ঢাকা, ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত চিড়িয়াখানার পশুপাখি

নাইম হাসান
৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত চিড়িয়াখানার পশু-পাখিরাও।  গরমের কারণে পশু-পাখিরাও নিজেদের গুটিয়ে রাখছে খাঁচায়। অপেক্ষাকৃত শীতল স্থানে অবস্থান করায় দর্শনাথীরা অনেক পশুকে এখন দেখতেই পান না। গরম থেকে রক্ষায় কিছু উদ্যোগও নিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে খাবারে যুক্ত করা হয়েছে ইলেক্ট্রোলাইট ও ভিটামিন-সি। গরমের কারণে চিড়িয়াখানায় কমেছে দর্শনার্থীর সংখ্যাও। 

চিড়িয়াখানার প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করেই রেসাস প্রজাতির বানরের দেখা মেলে। তবে বানরের বিশাল খাঁচাটি প্রায় শূন্য। বেশিরভাগই বেষ্টনীর টিনের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। তবে দু’একটি বানর গরম থেকে রক্ষা পেতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। দর্শনার্থীদের কোনোকিছুই তাদের টানছে না। 

দুপুর ৩টার দিকে চিড়িয়াখানার বাঘের খাঁচার সামনে গিয়ে কোনো বাঘকে দেখা যায়নি।

বিজ্ঞাপন
গরম থেকে বাঁচতে বাঘেরা তাদের শেডে অবস্থান করছিল। বাঘের খাঁচার দায়িত্বে থাকা আজম বলেন, বাঘেরা সবসময় বাইরেই থাকতে পছন্দ করে। তবে এখন গরম বেশি থাকায় বাইরে থাকতে চাইছে না। রুমের ভেতরে কিছুটা ঠাণ্ডা থাকায় তারা সেখানে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। বাইরে থাকলে সবসময় তাদের শরীর পানিতে ডুবিয়ে রাখে। 

চিড়িয়াখানার দক্ষিণ প্রান্তে দেখা মেলে হাতির। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে ৫টি হাতি আছে। গরমে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচবার গোসল করানো হয় তাদের। 

 

জলহস্তি ও কুমিরের খাঁচার অবস্থান পাশাপাশি। গরম সইতে পারে না জলহস্তী। তাদের মধ্যে মাত্র একটি খাবার খাচ্ছিল, বাকিগুলো পানি থেকে উঠছেই না। প্রচণ্ড গরমে সবগুলো জলহস্তি জলাশয়ে অবস্থান নিয়েছে। ক্যাঙ্গারু ও জেব্রা শেডের নিচে অবস্থান করছিল। চিত্রা হরিণকে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। স্বাভাবিক সময়ে এগুলোকে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। 

 

স্টর্ক ও ম্যাকাও জাতের পাখিগুলোকে প্রচণ্ড গরম থেকে রেহাই পেতে পানিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রচণ্ড গরমে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যাও কমেছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন ৫ ভাগের ১ ভাগ দর্শনার্থী আসছেন বলে জানান চিড়িয়াখানা সংশ্লিষ্টরা। 

পরিস্থিতি বিবেচনায় পশুপাখির কষ্ট লাঘবের জন্য কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, মানুষের মধ্যে যেমন অস্থিরতা বিরাজ করছে তেমনি আমাদের পশুপাখিরাও কষ্টে আছে। তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য জলাধারগুলোর পানি বারবার পাল্টে দিচ্ছি। পশুপাখিকে পানি স্প্রে করছি, কোনো কোনো জায়গায় ছাদের ওপরে ডাল দিয়ে দিয়েছি। চট ভিজিয়ে ফ্লোরে রেখেছি। বার-বার গোসল করাচ্ছি। পশুপাখিকে পর্যাপ্ত ইলেক্ট্রোলাইট ও ভিটামিন-সি সরবরাহ করছি। এখন পর্যন্ত এই গরমে কোনো পশুপাখি মারা যায়নি। 

গরমে পাখির খাবারে পরিবর্তন আনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খাদ্যের ক্ষেত্রে আমরা কিছু পরিবর্তন এনেছি। সহজপ্রাপ্য খাবার যেমন তরমুজ পাখিতে সরবরাহ করছি। 

প্রচণ্ড গরমের পরে ঠাণ্ডা আসলে পাখিদের মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে চিড়িয়াখানার পরিচালক বলেন, গত বছরে পাখির মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। এজন্য তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আমরা আগে থেকেই ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই দিচ্ছি। 

চিড়িখানায় খাঁচার তুলনায় জনবল কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে মোট ১৭০ জন কাজ করেন। আর মোট খাঁচার সংখ্যা ২৩৭টি। সেখানে যদি দুই শিফটে লোক দিতে হয় তাহলে ৬০০ জন লোক লাগবে।

 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status