অনলাইন

বৃহৎ আইপিও নিয়ে পুঁজিবাজারে আসার অনুমতি পেল রবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, বুধবার, ৭:১৩ পূর্বাহ্ন

বহুজাতিক ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়ত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এটি দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ আইপিও বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এতে বলা হয়, সভায় রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আইপিওর অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। রবি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করবে।

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সৌহার্দ্যের স্মারক হিসেবে এতো বড় আইপিও নিয়ে এসেছে শতভাগ বিদেশি মালিকানার এই কোম্পানি। দেশের বাজারে এ আইপিও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ঝিমিয়ে পড়া পুঁজিবাজারে চাঙ্গাভাব ফেরাতে সহায়ক হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেছেন।

রবি আজিয়াটা লিমিটেড বলছে, ৫২৩ কোটি টাকা বাংলাদেশের বাজার থেকে তোলার জন্য তাদের যতটা না আগ্রহ ছিল; তার চেয়ে আগ্রহ গ্রাহক এবং দেশের মানুষের সঙ্গে একটি বহুজাতিক টেলিযোগাযোগ কোম্পানির মালিকানা শেয়ার করায়।

কোম্পানিটি গত বছর দেশের পুঁজিবাজারে আসার জন্য উদ্যোগ নেয়। এ জন্য নিয়োগ করে ইস্যু ম্যানেজার। পুঁজিবাজারে প্রবেশ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ নিশ্চিত করার জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে তারা বেশ কিছু দাবিও তুলে ধরেছে।

দেশের সবচেয়ে বেশি কর সংগ্রহ করা খাত টেলিকম। এ খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ২ শতাংশ মিনিমাম টার্নওভার ট্যাক্স। গত বছর ২ শতাংশ মিনিমাম টার্নওভার ট্যাক্সের জন্য কার্যকর করের হার দাঁড়িয়েছে ৯৫ শতাংশ। টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহার করা না হলে এ বছর কার্যকর করের হার দাঁড়াবে ৮০ শতাংশের বেশি।

বর্তমানে শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত কোম্পানির জন্য ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়া হয়ে থাকে। তবে গ্রামীণফোন যখন শেয়ার বাজারে এসেছিল তখন তারা ১০ শতাংশ রেয়াত পেয়েছিল। তাই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত করের পার্থক্য ১০ শতাংশ হওয়া উচিত যা ১০ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। তাই এ খাতের কর সীমা সহনীয় করার দাবি জানিয়েছে রবি।

এর মধ্যে আইপিও ছাড়ার যে প্রস্তাব পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, “ আমাদের আইপিও আবেদনে সদয় অনুমোদন প্রদানের জন্য বিএসইসিকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটি নিঃসন্দেহে রবির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত। শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ মূলধনী শেয়ার হিসেবে আমরা তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। সরকারের কাছে আমাদের কিছু প্রত্যাশা ছিল, আমরা আশা করছি এ অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে সে বিষয়গুলোও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সদয়ভাবে বিবেচনা করা হবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার অনুমোদন পাওয়ার মাধ্যমে রবিতে জনগণের অংশীদার হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। উদ্ভাবনী শক্তিতে উজ্জীবিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতা কামনা করছি।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ান রবি আজিয়াটা গ্রুপ বাংলাদেশের রবি আজিয়াটার ৬৮.৬৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক। রবির সঙ্গে এয়ারটেলের বাংলাদেশ কার্যক্রম একীভূত হওয়ার মাধ্যমে ভারতী এয়ারটেল রবি আজিয়াটার ২৫ শতাংশের মালিক। বাকি অংশের মালিক জাপানি কোম্পানি এনটিটি ডকোমো। তবে ডকোমোর ওই শেয়ার ভারতী এয়ারটেলের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে, যার হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা কেবল বাকি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status