এক্সক্লুসিভ

একবছর ধরে খুলনায় খোলা আকাশের নিচে ৪০ হাজার টন সার

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৭:২০ পূর্বাহ্ন

এক বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে ৪০ হাজার টন সার। খুলনা মহানগরীর ৭ নং ঘাট, রুজভেল্ট জেটি, বন্দরঘাট ও শিরোমণি এলাকায় ত্রিপলে ঢেকে এসব সার রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সূত্র জানায়, তাদের পর্যাপ্ত গুদাম না থাকায় এভাবে সার রাখা হয়েছে। বিএডিসি সূত্র জানায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে মরক্কো, কানাডা ও সৌদি আরব থেকে তিন ধরনের সার আমদানি করা হয়। এগুলো হচ্ছে- ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি), মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ও ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি)। আমদানি করা এসব সার মংলা বন্দর হয়ে ছয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুলনায় আনা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- পোটন ট্রেডার্স লিমিটেড, সাউথ ডেল্টা শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেড, বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, নবাব অ্যান্ড কোম্পানি, এমএসকে শিপ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড চার্টারিং লিমিটেড ও তাইবা সাইফুল্লাহ। বিএডিসি গুদামে ঢোকানোর আগ পর্যন্ত এ সারের তত্ত্বাবধান করছেন ঠিকাদাররাই।
সরেজমিন দেখা যায়, ভৈরব নদের তীরে খোলা আকাশের নিচে রুজভেল্ট জেটি, খুলনা ওয়াসা ভবনের সামনে, ফুলবাড়ীগেটে মূল সড়কের পাশে, এজাক্স জুট মিলের ভেতরে ও শিরোমণি এলাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার রাখা হয়েছে। বালুর ঢিবি তৈরি করে তার ওপর এসব সার স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ত্রিপল দিয়ে মুড়িয়ে রাখার কারণে গত বর্ষায় কিছু জায়গায় পানি জমে সার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৭শে জুলাই ঢাকায় বিএডিসি’র এক বৈঠকে বিষয়টি তোলা হয়। তখন বিএডিসি জানায়, গুদামে সার ঢোকানোর আগ পর্যন্ত ঠিকাদাররাই এসব সার সংরক্ষণ করবেন।
বিএডিসি খুলনার যুগ্ম-পরিচালক (সার) প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘২০১৮ সালের জুন-জুলাই মাসে এসব সার আনা হয়েছিল, যা এখনও বিএডিসি’র নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এভাবে আরও সার আসতে থাকবে। বিএডিসি’র স্থানীয় গুদামের ধারণক্ষমতা ১৩ হাজার মেট্রিক টন। বাড়তি সার রাখার মতো জায়গা গুদামে নেই। এত সার রাখার জন্য এখানে গুদাম ভাড়াও পাওয়া যায় না।’ তিনি আরো বলেন, ‘ত্রিপল দিয়ে এয়ারটাইট করে রাখলে নন-ইউরিয়া সার ভালো থাকে। নিচে বালু দেয়া হয়েছে। তবে বেশি পানি জমে গেলে সমস্যা হতে পারে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স লিমিটেডের মালিক কামরুল আশরাফ খান বলেন, ‘গুদামের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পরিমাণে সার আমদানি করা হয়। বাড়তি সার রাখার জন্য আলাদা জায়গা ভাড়া, পাহারা দেয়া, একাধিকবার লোড-আনলোড করা বিভিন্ন কারণে আমাদের অতিরিক্ত খরচ হয়। এসব সার বিএডিসির গুদামে বুঝিয়ে দিতে না পারায় বিলও পাওয়া যাচ্ছে না।’
খুলনা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার বলেন, ‘সার খোলা আকাশের নিচে থাকলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে যদি এয়ারটাইট করে ভালোভাবে আটকে রাখা যায়, আশপাশে পানি না থাকে, তাহলে এই সার অনেক দিন এভাবে সংরক্ষণে ভালো থাকতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘খুলনাঞ্চলের কৃষকদের কাজের সুবিধার্থে ব্যাপক সার প্রয়োজন হয়। কৃষকদের জন্যই সরকার সার আমদানি করে। কিন্তু খুলনায় গুদামে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সার খোলা স্থানে ঢেকে রাখা হয়।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status