বাংলারজমিন

তাহিরপুরে বন্যায় গো-খাদ্যের সংকট

এম. এ রাজ্জাক, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)

১৫ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দুই দফা বন্যায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চরম বিপাকে পড়েছেন হাওর এলাকার গবাদিপশুর মালিকরা। যেখানে নিজেরাই পানির মধ্যে ভাসমান অবস্থায় আছেন, সেখানে গবাদিপশু কিভাবে লালন- পালন করবেন এই চিন্তাই তারা ভেঙে পড়েছেন। হাওর এলাকায় এবারের বন্যায় অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উঁচু স্থানে গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে গো-খাদ্যের চরম সংকটে ভুগছেন গবাদিপশুর মালিকরা। দুইসপ্তাহ ধরে পানিবন্দি এসব গবাদিপশুর জন্য সরকারিভাবে এখনো কোনো গো-খাদ্য সরবরাহ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্যা কবলিত গবাদিপশুর মালিকরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, পানিবন্দি প্রতিটি গবাদিপশুর জন্য দিনে দেড় কেজি দানাদার খাদ্য ও ৫ কেজি খড়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু উপজেলার পানিবন্দি কয়েক হাজার গবাদিপশুর জন্য তা দেয়া হয়নি।
গতকাল বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাওর এলাকার মানুষজন তাদের গবাদিপশু নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজেরা খোলা আকাশের নিচে থাকলেও গবাদিপশু পলিথিন কাগজ দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। স্থান না থাকায় অনেকে আবার গবাদিপশু খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির মধ্যে রেখেছেন। দিনরাত পরিশ্রম করে পালন করা এসব গবাদিপশু চুরি কিংবা হারানোর ভয়ে নির্ঘুমরাত কাটাচ্ছেন মালিকরা। কিন্তু বন্যার পানি থেকে নিজেদের গবাদিপশু রক্ষা করতে পারলেও গো-খাদ্য সংকটের কারণে এসব পশুর জীবন রক্ষা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য।
গোলাবাড়ী গ্রামের খসরুল আলম, মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সানজব উস্তার জানান, ২০০৪ এর বন্যা থেকেও এবার বেশি পানি হয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের ঢেউয়ে বাড়িঘর তছনছ করে দিয়েছে। গ্রামের মানুষ ভয়ে বউ-বাচ্চা, গরু-বাছুর নিয়ে উচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজেরা কোনো রকম দুই বেলা খাবার খেলেও গবাদিপশুর খাবার জোগার করতে পারছেন না গ্রামের লোকজন। চারদিকে পানি আর পানি, কোথাও ঘাস নেই। গবাদিপশু নিয়ে খুব কষ্টে আছেন মালিকরা।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য নুরুল আমীন ও কয়েকজন গবাদিপশুর মালিক জানান, বন্যার একসপ্তাহ পার হয়ে গেলেও তারা কোনো গো-খাদ্য সহায়তা পাননি। উপজেলার বাদাঘাট বাজার থেকে বেশি দামে খড় এনে দিনে দুইবার খাবার দিচ্ছেন। চারদিকে পানি থাকায় গবাদিপশুর জন্য প্রাকৃতিক কোনো খাবার সংগ্রহ করতে পারছেন না তারা।
শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন, এবারের বন্যায় পুরো উপজেলা পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় এলাকার বেশিরভাগ পরিবার তাদের গবাদিপশুর খাবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে এক প্যাকেট গো-খাদ্যও সরবরাহ করা হয়নি।  
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. উৎপল সরকার বলেন, এ উপজেলায় বন্যায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের বিভাগ থেকে গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। গবাদিপশুর খাদ্য সরবরাহের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের কাছে কিছু খাদ্যসামগ্রী এসেছে। এখনো তা বিতরণ করা হয়নি। তবে শিগগির ইউএনও মহোদয়ের নেতৃত্বে উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তা বিতরণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status