ্বজমিন
ভারী বর্ষণে দুবাই বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি
মানবজমিন ডেস্ক
১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারভারী বর্ষণে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দেশের বিপুল পরিমাণ যাত্রী সেখানে আটকে পড়েছেন। তাদের খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। অভিযোগ জানানোর মতো কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ফলে চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন অনেকে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অবস্থা শোচনীয়। তবু কোনো সুখবর পাচ্ছেন না তারা। উপরন্তু কর্তৃপক্ষ আরও বৃষ্টি, ঝড়ের সতর্কতা দিয়েছে। মঙ্গলবার ভারী বর্ষণ শুরু হলে বুধবার দেশটির বিভিন্ন এলাকা এবং বিমানবন্দর পানিতে ডুবে যায়। মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, এ সময়ে ৭৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে ২৫৯.৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়। সেখান থেকে বৃটিশ পর্যটক অ্যানি উইং তার স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছার আশা করছেন। পরিস্থিতিকে তিনি ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, জীবজন্তুর মতো আমরা ছিটকে পড়েছি। পুরো বিপজ্জনক ও অমানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ডেস্কের সামনে গিয়ে যাত্রীরা চিৎকার করছেন। কেউ কোনো কথা শুনছেন না। পরিস্থিতি উত্তেজিত হয়ে উঠছে। কিন্তু ডেস্কে কোনো স্টাফ দেখা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে তার পরিবার কোনো খাবার পাচ্ছে না। তাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা শুধু পানির ছোট ছোট কার্টন।
জবাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, চারদিকের সড়কে পানি। ফলে সেই পানি ভেঙে বিমানবন্দরে আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য খাবার নেয়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে অনেক যাত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝারছেন। তারা বিস্তারিত তথ্য চাইছেন। অন্যরা ভীষণ উদ্বিগ্ন। অনেকে ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করছেন। তাদের বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু টিকিট প্রসেস করা হচ্ছে না। চেকইন/ব্যাগ ড্রপ/পাসপোর্ট কন্ট্রোল শাখাগুলো খোলা হয়নি। অথচ গত বছর দুবাই বিমানবন্দর কমপক্ষে ৮ কোটি যাত্রীকে সেবা দিয়েছে। তারা আটলান্টার পরেই দ্বিতীয় বৃহৎ বিমান সংস্থা। তারা জানিয়েছে, যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে মুক্তি মিলতে কিছু সময় প্রয়োজন। কিন্তু ওই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। বুধবার রাতে দুবাইয়ের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায় ডজন ডজন গাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। দীর্ঘ জ্যাম লেগে আছে বিভিন্ন স্থানে। তারপরও কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে যে, আরও বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। পার্শ্ববর্তী ওমানে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে স্কুল ও সরকারি অফিসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।