খেলা
বাংলাদেশের ক্যাপ মাথায় মুশফিকের ১৫ বছর
স্পোর্টস ডেস্ক
২৬ মে ২০২০, মঙ্গলবার, ৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কাঁটায় কাঁটায় ১৫ বছর পূর্ণ হলো মুশফিকুর রহীমের। ২০০৫ সালের ২৬শে মে ঐতিহাসিক লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের। সেদিন তার মাথায় জাতীয় দলের ক্যাপ পরিয়ে দেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। লর্ডসের সেই অভিষেক টেস্টে অবশ্য ইতিহাস গড়তে পারেননি তিনি, দুই ইনিংস মিলিয়ে সেবার করেছিলেন সাকুল্যে ২২ রান। তবে এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দুহাত ভরেই দিয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। ব্যাট হাতে খেলেছেন ইতিহাস গড়া একের পর এক ইনিংস। উইকেটের পেছনে থেকেছেন আস্থার প্রতীক হয়ে।
শুরুটা খুব উজ্জ্বল না হলেও ধীরে ধীরে মুশি নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন। আর অল্প সময়ের মধ্যেই টাইগারদের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠেন। ভক্তদের কাছে হয়ে ওঠেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’। শত বাধার মুখেও যার ওপর নিঃসন্দেহে ভরসা রাখা যায়। মুশফিকুর রহীম সবকিছুর প্রতিদান দিয়েছেন তার ব্যাটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে খেলে নিয়েছেন ৭০টি টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে এবং ৮৬টি টি-টোয়েন্টি। ব্যাট হাতে হাঁকিয়েছেন ১৪টি শতক এবং ৫৯টি অর্ধশতক। যার ভেতর রয়েছে টেস্টে ২১৯ এবং ওয়ানডেতে ১৪৪ রানের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস। টাইগারদের ইতিহাসে টেস্টের সর্বপ্রথম ডাবল শতক হাঁকান মুশফিকই, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে ২০১৩ সালে। এরপর অবশ্য আরও ২টি ডাবল শতক হাঁকিয়েছেন মুশি, দুটোই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
লম্বা সময় দেশের হয়ে খেলে পার করেছেন অনেক চড়াই-উৎরাই। দীর্ঘ সফরে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন অনেককেই। তার ভালো খারাপ সব সময়ের সঙ্গী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মুশফিক। সম্প্রতি জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি জানান তার কৃতজ্ঞতা। মুশফিক বলেন, ‘প্রথমত আলহামদুলিল্লাহ। আমি যেটা মনে করি যে, এটা আল্লাহর অশেষ রহমত। যেকোনো খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করার আর বাংলাদেশের মতো জায়গায় ১৫ বছর খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে আমার সতীর্থ, কোচ, আমার ফ্যামিলি এবং বিশেষ করে তুই (তামিম), মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিবসহ যত জনের সঙ্গে খেলেছি। স্পেশালি তুই আর সাকিবের সঙ্গে তো আমার ’৯৭ সাল থেকে খেলা।’
মুশফিক বলেন, ‘অবশ্যই আমার ফ্যামিলি বলতে গেলে তুই, মাশরাফি ভাই। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া এবং সম্মানের। আমি সবসময় বলি, আমার সামনে যখন মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব, তোর মতো রোল মডেলরা থাকে তখন আমার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।'
নিজের খারাপ সময়ে মুশফিক অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তারই সতীর্থ সাকিব, মাশরাফি, তামিম এবং মাহমুদুল্লাহর কাছ থেকে। ৩৩ বছর বয়সী মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘আমি যখন ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারছিলাম না তখন আসলে নিজের ভেতরও এই তাগিদটা এসেছে যে, ওনারা ভালো খেলছেন সঙ্গে আমিও যদি পারি তাহলে দলের জন্যই ভালো। এরপরই মূলত রিয়েলাইজেসন আসে। আমি মনে করি মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব এবং তোকে ধন্যবাদ। এছাড়াও অনেক কোচ এবং যখন যাদের সঙ্গে খেলেছি সবাই আমাকে হেল্প করেছে। তো, ইনশা আল্লাহ সামনে আরও যত ম্যাচ খেলতে পারি বাংলাদেশের জয়ের জন্য যেন কন্ট্রিবিউট করতে পারি।'
২০১৪ সালে বিয়ে করেন মুশফিক। তার স্ত্রী জান্নাতুল কাওসার মন্ডি সম্পর্কে ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শ্যালিকা। দ্’ুবছর আগে মুশি-মন্ডির পরিবার আলো করে আসে এক পুত্র সন্তান।