অনলাইন

শেবাচিম-এর ডাস্টবিনে ৩৩ নবজাতকের লাশ

বিভাগীয় প্রধানসহ ২ জন সাময়িক বরখাস্ত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে ৩৩ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ  প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ ঘটনায় তিনি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।


সোমবার রাতে ঘটনা জানতে পেরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে ক্ষোভ  প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসপাতাল পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেনকে ফোনে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন।


হাসপাতাল পবলেন, বিঅনুযায়ী গাইনি বিভাগের  প্রধান ডা. খুরশিদ জাহান এবং ওই বিভাগের ওয়ার্ড ইনচার্জ নার্স জোসনা বেগমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ অধিদপ্তরে আবেদন পাঠানো হবে। অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে যাবে। এরপরই তাদের বরখাস্ত কার্যকর হবে।


এর আগে, সোমবার রাত ৮টার দিকে এসব মরদেহ ও অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ পাওয়া যায়। যার অধিকাংশই ছিল বোতলজাত। রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে  পৌঁছে মৃতদেহগুলোর সুরতহাল শুরু করে।


হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালে জন্ম নেয়া অপরিণত শিশুর মৃতদেহ কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য মেডিসিনের মাধ্যমে বোতলে ভরে রাখা হয়। ১৫-২০ বছর পূর্বে অপরিণত এসব শিশুর মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়। ওই বোতলগুলো গাইনি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ছিল। তাছাড়া বোতলে থাকা  মেডিসিনের মেয়াদও শেষপর্যায়ে থাকায় তা মাটিচাপা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওয়ার্ড-বয়রা কোনো কিছু না বলে হাসপাতালের পেছনে ডাস্টবিনে স্তূপকারে  ফেলে রাখে। পরবর্তীতে টোকাইরা সেখান থেকে অপরিণত শিশুর মরদেহ ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে নিয়ে যায়।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের লোকজন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ময়লা অপসারণ করতে গেলে জরুরি বিভাগ সংলগ্ন পানির টাংকির নিচ থেকে অপরিণত শিশু এবং মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত মানুষ ভিড় করে।


হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, কলেজের গাইনি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মৃত শিশু এবং মানবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষিত থাকে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে শেখানোর জন্য এগুলো ব্যবহার হয়। যেগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেগুলো নিয়মানুযায়ী মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়। কিন্তু গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশিদ জাহানের নির্দেশে ওই বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির নারী কর্মচারীরা শিশু ও মানবদেহের অঙ্গগুলো মাটিতে না পুঁতে ড্রেন ও ডাস্টবিনে ফেলেছে। যা মোটেই ঠিক হয়নি। কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status