ঢাকা, ১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

‘নির্বাচনী সহিংসতায় আমার মৃত্যু হলে এমপি ইকবাল দায়ী থাকবেন’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
৮ মে ২০২৪, বুধবার

দ্বিতীয় ধাপে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া ফের সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শরীয়তপুর শহরের নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘নির্বাচনী সহিংসতা আমার মৃত্যু হলে এমপি ইকবাল দায়ী থাকবেন’। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আপন চাচাতো ভাই শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু সমর্থিত ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বল আকন ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি-ধমকি ও প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে আজ আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন হুমকির মুখে। আমরা আজ ঘর থেকে বের হতে পারছি না। এমপি তার চিহ্নিত ক্যাডার বাহিনী আমার ও আমার পরিবারের দিকে লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমার ভাইদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

আমার কোনো কর্মী-সমর্থক প্রচার-প্রচারণায় গেলে তাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। প্রচার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। 
দিপু বলেন, আমি জাতির কাছে জানতে চাই, নির্বাচন করা কি আমার অপরাধ? আজ আমরা ঘরবন্দি।

বিজ্ঞাপন
এই এমপি’র অত্যাচার- নির্যাতনে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না। সোমবার শহরে আমার দু’টি প্রচার মাইক বের হলে এমপি’র গুণ্ডা-পাণ্ডারা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। এমপি নিজে ঘোষণা দিয়েছেন, ভোটকেন্দ্রে কোনো বুথ থাকবে না, কোনো এজেন্ট থাকবে না। তাদের ভয়ে মানুষ আজ মুখ খুলছে না। আমি চাই এ জিম্মিদশা থেকে মানুষ মুক্তি পাক। এমপি ইকবাল হোসেন অপু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রকাশ্যে তার পছন্দের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন এবং তাদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।   
তিনি বলেন, এমপি’র নির্দেশে তার স্ত্রী, ছেল, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বল আকনের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে তার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ও আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী হামলায় আমার একাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এমপি ইকবাল আমার কাছে পাঁচ কোটি টাকা চেয়েছিলেন। আমি গরিব মানুষ, টাকা দিতে পারিনাই বলে তিনি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। 
দিপু মিয়া বলেন, এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি পুলিশ সুপার, পালং মডেল থানার ওসি, জেলা নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি। আমি সকলের কাছে সাহায্য চাই। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি জান ভিক্ষা চাই। আমি বাঁচতে চাই। আমি নির্বাচন করতে চাই। আমি আমার পরিবার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। এই সংবাদ সম্মেলনের পরে আমার কী হবে জানি না। আমার মৃত্যু হতে পারে। মৃত্যু হলে ইকবাল হোসেন অপু এমপি দায়ী থাকবেন। তার পরিবার দায়ী থাকবে। তার গুণ্ডা বাহিনী থাকবে এবং তার ভাগিনা চন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান দায়ী থাকবে।  
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া আমার সমর্থন না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে ও বিভিন্ন রকমের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে পাগলের প্রলাপ বকছেন। তার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়ার প্রচারে বাধা, কর্মীদের মারধর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে প্রমাণ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status