শেষের পাতা

স্বস্তি নেই কাঁচাবাজারে

নতুন করে বেড়েছে চিনি-পিয়াজের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

৩১ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

স্বস্তি নেই রাজধানীর কাঁচাবাজারে। একদিন কমলে পরের দিন আবার বাড়ছে। এ ছাড়া সবজির দাম যেন ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে একেবারে স্থায়ী হয়ে গেছে। আর কিছু সবজির দাম ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাজারে এখনও উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে দেশি ও আমদানি করা পিয়াজ।  এদিকে, আরো একদফা বেড়েছে চিনির দাম। বাজারে প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫-৫৮ টাকা। একমাস আগে খুচরা পর্যায়ে চিনি বিক্রি হতো ৫২-৫৪ টাকা কেজি। তবে কমতে শুরু করেছে ইলিশ, ডিম ও আদা-রসুনের দাম। রাজধানীর কাওরান বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই। শীতের আগাম সবজি শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে ৬০ টাকা। তবে সবজিটি এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে। কারণ বাজার ও মানভেদে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০-২০০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যে কোনো সবজি বাজারে নতুন আসলে দাম একটু বাড়তিই থাকে। শীত আসতে এখনো বেশ বাকি আছে। তবে শীতের আগাম সবজি হিসেবে শিম ইতিমধ্যে বাজারে চলে এসেছে। আগাম বাজারে আসায় এ সবজিটির দাম চড়া। মাস দুয়েক পর শিমের দামে অনেক কমে যাবে।

এদিকে, পাকা টমেটোর কেজি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। গাজরের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে করলা, বরবটি, বেগুনের। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। বেগুনের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির তালিকায় রয়েছে- পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, কাকরোল, ঢেঁড়স, লাউ। চিচিংগা, ঝিঙা, ধুনদল বিক্রি হচ্ছে ৪০- ৫০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৬০-৭০ টাকা কেজি। অর্থাৎ দাম চড়া হলেও সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় থাকা পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা পিস। এদিকে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। দেশি পিয়াজের বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা।
এদিকে, চিনির দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকায়ও দেখা গেছে। সেখানে মাসের ব্যবধানে চিনির দাম বেড়েছে ৭.২৭ শতাংশ। শুধু খুচরা পর্যায়ে নয়, পাইকারিতেও বেড়েছে চিনির দাম। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ২৭০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০০ টাকা।

কাওরান বাজারের মুদি বিক্রেতা আমিন বলেন, পাইকারি বাজারে চিনির দাম বাড়তি। তাই বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করি। পাইকারি বিক্রেতা কামাল বলেন, আমরা দাম বাড়াই না। বড় বড় ব্যবসায়ীরা মিলগেটে দাম বাড়ায়। আমরা পাইকারি বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে এনে বিক্রি করি। মিল মালিকদের কাছে আমরাও দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়েছি। তারা বলেন, বাজেটে চিনির ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। সেই ভ্যাটের কারণেই চিনির দাম বাড়তি।

বাজারে আসা নাইম বলেন, বাজারে এসে স্বস্তি নেই। সব পণ্যের দাম বাড়তি। চিনির দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা দরে কিনেছি। আর আজ দেখি চিনির দাম আবারও বেড়েছে। তিনি বলেন, আমাদের উপায় নেই, বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করে আমাদের সে দামেই কিনতে হয়। বাজার মনিটরিং নেই বললেই চলে।
এদিকে, বাজারে দেশি ও আমদানি করা পিয়াজ উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়েছে। হাতেগোনা কয়েকজন ছোট আকারের দেশি পিয়াজ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও অধিকাংশ বিক্রেতা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। গত সপ্তাহেও এ দামেই বিক্রি হয় দেশি পিয়াজ। আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকা কেজি। রসুনের দাম কিছুটা কমেছে। দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। মানভেদে আদা বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০-১৭০ টাকা।

ইলিশের সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারভেদে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতি পিস ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১১০০-১২০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ৮৫০-৯০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ৭০০-৭৫০ টাকা ও ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য মাছ গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৫০-১৬০, চাষের রুই ৩৫০-৪০০, পাবদা ৬০০-৭০০, টেংরা ৬০০-৭০০, শিং ৪০০-৫৫০, বোয়াল ৫০০-৭০০, চিংড়ি ৬০০-৮০০ এবং চিতল মাছ ৫০০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।

এদিকে, ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২২০-২৩০ টাকা, পাকিস্তানি কক ২২০-২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৫৫০-৫৭০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়। এছাড়া ফার্মের ডিম (লাল) প্রতি ডজন বিক্রি হয় ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০৫ টাকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status