বাংলারজমিন

সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমছে, হাওরে বাড়ছে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৮:১৮ পূর্বাহ্ন

বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদীর পানি কমলেও বাড়ছে হাওরের পানি। সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী ৫টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরের পানি বেড়েছে। এই ৫টি উপজেলার বিভিন্ন স্থান নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। দিরাই পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠেছে। বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাটের। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানায়, মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৪ মি.মি.। জেলা প্রশাসনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, সদরের ৯টি, বিশ্বম্ভরপুরের ৫টি, তাহিরপুরের ৭টি, জামালগঞ্জের ৪টি, ছাতকের ৫টি, শাল্লার একটি, দোয়ারাবাজারের ২টি, জগন্নাথপুরের ৩টি ও ধর্মপাশা উপজেলার ৪টিসহ ৬১টি ইউনিয়ন এবং ৪টি পৌরসভার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। দুর্গতদের জন্য ১২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ১৯৪টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ৯ উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ৬৬ হাজার ৮৬৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যন ফুল মিয়া বলেন, তার ইউনিয়নের পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবাদিপশু নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। লালপুর গ্রামের জালাল মিয়া বলেন, গ্রামের এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে পানি ওঠেনি। সড়কে নৌকা চলে। লোকজন ঘর থেকে বাইরে যেতে পারছে না। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী জানান, পুরো হাওর এলাকা ঢলের পানিতে নিমজ্জিত। নদীর পানি হাওরে গিয়ে পড়ায় পানির চাপ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় মনিটরিং ছাড়াও কন্ট্রোল রুমসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দোয়ারা সদর ও সুরমা ইউনিয়নের বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।  সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, শহরের ৯০ ভাগ এলাকা বন্যায় আক্রান্ত হয়। শহরে ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যা দুর্গোতরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, মোমবাতি ইত্যাদি বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ জেলা বন্যা মনিটরিং সেলের সহকারি কমিশনার রিফাতুল হক জানান, নতুন করে আরো একশত টন চাল এবং ১০লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো আসার পর বিতরণ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, নদীর পানি কমতে শুরু করছে। তবে হাওরের পানি বেড়েছে।  জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রশাসন সার্বক্ষণিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status