অনলাইন
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
সিংড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ তিনজনকে অপহরণ
নাটোর প্রতিনিধি
(২ সপ্তাহ আগে) ১৫ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ৭:১১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৫৯ অপরাহ্ন
পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হচ্ছে। লুৎফুল হাবীব উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের শ্যালকও। এ বিষয়ে জানতে লুৎফুল হাবীবের মুঠোফোনে একাধিকার ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।
সিংড়া থানা ও ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন লুৎফুল হাবীব। রোববার পর্যন্ত তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। মনোনয়ন জমার শেষদিন সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন নাটোর স্টেশন এলাকার একটি কম্পিউটার দোকানে আসেন। এসময় তাঁর বড় ভাই ও কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এবং কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সি ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বের হন। তাঁরা কোড নম্বর জানার জন্য নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এলে কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যুবক তাঁদের পথরোধ করেন। একপর্যায়ে তাঁদের জোর করে ওই মাইক্রোবাসে করে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
তবে বেলা ৩টা ৩২ মিনিটে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম জানান, নিখোঁজ দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে তিনি মাইক্রোবাসে করে তাঁদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তিনি তাঁর মুঠোফোনে অপহৃত কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।
এ সময় আলাউদ্দিন মুন্সি জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম তাদের নাটোর থেকে গাড়িতে করে নিয়ে এসেছেন। তাঁরা তাঁর সঙ্গে আছেন। তবে তাঁদের এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বিকেল পৌনে চারটার দিকে দেলোয়ার হোসেন এই প্রতিনিধির কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাঁর অপর সহোদর ভাইকে নিয়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যান মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে। বিকেল চারটার কিছু পরপরই একই মাইক্রোবাসে করে দুর্বৃত্তরা জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আসেন। তাঁরা প্রার্থী দেলায়ার হোসেনকে কিলঘুষি মারতে মারতে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে একজন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সাংবাদিক কামাল হোসেন জানান, সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহন আলীসহ কয়েকজন যুবক দেলোয়ারকে মারতে মারতে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে মোহন আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনিও ফোন ধরেননি।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, ৯৯৯ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি সকালের ঘটনার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছেন। অপহৃত দুজনকে মাইক্রোবাসে করে ঘোরানো হচ্ছে। আমরা তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। পরের ঘটনাটিও তাঁর থানা এলাকার বাইরে। তাই তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে বলবেন। পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকালের ঘটনাটি আমি জানতাম না। বিকেলের ঘটনার কথা শুনেছি। ইতিমধ্যে কয়েক দলে বিভক্ত হয়ে পুলিশ দুর্বৃত্তদের আটক করার জন্য ও অপহৃত দেলোয়ারকে উদ্ধারের জন্য তৎপরতা শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা জানান, তিনি নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি পুলিশ সুপারকে বিভিন্ন স্থানে চৌকি বসিয়ে ওই প্রার্থীকে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ ঘটনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।