অনলাইন
ইউসিবির সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(২ সপ্তাহ আগে) ৯ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৪২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৪৫ অপরাহ্ন
বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ইউসিবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ইউসিবি ব্যাংকের পর্ষদের একজন সদস্য ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। একীভূত হওয়া নিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ দ্বিধাবিভক্ত হলেও সরকার চাচ্ছে এটিকে একীভূত করতে। এ জন্য ইউসিবি ব্যাংককে এগিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ নিয়ে গত এক মাসে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বশেষ ইউসিবি ও ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে ডেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
গত ডিসেম্বরে আর্থিক নানা অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া সিকদার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আদেশে ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। এদিকে এখন পর্যন্ত যে ১০টি ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে ৫টি সরকারি ব্যাংক ও ৫টি বেসরকারি ব্যাংক।
২০২৩ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করেনি ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের যে আর্থিক প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণ হলো ৪২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। আর আমানতসহ মোট দায় ৪৮ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের প্রথম নয় মাসে ব্যাংকটি লোকসান দিয়েছে এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকও তাদের ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। তবে ওই বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই নয় মাসের আর্থিক প্রতিবেদনে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ বলা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। আর আমানতসহ মোট দায় হচ্ছে ৬২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা।
এই নয় মাসে ইউসিবি মুনাফা করেছে ১৭০ কোটি টাকা। তাঁদের রিটেইনড আর্নিং ছিল ৫৩৮ কোটি টাকা। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৮০৭ কোটি টাকা। ২০২২ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছর শেষে মোট বিতরণকৃত ঋণের ৫.৯৯ শতাংশ ছিল খেলাপি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ার ৬ টাকা ৯০ পয়সা দর নিয়ে কার্যদিবস শেষ করেছে।
ইউসিবির পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে এক হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা, মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কার্যদিবস শেষে প্রতিটি শেয়ারের দর দাঁড়ায় ১১ টাকা ৪০ পয়সা।
ইউসিবির খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের কম, সে তুলনায় ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ অন্তত ৫০ শতাংশ বলেই ধারণা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। ব্যাংক দুটির মোট শাখার সংখ্যা সাড়ে চারশ'র বেশি।