ঢাকা, ১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার নাজির

পাওয়ার অব এটর্নি বিষয়ে বৃটেন প্রবাসীরা মারাত্মক বিড়ম্বনার স্বীকার, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার

(১ সপ্তাহ আগে) ৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ৫:১০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

বিশিষ্ট লেখক ও বৃটিশ সুপ্রীম কোর্টের প্রতিথযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বলেছেন, পাওয়ার অব এটর্নি বিষয়ে লক্ষ লক্ষ্য বৃটেন প্রবাসীরা মারাত্মক বিড়ম্বনার স্বীকার। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশু প্রয়োজন।  মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে তিনি একথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পাওয়ার অব এটর্নি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বৈধ আইনি ডকুমেন্ট। এটির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত এটর্নি বা এটর্নিরা তাদের উপর অর্পিত কার্য সম্পাদন করতে পারেন। এটা নিযুক্ত এটর্নিরা এমনভাবে সম্পাদন করেন যেন মূল মালিকরাই করছেন। সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, বণ্টন, মামলা দায়ের ও মামলা ডিফেন্ডসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাওয়ার অব এটর্নি দেয়ার প্রয়োজন পড়ে। এটা শত শত বছর ধরে চলে আসা স্বীকৃত আইনি পন্থা। 
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়া এখন পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদন করা যাচ্ছে না বাংলাদেশ হাই কমিশনে। তাও যদি আবেদন করার পর ২/১ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যেত তাহলে এই নিয়ম করার একটি যৌক্তিকতা হয়তো থাকতো। বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানাতে অনেক বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে ৬/৮ মাস বা এরচেয়েও বেশি সময় অপেক্ষা করেও তা পাওয়া যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন
তাই পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদনে নতুন নিয়মের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ প্রবাসীরা। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে নিয়ম যেখানে সহজ হবার কথা সেখানে সহজ না হয়ে বরং বাংলাদেশে প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষা ও অধিকার আস্তে আস্তে কঠিন ও সংকুচিত হয়ে আসছে।

নাজির আহমদ বলেন, পাওয়ার এটর্নি সম্পাদনে ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার বাধ্যতামূলক নিয়ম কেন যে করা হলো তার যুক্তিসংগত কারণ ও ব্যাখ্যা এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়ার অব এটর্নির সঙ্গে ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা বাংলাদেশি নাগরিকত্বের কি সম্পর্ক? পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা হাইকমিশন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন ধরনের স্বীকৃত আইডি দেখতে পারে। সেই আইডির অংশ হিসেবে যে কোন ধরণের পাসপোর্ট যথেষ্ট ছিল এবং হওয়া উচিৎ। ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার বাধ্যতামূলক এই নিয়মটি চালু করা হয়েছে মাত্র দু’বছর আগে। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে পঞ্চাশ বছর এই নিয়ম ছিল না। তখন তো প্রবাসীরা পাওয়ার অব এটর্নি দিয়েছেন এবং তাতে তো কোন সমস্যা হয়নি। এখন অযথা এই অযৌক্তিক নিয়ম বা শর্তারোপ করার হেতু কি? 

পূর্বের নিয়ম ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ৭/৮ বছর আগ পর্যন্ত বৃটেন থেকে পাওয়ার অব এটর্নি দেয়ার নিয়ম ছিল- পাওয়ার অব এটর্নি ড্রাফট করে আইডিসহ যে কোন ব্যারিস্টার বা সলিসিটরের সামনে গিয়ে দস্তখত করতে হতো। উল্লেখ্য বৃটেনে qualified সব ব্যারিস্টার বা সলিসিটর হলেন “Commissioner for Oath. অর্থাৎ তারা Oath তথা শপথ এডমিনিস্টার করতে  ক্ষমতাপ্রাপ্ত। ব্যারিস্টার বা সলিসিটর sign ও seal দেয়ার পর সম্পাদিত পাওয়ার অব এটর্নিকে Foreign and Commonwealth Office -এ পাঠানো লাগতো Legalisation করার জন্য। Legalisation হয়ে আসার পর হাইকমিশনে পাঠানো লাগতো তা Attestation করার জন্য। উল্লেখ্য পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদনের জন্য তখন সশরীরে কেবলমাত্র ব্যারিস্টার বা সলিসিটরের সামনে উপস্থিত হতে হতো। Foreign and Commonwealth Office বা হাইকমিশনে সশরীরে যেতে হত না। ডাকে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে পাঠালে হত। 

ব্যারিস্টার নাজির বলেন, হঠাৎ করে ৭/৮ বছর আগে নিয়ম করা হলো যে পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সশরীরে হাইকমিশনে আইডিসহ (যেকোন ধরনের পাসপোর্ট) উপস্থিত হতে হবে। এতে প্রবাসীরা বিশেষ করে যারা দূরে থাকেন বা বয়স্ক বা শারীরিক প্রতিবন্ধী তারা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে হাইকমিশন কয়েক জায়গায় মোবাইল কনস্যুলার সেবা চালু করায় সমস্যা কিছুটা দূর হয়েছিল। কিন্তু দু’বছর আগে ভ্যালিড বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার বাধ্যতামূলক নিয়ম চালু করায় লক্ষ লক্ষ প্রবাসীরা পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে। 

তিনি আরও বলেন, যেকোন স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের Competent Public Authority দ্বারা ইস্যুকৃত পাসপোর্টই তো সর্বোচ্চ আইডি। এটা দিয়েই তো পাওয়ার অব এটর্নি দিতে পারার কথা। বৃটিশ পাসপোর্ট বা বৃটিশ পাসপোর্টে যাদের “No visa required for travel to Bangladesh” স্টাম্প বা স্টিকার আছে তাদেরকে কেন এটা দিয়ে পাওয়ার অব এটর্নি দিতে দেয়া হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বা পিতামাতার নাগরিকত্ব বা বাংলাদেশের সাথে connection যথাযথ ডকুমেন্ট দিয়ে প্রমাণ করা ছাড়া কিন্তু “No Visa required for travel to Bangladesh” স্টাম্প বা স্টিকার পাওয়া যায় না। এতো কিছুর পরেও এটা দিয়ে কেনো পাওয়ার অব এটর্নি দিতে দেয়া হয় না, তার ব্যাখ্যা আজও পাওয়া যায়নি। 

পাঠকের মতামত

অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সুরাহা হতে পারে।

আখতার হোসেন কাওছার
৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:২১ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

১০

ইউকে-বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত / বৃটেন থেকে ফেরত পাঠানো হবে ১১ হাজার বাংলাদেশিকে

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status