প্রথম পাতা

বাজারে হেরফের নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

গত সোমবার ভারত বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় রাতারাতি এ পণ্যটির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। আতঙ্কে মঙ্গলবার ও বুধবার এক শ্রেণির ক্রেতা বাড়তি পিয়াজ কিনে মজুত করেন। এতে রাজধানীর বাজারগুলোতে পিয়াজ কেনার এক ধরনের হিড়িক পড়ে যায়। দু’দিন বাড়তি কেনার পর বৃহস্পতিবার পিয়াজ কেনার পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ফলে খুচরা বাজারে কমেছে পিয়াজ বিক্রি। তবে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া পিয়াজের দাম কমেনি। এদিকে কম দামে খোলা বাজারে পিয়াজ বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। পাশাপাশি ভারত ছাড়াও বিকল্প বাজারের খোঁজ নিতে শুরু করেছে। ফলে বাজারে বাড়তি দামেই স্থির আছে পণ্যটির দাম। তবে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে বাজারে পিয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা বাজারভেদে দেশি পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা। আমদানি করা ভারতের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। অপরদিকে পাইকারিতে দেশি পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। আমদানি করা ভারতের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
মালিবাগ হাজীপাড়ার বিক্রেতা সেলিম বলেন, দাম বাড়ার খবরে মঙ্গলবার ২০ বস্তা পিয়াজ কিনেছিলাম। গত দুই দিনে ১২ বস্তা পিয়াজ বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতাদের বেশিরভাগ ৫ কেজি করে পিয়াজ কিনেছেন। তবে বৃহস্পতিবার পিয়াজের ক্রেতা নেই। তিনি বলেন, বেশির ভাগ মানুষ গত দুইদিনে বাড়তি পিয়াজ কিনে মজুত করে ফেলেছেন। যে কারণে বিক্রি খুব কম। তবে ৮-১০ দিন পরে আবার পিয়াজের চাহিদা বাড়বে। তখন পিয়াজের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে।

বিক্রেতারা বলছেন, গত বছর ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় দেশের বাজারে পিয়াজের কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হয়েছিল। এ কারণে এবার ভারতের রপ্তানি বন্ধ এবং পিয়াজের দাম বাড়ার খবরে মঙ্গলবার পিয়াজ কেনার এক ধরনের হিড়িক পড়ে যায়। বুধবারও বাড়তি পিয়াজ কেনেন ক্রেতারা। মূলত গত দু’দিনেই ভোক্তাদের বড় অংশ পিয়াজ কিনে মজুত করে ফেলেছেন। এ কারণে পিয়াজের বিক্রি কমেছে।

তারা বলছেন, পিয়াজের বিক্রি কমলেও পাইকারি বাজারে দাম কমেনি। যে কারণে খুচরা বাজারেও পিয়াজের দাম কমেনি। তবে ভারত যদি বাংলাদেশকে পিয়াজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে দাম কিছুটা কমতে পারে।
আরেক বিক্রেতা বলেন, পিয়াজের দাম আগামী ২-৩ মাস কমার সম্ভাবনা কম। ভারত পিয়াজ দিলে দাম কিছুটা স্থির থাকতে পারে। তবে এবার হয়তো গত বছরের মতো হবে না।

কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, পিয়াজের দাম নতুন করে আরো বাড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ পিয়াজের বিক্রি অনেক কমে গেছে। আতঙ্কে দুইদিনে সাধারণ মানুষ অনেক পিয়াজ কিনেছেন। এখন বিক্রি নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, এবার পিয়াজের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার সম্ভাবনা যেমন কম, তেমনি দাম কমার সম্ভাবনাও কম। বুধবার আমরা দেশি পিয়াজ ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। নতুন পিয়াজ না ওঠা পর্যন্ত পিয়াজের এই দাম স্থির থাকবে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের ধারণা, পিয়াজের দাম খুব বেশি ওঠা-নামা করবে না। হয়তো কেজিতে ৫-১০ টাকা কম-বেশি হতে পারে।

পিয়াজের এলসি’র সুদ ৯ শতাংশের বেশি নয়: ব্যাংকগুলোকে পিয়াজ আমদানির এলসি’র (ঋণপত্র) সুদহার ৯ শতাংশের মধ্যে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পিয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। এই নির্দেশনা চলতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ দেশব্যাপী স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে বাজার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে পিয়াজ জরুরি ভিত্তিতে আমদানির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই পর্যাপ্ত পিয়াজ দেশে পৌঁছাবে। আগামী এক মাসের মধ্যে পিয়াজের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status