বাংলারজমিন

ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে নবজাতক বিক্রি

সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা থেকে

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

অবশেষে ১৬ হাজার টাকায় নবজাতককে বিক্রি করে বাধ্য হলেন। তারপর সেই টাকা পরিশোধ করে ক্লিনিক থেকে মুক্তি পেলেন গৃহবধূ আনজুলা বেগম।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রুপার বাজার এলাকার শোলাগাড়ী গ্রামের বাসিন্দা শাজাহান মিয়া। দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার। স্ত্রী আনজুলা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হলে নিয়ে আসেন মাতৃসদনে। সেখানে বলা হয় সন্তান সম্ভাবা আনজুলার পেটে সন্তান উল্টো অবস্থানে রয়েছে। সে কারণে তাকে সিজার অপারেশন করতে হবে। কিন্তু সিজারিয়ান অপারেশন করার মতো টাকা তার নেই। তারপরও তো সমাধান করতে হবে।
প্রসব বেদনা হলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জাকির হোসেনের পরামর্শে স্বামী শাজাহান গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে নিয়ে গাইবান্ধা শহরের যমুনা ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে সিজার অপারেশন করা হয় এবং নবজাতকের জন্ম হয়।
গত ১৩ তারিখ থেকে ক্লিনিকে অবস্থান করার পর রোগীর অবস্থার উন্নতি হলে ১৭ তারিখে তার রিলিজ অর্ডার করা হয়। বিল করা হয় ১৬ হাজার টাকা। এই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রোগীর লোকজন বেকায়দায় পড়ে।
অবশেষে ক্লিনিকের শিশু বিক্রি চক্রের সহযোগিতায় শিশুটি সাদুল্ল্যাপুরের জনৈক ব্যক্তির কাছে নগদ ১৬ হাজার টাকায় নবজাতককের বিক্রি করে। তারপর নবজাতককের বিক্রির এই টাকায় তারা ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করে। ১৬ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রি করে খালিহাতে বাড়ি ফেরেন আনজুলা দম্পতি।
নবজাতক বিক্রির বিষয়ে কথা হলে নবজাতকের পিতা শাজাহান মিয়া জানান, তিনি অভাবে পড়ে নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে যার হাতে তুলে দিয়েছেন তার নাম বলতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ক্লিনিকের মালিক ফরিদুল হক সোহেল বলেন, রিলিজের সময় আমাদের খাতায় জমা দিয়েছে ৯ হাজার টাকা। নবজাতক বিক্রির ঘটনা ক্লিনিক ক্যাম্পাসে হয়নি। যদি হয়ে থাকে তাহলে বাইরে হয়েছে।
পল্লীচিকিৎসক জাকির বলেন, অভাবের তাড়নায় তারা কিছু টাকার বিনিময়ে নবজাতককে তারই এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন।
বোনারপাড়ায় শিশু ধর্ষণ
এদিকে, সাড়ে তিন বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গাইবান্ধার সাঘাটায় ১১ বছরের এক স্কুলছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। গুরুতর অসুস্থ ধর্ষিতা শিশু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সাঘাটা থানার ওসি মো. বেলাল হোসেন বলেন, সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউপি’র দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের শিশুকন্যা ১৬ই সেপ্টম্বর বিকালে বাড়ির পাশে গাটু মিয়ার নির্মাণাধীন বাড়ির সিঁড়ির নিচে খেলা করছিল। এ সময় পাশাপাশি বাড়ির খাদেমুল ইসলামের শিশুপুত্র খোরশেদ আলম (১১) শিশুটিকে একা পেয়ে সিঁড়ির নিচে ধর্ষণ করে।
শিশুটির চিৎকারে তার মা ও আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষক খোরশেদ দৌড়ে তার বাড়িতে চলে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে আজ ১৭ই সেপ্টম্বর দুপুরে সাঘাটা থানায় মামলা করা হলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধর্ষক খোরশেদ আলমকে আটক করে। শিশু ধর্ষক খোরশেদকে আদালতে পাঠানো হলে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দীলিপ কুমার ভৌমিক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status