প্রথম পাতা

সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট সচলের সিদ্ধান্ত

কূটনৈতিক রিপোর্টার

৩১ জুলাই ২০২০, শুক্রবার, ৯:৩২ পূর্বাহ্ন

সিলেট টু লন্ডন বিমানের সরাসরি ফ্লাইট সচল রাখতে সরকার আন্তরিক। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিস্তৃত আলোচনা হয় এবং ফ্লাইট ফের চালুর সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা এক বাক্যে স্বীকার করেন যে করোনা ঠেকাতে লন্ডন থেকে সিলেটগামী যাত্রীদের ইমিগ্রেশন এবং লাগেজ হস্তান্তরে ঢাকায় নিষ্পন্ন হওয়ার যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। এ-ও বলা হচ্ছে কারও উপসর্গ থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠাতে হবে, সিলেটে তো এই সুবিধা নেই। এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সন্ধ্যায় মানবজমিনকে বলেন, যে যুক্তিতে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইটটি বন্ধের নোটিশ করেছিল তা ধর্তব্যই নয়। কারণ সর্বোচ্চ ৫-১০ শতাংশ যাত্রীর করোনা উপসর্গ থাকতে পারে এবং তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর প্রয়োজন পড়তে পারে। আমরা স্থানীয়ভাবে সেই ফ্যাসিলিটিজ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিলেটের ধোপাদীঘির পাড়ের একটি অত্যাধুনিক হোটেল এবং সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের একটি হোস্টেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সুবিধা সমৃদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবুও সিলেটে ফ্লাইট চালু রাখতে হবে, কারণ এটা সিলেটবাসী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের কমিটমেন্ট। বিমান কেনার আগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিও সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট চালুর দাবি ছিল প্রবাসীদের। এটা চালু হয়েছে, কেউ বন্ধ করতে পারবে না। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আলোচনা এবং অন্যান্য সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মাত্র দুটি দেশে যেতে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিতে হবে, বাকিদের উপসর্গ না থাকলে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই। আমিরাতসহ ওই দু’টি দেশে নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক, অন্যত্র তা নেই।
বিমানের প্রেস বিজ্ঞপ্তি, নানা প্রশ্ন: এদিকে করোনার কারণে লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে জানিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে। এতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক সিলেটে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সুবিধা সৃষ্টি সম্পন্ন হলে বিমান লন্ডন থেকে সিলেটগামী যাত্রীগণকে সরাসরি সিলেটে পৌঁছাবে। বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত ৩০শে জুলাই’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট বন্ধের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে এ জারির কথা বলা হয়েছে। তবে এ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় যে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে তার কোনো উল্লেখ ছিল না। বরং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাজ্যের ডিএফটির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে বিমান।
বিজ্ঞপ্তিটি ছিল এমন-
‘সমপ্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় লন্ডন-সিলেট বিমান চলাচল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড কর্তৃক বন্ধ করা হয়েছে মর্মে প্রচার/বক্তব্য প্রদান করা হচ্ছে- যা সঠিক নয়। গত এপ্রিল, ২০২০ থেকে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড কর্তৃক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সিলেট বিমানবন্দরের প্রস্তুতি যুক্তরাজ্যের উবঢ়ধৎঃসবহঃ ড়ভ ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ (ডিএফটি) সরজমিনে ফেব্রুয়ারি-২০২০ এ যাচাই করেছে। কিন্তু সম্মতি প্রদানের দাপ্তরিক প্রক্রিয়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মার্চ-২০২০ এ বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে বাংলাদেশের বিমানবন্দরসমূহেও বাণিজ্যিক অপারেশন বন্ধ করতে হয়েছে। জুন-২০২০ থেকে পুনরায় সীমিত আকারে বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু হয়েছে। সে কারণে এপ্রিল-২০২০ থেকে বিমানের সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার কারণে লন্ডন থেকে সিলেটে গমনকারী সম্মানিত যাত্রীগণকে বিমান বর্তমানে ঢাকা হয়ে সিলেটে পরিবহনে বাধ্য হচ্ছে; এটি সাময়িক ব্যবস্থা। বিমান বর্তমানে লন্ডনে সপ্তাহে একটি মাত্র ফ্লাইট পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব শেষ হবে এবং স্বাভাবিক অবস্থা পুনর্বহাল হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক সিলেটে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সুবিধা সৃষ্টি সম্পন্ন হলে বিমান লন্ডন থেকে সিলেটগামী যাত্রীগণকে সরাসরি সিলেটে পৌঁছাবে এবং যুক্তরাজ্যের ডিএফটি তাদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে বিমান সিলেট লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status