বিশ্বজমিন

ট্রাম্পের অভিবাসন বিষয়ক নির্দেশ-

যে প্রভাব পড়বে ভিসা ও গ্রিনকার্ডের ওপর

মানবজমিন ডেস্ক

২৪ জুলাই ২০২০, শুক্রবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গত এপ্রিলে এক টুইটে জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সকল অভিবাসন সাময়িকভাবে স্থগিত করতে যাচ্ছেন। তার এই ঘোষণায় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়ায়। আচমকা এমন নির্দেশ কার ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে তা তাৎক্ষণিকভাবে বুঝে ওঠা কঠিন। তাছাড়া, টুইটে নতুন নিয়মগুলো সম্পর্কে ধারণাও পাওয়া যায় না। তাই অস্পষ্ট নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে বুঝে উঠতে ও কার আওতায় পড়বেন তা জানতে একটি ব্যাখ্যাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য লস এঞ্জেলস টাইমস।

লস এঞ্জেলস টাইমস জানায়, ট্রাম্পের এপ্রিলের ওই টুইটের কিছুক্ষণ পরই সরকারি এক নির্দেশনায় বলা হয়, আমেরিকানদের স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান রক্ষার্থে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ওই ঘোষণা অনুসারে, গ্রিনকার্ড ও কয়েক ধরনের ভ্রমণ ভিসা প্রদান স্থগিত করা হয়। অর্থাৎ, নির্দেশনাটি জারির আগে সেসব ভিসা ও  গ্রিনকার্ড হাতে না পাওয়া ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে জুন মাসে নির্দেশনাটির সময়সীমা বাড়ানো হয়। যোগ করা হয়, নতুন কিছু নিয়ম। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে, বেশকিছু কর্মভিসা প্রদান এ বছরের শেষ পর্যন্ত বন্ধ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা। একই সময়জুড়ে জারি থাকবে নতুন গ্রিনকার্ড ইস্যু করার ওপর নিষেধাজ্ঞাও।
সরকারি নির্দেশনাটি কার্যকর হয় ২৪শে জুন থেকে। এর মেয়াদ আগামী ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই নির্দেশনা কেবল সেসব বিদেশি নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য যারা, বিদেশ থেকে নতুন ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। তবে ইতিমধ্যে যারা ভিসা পেয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ভ্রমণে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত অনভিবাসী কর্মীদের ওপর নির্দেশনাটির কোনো প্রভাব নেই। মেয়াদ শেষ হলে প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ফের নির্দেশনাটির মেয়াদ বাড়াতে পারেন।

এদিকে, নির্দেশনাটির আওতায় নিষিদ্ধ কর্মভিসাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১) এইচ-১বি; যেকোনো পেশাদার কাজ যার জন্য স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রয়োজন পড়ে, তা এই ভিসার আওতায় পড়বে।
২) এইচ-২বি (খাদ্যকর্মী ব্যতীত): স্বল্পমেয়াদি বা মৌসুমী কর্মচারী যারা কৃষি খাতের বাইরে কাজ করেন। যেমন, হোটেল, রিসোর্ট ইত্যাদি।
৩) জে-১ (শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থী ব্যতীত): শিক্ষানবিশ, শিক্ষক, ইন্টার্ন, শিবির কাউন্সেলর, স্থানীয় পরিবারের সঙ্গে বসবাসকারী বা তাদের বিদেশি সাহায্যকারী এবং গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা এই ভিসার আওতায় পড়বেন।
৪) এল-১(এল-১ নির্বাহী ও এল-১বি কর্মীসহ) : বিদেশি কোম্পানি থেকে বদলি হওয়া কর্মী।

যারা এই নির্দেশনার থেকে অব্যাহতি পাবেন:
প্রতিরক্ষা, আইনপ্রয়োগ, কূটনীতি বা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত ব্যক্তিরা।
২) হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা আক্রান্তদের সেবাদানকারীরা।
৩) করোনা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ ধরনের মেডিকেল গবেষণার সঙ্গে জড়িতরা।
৪) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উত্তরণের ব্যবস্থাকারীরা।
নির্দেশনাটি যাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় :
১) বৈধভাবে স্থায়ী বাসিন্দারা (গ্রিনকার্ডধারীসহ)।
১) মার্কিন নাগরিকদের সন্তান বা স্বামী/স্ত্রী।
৩) যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ সেবাদানকারী শ্রমিকরা।
৪) এমন  যেকোনো ব্যক্তি, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয় বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতীয় স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে।
এছাড়া, বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোও করোনা মহামারির কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে। ফলে সেগুলো থেকে ভিসা প্রদানও বন্ধ রয়েছে। এক্ষেত্রে কেউ নির্দেশনার বাইরে পড়লেও দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে ভিসা পাবেন না। তবে কিছু জরুরি ও মিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিসা সেবা চালু রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status