প্রথম পাতা
পুঁজিবাজারে আশার আলো
এম এম মাসুদ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও দেশের শেয়ারবাজার আবার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ সূচক যেখানে নিম্নমুখী সেখানে একমাত্র শেয়ারবাজারে বইছে সুবাতাস। প্রায় দিনই বাড়ছে মূল্যসূচক। ইতিমধ্যেই দফায় দফায় সূচক বেড়ে ৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক। একই সঙ্গে লেনদেনে খরা কাটিয়ে হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্রত্যাশা বাড়িয়ে চলেছে শেয়ারবাজার। তাদের অংশগ্রহণও বাড়ছে। নতুন করে আসতে শুরু করেছে বিনিয়োগ। নতুন আশার আলো দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। শুধু বিনিয়োগকারী নয়, ব্রোকারেজ হাউজগুলোতেও স্বস্তি ফিরেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেশকিছু সংস্কার কাজে হাত দিয়েছেন।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা আর তারল্য সংকটে দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছিল দেশের শেয়ারবাজার। এ পরিস্থিতিতে মার্চে মহামারি করোনার প্রকোপ শুরু হলে বড় ধরনের ধস নামে শেয়ারবাজারে। ঘটতে থাকে একের পর এক বড় দরপতন। এতে চলতি বছরের ১৮ই মার্চ ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৬০৩ পয়েন্টে নেমে আসে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে টানা ৬৬ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিউকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় সরকার। একই সঙ্গে পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুন তিন কমিশনারও নিয়োগ দেয়া হয়। নতুন চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপ নেন। আইন লঙ্ঘন করায় কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানিকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে বাতিল করা হয় বেশকিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও। কিন্তু এ বিষয়ে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ ছাড়া শেয়ারের চাহিদা বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে আলটিমেটাম দেয়। তাতে কাজ হয়।
আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান কমিশন। আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাকাউন্টসহ সব পরিচালকের শেয়ার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। সিএনএটেক্স এবং তুংহাই নিটিংয়ের সাবেক এমডিসহ তিন পরিচালককে বিনা ঘোষণায় ১২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করায় ১৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। তথ্য গোপন করে আইপিওতে আসায় বিবিএস ক্যাবলসের সব পরিচালক, ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে। কমিশনের এসব সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে, ভবিষ্যতে এমন সব অনিয়ম হলে কঠোর থাকবে বিএসইসি। এতে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছে সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী।
অন্যদিকে শেয়ারবাজারের মন্দ কোম্পানির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তারই অংশ হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত মন্দ কোম্পানির সব উদ্যোক্তা-পরিচালকের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অর্থাৎ জেড শ্রেণির কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা এখন থেকে তাদের হাতে থাকা শেয়ার লেনদেন করতে পারবেন না। এ ছাড়া যেসব কোম্পানি দুই বছরের বেশি সময় ধরে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত রয়েছে, সেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর যেসব কোম্পানি শেয়ারধারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ দেয় না, এজিএম করে না সেগুলোকে বাজে মানের কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়। জেড শ্রেণির শেয়ারকে সাধারণভাবে জাঙ্ক শেয়ার হিসেবে অভিহিত করা হয়। এসব কোম্পানির অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করতে চায় বিএসইসির বর্তমান কমিশন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিএসইসির একের পর এক পদক্ষেপের কারণে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নেয়া অনেক বিনিয়োগকারী আবার সক্রিয় হয়। ফলে আগস্টে বিশ্বের মধ্যে পারফরম্যান্সের দিক থেকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার শীর্ষ স্থান দখল করে।
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ইপিএলের প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। একই ধরনের তথ্য ওঠে এসেছে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনেও। দুই প্রতিবেদনের তথ্যেই দেখা গেছে, আগস্টে দেশের শেয়ারবাজারে ১৫.৮০ শতাংশ উত্থান হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিয়েতনামের শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে ১০.৪০ শতাংশ। ৭.৪০ শতাংশ উত্থানের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রোমানিয়া।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯শে জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ১৭ কার্যদিবসে ১৩ই আগস্ট ডিএসইর মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৩ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর মূল্যসূচক বেড়েছে ৬৫৩ পয়েন্ট। লেনদেন ২৩৪ কোটি টাকা থেকে ১২০০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রথমত শেয়ারবাজারে যেন একটিও মন্দ মানের আইপিও না আসে। এ ধরনের আইপিও আনতে যারা কাজ করে, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি ভালো শেয়ার আনতে হবে। বিনিয়োগ পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পরামর্শও দেন তিনি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের দিনের বড় উত্থানের পর গতকাল সামান্য মূল্য সংশোধন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সোমবার ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ০.৮৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইতে এক হাজার ১৪৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন থেকে ১৮০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কম। রোববার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে। টাকার অঙ্কে সিএসইতে ৩৯ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসইতে ২৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২২টির। আর ৩৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষে বেক্সিমকো ফার্মা: ডিএসইর সোমবার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট ৫০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সোমবার কোম্পানিটি মোট ৪৩ লাখ ৮ হাজার শেয়ার হাতবদল করেছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজারটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ইউনাইটেড পাওয়ার, ওরিয়ন ফার্মা, ডিবিএইচ, নাহি অ্যালুমিনিয়াম ও স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বেশকিছু সংস্কার কাজে হাত দিয়েছেন।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা আর তারল্য সংকটে দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছিল দেশের শেয়ারবাজার। এ পরিস্থিতিতে মার্চে মহামারি করোনার প্রকোপ শুরু হলে বড় ধরনের ধস নামে শেয়ারবাজারে। ঘটতে থাকে একের পর এক বড় দরপতন। এতে চলতি বছরের ১৮ই মার্চ ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৬০৩ পয়েন্টে নেমে আসে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে টানা ৬৬ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিউকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় সরকার। একই সঙ্গে পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুন তিন কমিশনারও নিয়োগ দেয়া হয়। নতুন চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপ নেন। আইন লঙ্ঘন করায় কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানিকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে বাতিল করা হয় বেশকিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও। কিন্তু এ বিষয়ে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ ছাড়া শেয়ারের চাহিদা বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে আলটিমেটাম দেয়। তাতে কাজ হয়।
আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান কমিশন। আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাকাউন্টসহ সব পরিচালকের শেয়ার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। সিএনএটেক্স এবং তুংহাই নিটিংয়ের সাবেক এমডিসহ তিন পরিচালককে বিনা ঘোষণায় ১২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করায় ১৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। তথ্য গোপন করে আইপিওতে আসায় বিবিএস ক্যাবলসের সব পরিচালক, ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে। কমিশনের এসব সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে, ভবিষ্যতে এমন সব অনিয়ম হলে কঠোর থাকবে বিএসইসি। এতে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছে সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী।
অন্যদিকে শেয়ারবাজারের মন্দ কোম্পানির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তারই অংশ হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত মন্দ কোম্পানির সব উদ্যোক্তা-পরিচালকের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অর্থাৎ জেড শ্রেণির কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা এখন থেকে তাদের হাতে থাকা শেয়ার লেনদেন করতে পারবেন না। এ ছাড়া যেসব কোম্পানি দুই বছরের বেশি সময় ধরে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত রয়েছে, সেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর যেসব কোম্পানি শেয়ারধারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ দেয় না, এজিএম করে না সেগুলোকে বাজে মানের কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়। জেড শ্রেণির শেয়ারকে সাধারণভাবে জাঙ্ক শেয়ার হিসেবে অভিহিত করা হয়। এসব কোম্পানির অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করতে চায় বিএসইসির বর্তমান কমিশন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিএসইসির একের পর এক পদক্ষেপের কারণে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নেয়া অনেক বিনিয়োগকারী আবার সক্রিয় হয়। ফলে আগস্টে বিশ্বের মধ্যে পারফরম্যান্সের দিক থেকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার শীর্ষ স্থান দখল করে।
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ইপিএলের প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। একই ধরনের তথ্য ওঠে এসেছে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনেও। দুই প্রতিবেদনের তথ্যেই দেখা গেছে, আগস্টে দেশের শেয়ারবাজারে ১৫.৮০ শতাংশ উত্থান হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিয়েতনামের শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে ১০.৪০ শতাংশ। ৭.৪০ শতাংশ উত্থানের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রোমানিয়া।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯শে জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ১৭ কার্যদিবসে ১৩ই আগস্ট ডিএসইর মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৩ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর মূল্যসূচক বেড়েছে ৬৫৩ পয়েন্ট। লেনদেন ২৩৪ কোটি টাকা থেকে ১২০০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রথমত শেয়ারবাজারে যেন একটিও মন্দ মানের আইপিও না আসে। এ ধরনের আইপিও আনতে যারা কাজ করে, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি ভালো শেয়ার আনতে হবে। বিনিয়োগ পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পরামর্শও দেন তিনি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের দিনের বড় উত্থানের পর গতকাল সামান্য মূল্য সংশোধন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সোমবার ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ০.৮৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইতে এক হাজার ১৪৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন থেকে ১৮০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কম। রোববার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে। টাকার অঙ্কে সিএসইতে ৩৯ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসইতে ২৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২২টির। আর ৩৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষে বেক্সিমকো ফার্মা: ডিএসইর সোমবার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট ৫০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সোমবার কোম্পানিটি মোট ৪৩ লাখ ৮ হাজার শেয়ার হাতবদল করেছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজারটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ইউনাইটেড পাওয়ার, ওরিয়ন ফার্মা, ডিবিএইচ, নাহি অ্যালুমিনিয়াম ও স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।