বাংলারজমিন

পঙ্গু স্বামী নিয়ে বানভাসি স্ত্রীর কষ্ট

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে

২৮ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

 হাসিনা নদী ভাঙনের পর পঙ্গু স্বামীকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের ছোট কুষ্টারী এলাকায়। হঠাৎ বন্যার পানি তলিয়ে দেয় বাড়িঘর। উঠোনে বুক ও ঘরে কোমর পানি। বাধ্য হয়ে ঠাঁই নেয় মাটিকাটা-রমনা ঘাট কেচি সড়কে। সেখানেও উঠে পানি। ঠাঁই আর কোথাও না পাওয়ায় হাঁটু পানির উপর চৌকি পেতে রয়েছেন পঙ্গু স্বামী খয়বারকে নিয়ে। কষ্টের সাথে দিন কাটলেও মেলেনি কোন সাহায্য স্বামীর ভাগ্যে এখনো জোটেনি একটি ভাতা কার্ড।
জানা গেছে, দ্বিতীয় দফার বন্যায় পুরো চিলমারী তালিয়ে যায় পানিতে ডুবে যায় উপজেলা সদর। দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি নামতে না নামতে আবারো পানিবৃদ্ধি। ফলে পুরো উপজেলাবাসী পড়ে বিপাকে। দীর্ঘদিন থেকে পানিবন্দি মানুষজন বাড়িঘর ছাড়লেও ফিরতে পারেনি নিজ গৃহে। সেই সাথে প্রায় দুসপ্তাহ থেকে কেচি সড়কে পানির মধ্যে বাস করলেও বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় পঙ্গু স্বামীকে নিয়ে কেচি সড়কেই বাস করছেন হাসিনা। বৃদ্ধা হাসিনা পঙ্গু স্বামীকে নিয়ে কষ্টে দিন কাটলেও মেলেনি কোন সাহায্য। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাঁটু পানির উপর রুটি তৈরি করছেন হাসিনা। কথা বলতেই যেন তার চোখে জল লক্ষ্য করা যায়। কষ্ট নিয়েই বলেন, কি আর কমুরে বাবা, পঙ্গু স্বামী হাঁটতে চলতে পারে না। এর উপর করোনার ভয়। সেই সাথে যোগ দিয়েছে বন্যা। বন্যায় বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। রাস্তা ঠাঁই নিয়েছিলাম। সেখানেও উঠে পানি। বাধ্য হয়ে কষ্ট হলেও পানির উপর   চৌকি পেতে (বসিয়ে) থাকতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বন্যায় প্রায় দুসপ্তাহ থেকে খেয়ে না খেয়ে থাকলেও খোঁজ নেয়নি কেউ। একবেলা খেলেও অপর বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এর উপর রান্না করাটাও বেশ সমস্যার। হাসিনার স্বামী খয়বার আলী জানান, বেশ কয়েক বছর আগে তিনি রোগের কারণে পঙ্গু হয়ে পড়েন। কিন্তু এখনো তার ভাগ্যে জোটেনি একটি বয়স্ক ভাতা কার্ড। কষ্টের কথা জানালেন, রবিদাশ করোনার সাথে বন্যা তার জীবনেও এনে দিয়েছে কষ্ট আর দুঃখ। একই এলাকার চলমলি বৃদ্ধা মাকে নিয়ে পানিবন্দি হয়ে কষ্টে দিনপাত করছেন। যদিও অন্যের বাড়িতে কাজ করে সড়কের পাশে একটি ঘরে মাকে নিয়ে থাকতেন। কিন্তু করোনা আর বন্যায় কাজকাম বন্ধ ফলে বাড়ছে কষ্ট। হাসিনা, রবিদাশ, চলমলির মতো শত শত পরিবার বাড়িঘর ছাড়া হলেও বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় পরিবার গুলোর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্‌ বলেন, কোন মানুষ যেন কষ্টে না থাকে সেদিকে আমাদের নজর আছে। এছাড়াও বন্যার্ত মানুষের মাঝে ধারাবাহিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status