বাংলারজমিন

রাজশাহীতে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু দেশি গরুর দাম নেই

আসলাম-উদ-দৌলা, রাজশাহী থেকে

২৮ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:০০ পূর্বাহ্ন

 কোরবানির আগ মুহূর্তে এসে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু ঢুকতে শুরু করেছে। রাজশাহী অঞ্চলের প্রতিটি হাটই ভারতীয় গরুতে সয়লাব। করোনা ও বন্যা এই সংকট আরো বাড়িয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছে খামারিরা।
এদিকে পশুর দাম কম হলেও হাটগুলো জমে উঠেছে। তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এতে মরণঘাতী করোনার বিস্তার আরো বেশি ঘটার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।   
জানা গেছে, রাজশাহী ও চাঁপাই নবাবগঞ্জের সীমান্ত পথে এখনো আসছে ভারতীয় গরু। এসব গরুর একটি বড় অংশ উঠছে সিটি হাটে। কোরবানি টার্গেট করে আগে থেকে আনা ভারতীয় গরুও হাটে তুলছেন লোকজন। ফলে দাম নেই দেশি গরুর।
রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় গরু-মহিষ রয়েছে প্রায় এক লাখ। ছাগল রয়েছে দুই লাখ ২৮ হাজার। অন্যান্য পশু রয়েছে আরো ৪২ হাজার। সব মিলিয়ে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার। কোরবানি শেষেও উদ্বৃত্ত থাকবে এক লাখ গবাদিপশু। এ পরিস্থিতিতে ভারত থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন নেই।
তবু বানের পানির মতো ভেসে আসছে ভারতীয় গরু-মহিষ। এতে হতাশ স্থানীয় খামারিরা। তারা বলছেন, এবার বন্যার কারণে চাষিরা গবাদিপশু কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। কিন্তু করোনার কারণে হাট জমছে না। এমনিতেই পশুর দাম কম। এর উপরে চেপে বসেছে ভারতীয় গরু। বাধ্য হয়ে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে দেশি গরু। এতে খামারি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ জানান, কিছু ক্যাটল করিডোর দিয়ে বৈধভাবে গরু আসছে। অবৈধভাবে গরু আসার একেবারেই সুযোগ নেই। বন্যা পরিস্থিতির কারণে পদ্মার একটি বড় অংশ নজরদারিতে হিমশিম খাচ্ছে বিজিবি। এরই সুযোগ নিতে পারেন চোরাকারবারিরা। তবে অবৈধ গরু চোরাচালান ঠেকাতে গ্রামবাসীদের নিয়ে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে বিজিবি। সিটি বাইপাস এলাকার খামারি আবদুল মালেক বলেন, বাড়িতে গরুর ব্যাপারি তো আসেই না। হাটে সাতটি গরু নিয়ে কয়েকদিন থেকে ঘুরছি। কিন্তু গরুর বাজার একেবারে কম। এজন্য গরু বিক্রি নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। গরুকে যে খাদ্য খাইয়ে লালন-পালন করেছি সেই দামই উঠবে না বলে মনে হচ্ছে। করোনা আর ভারতীয় গরু আসার কারণে আমাদের এই দুরবস্থা।
রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, প্রথম দিকে হাটে তো ক্রেতাই ছিল না। এখন একটু একটু করে ক্রেতারা আসছেন। তিনি দাবি করেন, হাটে ভারতীয় গরু কিছু এলেও দেশির সংখ্যা বেশি। হাটে ক্রেতার চেয়ে গরুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই দাম কম।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অন্তিম কুমার সরকার জানান, জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গবাদিপশু রয়েছে। জেলায় কোরবানি ঈদে দুই লাখ গবাদিপশুর প্রয়োজন পড়ে। রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোরবানির জন্য উপযুক্ত পশু। অতিরিক্ত পশু আর করোনার কারণে দামে প্রভাব পড়েছে।
এদিকে রাজশাহীর হাটগুলোতে শারীরিক ও দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই কারো মধ্যে। হাটে আসা অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। মাস্ক নেই তার সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব মোটেও বজায় থাকছে না। এ কারণে আরো করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, হাটে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status