শিক্ষাঙ্গন

মেস ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনায় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

নাজমুল হুদা

১৪ জুন ২০২০, রবিবার, ১২:১৭ অপরাহ্ন

করোনায় স্থবির গোটা বিশ্ব। অনেকটা নিশ্চল পরিস্থিতিতে দেশ। এরই মধ্যে অধিক বিড়ম্বনায় পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা। গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে পড়াশোনা করতে হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ এসকল শিক্ষার্থীদের। প্রাতিষ্ঠানিক আবাসন সংকটে থাকতে হয় মেস ভাড়া করে। নিজের খরচ জোগানের পাশাপাশি বাবা-মাকেও অনেকেই টাকা পাঠান। সব কিছুতেই রাশ টেনে দিয়েছে করোনা।

প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই গ্রামে গিয়ে থাকছেন। জমে গেছে মেসের ভাড়া। এজন্য সইতে হচ্ছে কিছু বাড়িওয়ালাদের অমানবিক আচরণ। ভাড়া পরিশোধ করতে ফোন করে হুমকি ধামকিও দিচ্ছেন অনেক মেস মালিক। অনেক শিক্ষার্থী কিছু টাকা মওকুফ করতে অনুরোধ করলেও তাতে কান দিচ্ছেন না তারা।

ধার দেনা করে কোনোরকম টাকার ব্যবস্থা করে ঢাকায় গিয়ে জিনিসপত্র মেস থেকে নিয়ে এসেছেন তিতুমীর কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, বাড়িওয়ালা ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন। চাঁদপুর থেকে এই করোনা পরিস্থিতিতেও ঢাকায় এনে ছেড়েছে আমাকে। ক্যাম্পাস বন্ধের পর দু'মাস বাড়িওয়ালার বাসায় থাকিনি। কিন্তু বাড়িওয়ালা পুরো দু'মাসের ভাড়াই নিয়েছেন। অনেক অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। এই করোনা সংকটকালে আমার আর্থিক অবস্থাও করুণ হয়ে পড়েছে। সে সুদে টাকা ধার করে কোনোমতে টাকাটা পরিশোধ করেছি।

লেখাপড়ার পাশাপাশি ঢাকায় একটা শো-রুমে চাকরি করতেন তিতুমীর কলেজে দর্শন বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষে পড়ুয়া জসিম উদ্দিন। করোনায় কলেজ বন্ধ। নেই চাকরি। গ্রামে আছেন অনেকদিন ধরে। তিনি বলেন, করোনায় কলেজ বন্ধ। ঢাকায় অনেক খরচ দেখে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছি। লেখাপড়ার পাশাপাশি যে চাকরি করতাম তাও এখন নেই। ঢাকায় বাড়ির মালিক তিন মাসের বাড়ি ভাড়ার জন্য প্রতিনিয়ত ফোন দিচ্ছেন। কিভাবে টাকা দিব?

একই পরিস্থিতির স্বীকার কলেজটির অনার্স ২য় বর্ষে পড়ুয়া খাদিজা ইসলামের। তিনি বলেন, বাড়িওয়ালা অনেক চাপ দিচ্ছেন। বাসা ভাড়া বিন্দুমাত্র ছাড় দেন নাই। রুম ছেড়ে দিতে বলছেন। একটুও সহানুভূতি নেই তার। অনেক অনুরোধ করেছি কাজ হয় নাই। করোনার মধ্যে পরিবার নিয়ে চলতেই রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। তার উপরে মেস ভাড়া। অনেক চিন্তা হচ্ছে কি করবো বুঝতেছি না?

তিতুমীর কলেজটি পড়েছে উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ডে। অধিকাংশ মেসই কলেজের আশেপাশে।অত্র এলাকার কাউন্সিলর মো. নাসির বলেন, এমন কোনো খবর শুনতে পাইনি। তবে অবশ্যই এটা ভালো কোনো কাজ না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা আমার সাথে যোগাযোগ করলে তাদের সহযোগীতা করা হবে।

-
নাজমুল হুদা
বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪
শিক্ষার্থী: সরকারি তিতুমীর কলেজ
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status