শেষের পাতা

লকডাউনের সুফল

উত্তর কাট্টলী এখন ইয়েলো জোনে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

৬ জুলাই ২০২০, সোমবার, ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে ২১ দিনের লকডাউন শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। তার আগেই করোনা সংক্রমণ ১৪৫.৫ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫৯ শতাংশে। যা ইয়েলো জোনের অন্তর্ভুক্ত। আর এটাকে দারুণ সুফল বলছেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে প্রতি লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সর্বশেষ ১৪ দিনে ৩ থেকে ৫৯ জন সংক্রমিত হওয়া এলাকা ইয়েলো জোনের অন্তর্ভুক্ত। সে অনুযায়ী উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে এখন জনসংখ্যার অনুপাতে করোনা সংক্রমণ ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে এ ওয়ার্ড এখন ইয়েলো জোনে অবস্থান করছে। তিনি জানান, লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত এ ওয়ার্ডের ২১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা শনাক্ত হয় মাত্র ১৬ জন, যা ওয়ার্ডটির মোট জনসংখ্যার অনুপাতে ৫৯ শতাংশ। ওয়ার্ডটির মোট জনসংখ্যা ৮০ হাজার ২৯০ জন। আর লকডাউনের আগে সর্বশেষ ১৪ দিনে উত্তর কাট্টলীতে করোনা সংক্রমিত ছিলেন ১০১ জন, যা প্রতি লাখ জনসংখ্যার হিসাবে ১৪৫.৫ শতাংশ। লকডাউন কার্যকরের আগে উত্তর কাট্টলীতে সংক্রমিতদের মধ্যে ৯৮ জন সুস্থ হয়েছেন। তিনজন মারা গেছেন। ফলে এই ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়।

 সেখ ফজলে রাব্বি জানান, ওয়ার্ডটিতে লকডাউন শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। বুধবার থেকে লকডাউনের আওতামুক্ত হচ্ছে ওয়ার্ডটি। তবে লকডাউনের কারণে ওয়ার্ডটিতে যে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে তা ধরে রাখার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সচেতন বাসিন্দাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।  

গত ১৬ই জুন প্রজ্ঞাপন জারি করে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়। ওইদিন মধ্যরাত থেকে লকডাউন কার্যকর করা হয়। লকডাউনের সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ওই সময় সশরীরে উপস্থিত থেকে বাঁশের খুঁটি গেড়ে ওয়ার্ডের ১৪টি প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেন। খোলা হয় কন্ট্রোল রুম, যেখানে ফোন করলে স্থানীয়দের প্রত্যাশিত সেবা দেয়া হয়।
এরপর ওই এলাকায় ছয় হাজার পরিবারে বিতরণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার। পাশাপাশি স্থানীয় কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পরিবারে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। দৈনিক ৪ মণ মাছ বিতরণ করেন তিনি। সেখনে দায়িত্ব পালন করেন ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এরমধ্যে ১৭ জন ছিলেন প্রশিক্ষিত। তারা করোনা শনাক্তদের সংসপর্শে আসা ৩৮ জনকে চিহ্নিত করে আইসোলেশনে পাঠান।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অহেতুক বাইরে ঘুরাফেরাকারীদের আইনের আওতায় আনেন। সিএমপি’র সাতটি টিম দায়িত্ব পালন করেন। টহল দেয় সেনাবাহিনীও।
লকডাউনের সুফল সমপর্কে স্থানীয় কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, ওয়ার্ডটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন। বেশ কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানা আছে। লকডাউনের শুরুতে তাদের ধরে রাখা কষ্ট হলেও পরে তাদের বুঝিয়ে মানাতে পেরেছি। দোকানপাট বন্ধ ছিল। মানুষকে বুঝিয়েছি ঘরে থাকার জন্য। নিত্যপণ্য হোম ডেলিভারি দিয়েছি। বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করেছি। সিটি করপোরেশনের দুটি, আমার ব্যক্তিগত একটি এম্বুলেন্স দিয়ে সার্বক্ষণিক সেবা দিয়েছি। করোনা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ২৪ ঘণ্টায় পেয়েছে এলাকার মানুষ। ফলে রোগ বুঝে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়েছে। এতে কোনটি ভাইরাস, ফ্লু, কাশি, ডেঙ্গু জ্বর বা কোনটি কোভিড রোগ নির্ণয় করা সহজ ছিল। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সংক্রমণ কমে এসেছে-এটা অবশ্যই সুফল। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মঙ্গলবার উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের লকডাউন শেষ হচ্ছে। এটা ছিল আমাদের জন্য পরীক্ষা। তাতে আমরা সফল হয়েছি। বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও লকডাউন কার্যকর করা হবে শিগগিরই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status