ঢাকা, ১০ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

হাঁটুর লিগামেন্টে বা ইলাস্টিক টিস্যুতে আঘাত

ডা. জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

হাঁটুর জোড়ায় চারটি প্রধান লিগামেন্ট থাকে। লিগামেন্ট হচ্ছে ইলাস্টিক টিস্যু, যা এক হাড়কে অন্য হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে; জোড়ার শক্তি দেয় ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। হাঁটুর লিগামেন্টগুলো হচ্ছে-এনটেরিও’র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (এসিল), পোসটেরিও’র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (পিসিএল), মিডিয়াল কোল্যাটারাল লিগামেন্ট (এমসিএল) ও ল্যাটারাল কোল্যাটারাল লিগামেন্ট (এলসিএল)। এগুলোর যেকোনোটিতে আঘাত লাগতে পারে।

লিগামেন্টে আঘাতের কতিপয় কারণ: হঠাৎ মোচড়ানো, গতির কারণে এনটেরিও’র ক্রুসিয়েট লিগামেন্টে সবচেয়ে বেশি আঘাত লাগতে পারে। রিকশা থেকে পড়ে গেলে, গাড়ি বা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় লিগামেন্ট ইনজুরি হয়। ফুটবল, বাস্কেটবল, কাবাডি ও হাডুডু খেলোয়াড়দের লিগামেন্টে বেশি আঘাত লাগে। মই থেকে পড়লে, ওপর থেকে লাফিয়ে পড়লে, গর্তে পড়লে বা সিঁড়িতে নামার সময় পা ফেলতে ভুল হলে আঘাত লাগতে পারে।

লিগামেন্ট ইনজুরির লক্ষণ: প্রথমে তীব্র ব্যথা, পরে ব্যথা কমে আসে। ব্যথা হাঁটুর বাইরের পাশে ও পেছনে অনুভূত হবে। হাঁটু ভাঁজ বা সোজা করতে গেলে ব্যথা হয়। আঘাতের প্রথম ১০ মিনিটেই হাঁটু ফুলে যায়।

বিজ্ঞাপন
ফোলা ও ব্যথার কারণে হাঁটু নড়াচড়া করা যায় না। দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হয়, হাঁটু ছুটে বা বেঁকে যাচ্ছে।

আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারবেন। মেনিসকাস ইনজুরি থাকলে রোগী বেশিক্ষণ বসলে হাঁটু সোজা করতে কষ্ট হয়। অনেক সময় হাঁটু আটকে যায়। দীর্ঘদিন লিগামেন্ট ইনজুরি থাকলে হাঁটুর পেশি শুকিয়ে যায়। হাঁটুতে শক্তি কমে যায়। উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে ও বসলে উঠতে কষ্ট হয়।

চিকিৎসা: প্রথমে হাঁটুকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। বরফের টুকরা তোয়ালে বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগালে ব্যথা বা ফোলা কমবে। প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দুই ঘণ্টা পরপর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। এ পদ্ধতি আঘাতের ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে।

হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে হাঁটুকে হার্টের লেবেল থেকে উঁচুতে রাখলে ফোলা কম হবে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো। ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে ৭ থেকে ১০ দিন।

প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও ফুলা সেরে উঠলে হাঁটুর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে লিগামেন্টের আঘাত এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। এক্স-রে ও এমআরআইয়ের সাহায্য নিতে হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

করণীয়: হাঁটুর লিগামেন্ট আপনা আপনি কখনো জোড়া লাগে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাঁটুর পেশির ব্যায়াম ও দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ ও ভালো থাকা যায়। গুরুতর হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জরুরি দেখাতে হবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ, হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রোস্কোপিক সার্জন। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা। 
চেম্বার: বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লি., শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭। 
হটলাইন: ১০৬৩৩, ০১৭৪৬-৬০০৫৮২।

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status