প্রথম পাতা
মাঠ ছাড়ছেন না বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতারা
কিরণ শেখ
২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবারবর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট করছেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৭৬ নেতা। এরই মধ্যে ভোট বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ৭৬ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেয়াদের মধ্যে ৩০ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২১ জন। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে দল থেকে বহিষ্কৃত, অন্য দলে যোগ দেয়া এবং দলীয় নেতাদের আত্মীয়-স্বজনরাও রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচনে দলীয় নেতাদের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি’র বেশকয়েক নেতার সঙ্গে কথা হয় মানবজমিনের। তারা বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপরও অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাই দল বাধ্য হয়ে বহিষ্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করতে সাহস না পায়।
তবে দল কী করছে- সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না বহিষ্কৃত নেতারা। তারা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন এবং বিজয়ী হওয়ার জন্য কাজ করছেন।
বহিষ্কারাদেশ নিয়েই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তোফাজ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। দলের কারণদর্শানো নোটিশ প্রসঙ্গে তোফাজ্জল হোসেন তোফাজ মানবজমিনকে বলেন, আমি নোটিশের জবাব দেই নাই। কারণ জরুরি মনে করি নাই। আমি নির্বাচন করবো এবং আমি আমার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছি।
নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মানিকগঞ্জ হরিরামপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান তুষার। তিনি এই উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন। তুষার মানবজমিনকে বলেন, আমি এখন বেশি কথা বলতে পারবো না। আর আমি নির্বাচন করছি।
গত ১৫ই এপ্রিল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে শিগগিরই ফের রাজপথে আন্দোলন গড়ার চিন্তা করছে দলটি। এজন্য দলকে আরও বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কাজ করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। তাই প্রথম ধাপে অংশ নেয়া নেতাদের বহিষ্কার করে তৃণমূলে কঠোর বার্তা দেয়া হলো। যাতে আগামী ধাপের নির্বাচনগুলোতে তারা অংশ না নেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান মানবজমিনকে বলেন, তৃণমূলের সিদ্ধান্ত নিয়েই উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপরও যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে দল থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয় এবং সর্বশেষ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর আমরা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে ছিলাম এবং আছি।
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এস এ কবির জিন্নাহ বলেন, দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের। এর আগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং অংশগ্রহণ না নেয়ার বিষয়ে তৃণমূলের কাছে লিখিত জবাব নেন বিএনপি’র হাইকমান্ড। সুতরাং তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন বর্জন করা হয়। কারণ এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট হওয়া সম্ভব নয়।
সূত্রমতে, গত ১৫ই এপ্রিল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূলের কর্মী ও জেলায় শীর্ষ নেতাসহ দলীয় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি আলাপ-আলোচনা করেই উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকে নেতারা উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। এদিন রাতেই বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়ালি সভা হয়। ওই সভায় উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শুক্রবার বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে গতকাল আরেক বিবৃতিতে বলা হয়, ৮ই মে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে অংশ নেয়ায় আরও তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দরা হলেন: ময়মনসিংহ উত্তর জেলা হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপি’র সদস্য আব্দুল হামিদ (উপজেলা চেয়ারম্যান), রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা মংসুইউ চৌধুরী (উপজেলা চেয়ারম্যান) এবং শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার ২নং পৌর ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি গোলাম মোস্তফা ‘সোনাহার’ (ভাইস চেয়ারম্যান)। এতে বলা হয়, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিএনপি’র প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী মানবজমিনকে বলেন, জাতীয়তাবাদীর রাজনীতি করবে আর সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচন করবে, এটা বিএনপিতে হবে না। মূলত সরকারের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দল বলার পরও তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। এজন্য তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
BNP END
Sokol netai tar jebodosai somaj totha desh k kisu dea shakhor rakta cha.
বহিষ্কৃতরা সরকারি দালাল হতে পারে? সামাজিক ভাবে ও এদেরকে বয়কটের ডাক দেয়া যেতে পারে? প্রতিনিয়ত বিএনপি দালালমুক্ত হচ্ছে। এবং বিএনপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।।
কেন্দ্র ভুল করতে পারে। আপনারা ভুল করবেন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয় না। নির্বাচন নির্বাসনে পাঠিয়েছে সে কত কাল আগে। ভোটের মাঠে থেকে অন্তত কর্মী ও জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে। উনারা নয়াপল্টনে বসে বসে বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ থাক। ফেসশো এসব নেতারা জোট ও ঘর ভাঙ্গতে ব্যস্ত।
দলীয় নিদ্দেশ অমান্যকারী বিএনপির ৭৩ নয়,৭৩০ নেতাকে বহিষ্কার করলেও বিএনপির কোনো ক্ষতি হবেনা। দেশে মানুষ বিএনপিকে বিশ্বাস করে অপেক্ষারত।