বাংলারজমিন
মিরসরাইয়ে তীব্র দাবদাহে মরছে মাছ, লোকসানের মুখে মৎস্যচাষিরা
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
৫ মে ২০২৪, রবিবারদেশের বেশির ভাগ জেলার উপর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহের ফলে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন মিরসরাই উপজেলার মাছচাষিরা। বিগত প্রায় মাসব্যাপী তীব্র গরমে মিরসরাইয়ে পুকুর ও দীঘিগুলোতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে করে চরম লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন শত শত মৎস্যচাষি। সরজমিন উপজেলার ৫ ও ৬ নং ইউনিয়নের মুহুরী প্রজেক্টের খন্তাকাটা এলাকার বিভিন্ন দীঘিতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো দীঘির মাছ মরে উপরে ভেসে উঠে সাদা হয়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক নৌকা নিয়ে সেসব মাছ দ্রুত সরিয়ে নিয়ে পাড়ে মাটি চাপা দিচ্ছেন। আর অনেক মাছচাষি তাদের মাছ বাঁচানোর পানি সেচসহ নানাভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তারপরও অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে মরে যাচ্ছে মাছ। মৎস্যবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মতে, প্রচণ্ড গরমে পানিতে পিএইচ’র মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় মাছচাষিরা জানান, এই উপজেলার গত ৩০ বছরে জমিতে বাঁধ দিয়ে কয়েক শ’ একর মাছের খামার করা হয়েছে। ফলে অধিকাংশ জলাশয়ের গভীরতা কম। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে জলাশয়ে পানি আরও কমে যায়। তবে এ বছর বৈশাখ মাসে বৃষ্টি না হওয়া এবং তাপপ্রবাহ বাড়ার কারণে খামারের মাছ মরতে শুরু করেছে। মাছচাষি হাফেজ আহমেদ বলেন, আমি প্রায় ১৫ বছর পর্যন্ত এখানে মাছ চাষ করে থাকি। গত কয়েকদিনে অতি তাপমাত্রার কারণে আমার এক একর পুকুরে ৪০ হাজারের মতো বাদি মাছ মরে গেছে। এতে আমার প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার অন্য চাষিদেরও আমার মতো অবস্থা। আরেক মাছচাষি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় পুকুরে মাছ মারা যাচ্ছে। তাপমাত্রার কারণে মাছ মরে যাচ্ছে, মাছের অনেক রোগ হচ্ছে, মাছ ঠিকমতো খাবার খায় না, খেলেও হজম হয় না। এতে করে আমাদের লাখ লাখ টাকার মাছ মারা যাচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের সহযোগিতা করলে আমরা উপকৃত হতাম। জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এমতাবস্থায় চাষিদের দীঘিতে বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি দেয়ার ব্যবস্থা ও পরিমিত মাত্রায় চুন প্রয়োগ করে এবং জরুরি অবস্থায় অক্সিজেন ট্যাবলেট বা পাউডার ছিটিয়ে উপকার পেতে পারেন।