দেশ বিদেশ
প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তিন ঢাবি শিক্ষার্থীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোর্তিময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫)। পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মণ্ডল (৩০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রশ্নের উত্তরপত্র সরবরাহে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোবাইলে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। বলেন, গত ২৯শে মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে ৭ জন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা করেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মহানগর ডিবি’র প্রধান বলেন, অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তিনি বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি তাতে এই চক্রের মূলহোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। সে আগেই বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। সে অল্পদিনে কয়েক শ’ কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক একটি প্রভাব থাকা অসিমের মানব পাচার, হুন্ডি ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেপ্তার করলে কীভাবে সে প্রশ্ন পায় সেই বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারবো। এই ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত সে বিষয় তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ডিবি’র পক্ষ থেকে পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানাবে কিনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা এই মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন নাকি বহাল রাখবেন। তারা তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।