ভারত

বাংলাদেশ পরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিল ‘নিসর্গ’

কলকাতা প্রতিনিধি

২৩ মে ২০২০, শনিবার, ৯:০০ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান (থাইল্যান্ডের দেওয়া এই নামটির অর্থ আকাশ) বিদায় নিয়েছে ধ্বংসের ক্ষত চিহ্ন রেখে। এবার অপেক্ষা পরের ঘূর্ণিঝড়ের জন্য। তবে সেই ঝড়ের নাম ইতিমধ্যেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। নাম দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া পরের ঘুর্ণিঝড়কে ডাকা হবে নিসর্গ হিসেবে। সাগরের জঠরে জন্ম নেওয়া ঘূর্ণিঝড়কে যাতে মানুষ মনে রাখতে পারে সেজন্যই নামকরণের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। ২০০৪ সালে গুজরাটে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘অনিল’। বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরের কোনও ঘূর্ণিঝড়ের সেই প্রথম নামকরণ। ১৬ বছর পর নামের প্রথম তালিকা শেষ হল আম্পানের হাত ধরে। এটি ছিল ২০০৪ সালে দেওয়া ৬৪টি নামের শেষতম নাম। ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড, এই আট দেশ নাম দিয়েছিল ৬৪টি ঘূর্ণিঝড়ের। ঘূর্ণিঝড়ের পুরনো সব কটি নাম ব্যবহার হয়ে যাওয়ার পর নতুন নামাবলি তৈরি করতে দেরি করেনি বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। এবার আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী যে সব দেশে ঘূণিঝড়ের প্রভাব বেশি সেই ১৩টি দেশ মিলে (আগের আটটি দেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও ইয়েমেন) ১৬৯টি নামের তালিকা তৈরি করেছে। আর এই তালিকার প্রথম নামটিই বাংলাদেশের দেওয়া ‘নিসর্গ’। পরের দু’টি ভারতের ‘গতি’, ইরানের ‘নিভার’। নাম ব্যবহারের মূল দায়িত্বে ভারতের রিজিওনাল স্পেশ্যালাইজড মেটেরোলজিক্যাল সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস ওভার নর্থ ইন্ডিয়ান ওশনস। জানা গিয়েছে, নাম দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল সাধারন মানুষকেও। মূল শর্ত ছিল, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যাবে না। নাম ছোট হবে, সহজে উচ্চারণ করা যাবে। ঝড় বিধ্বংসী হবে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নাম দিতে হবে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়কে আলাদা করার জন্যই নামকরণ করা হয়। নাম থাকলে দ্রুত মানুষের কাছে তা পরিচিত হয়ে ওঠে। দ্রুত লোকজনকে সতর্ক করা যায়। মানুষের মনে চিরদিনের জন্য দাগও কেটে যায় বহু ঝড়। যেমন, আয়লা, বুলবুল বা আম্পান। অবশ্য ঝড়ের নামকরণের ইতিহাস অনেক পুরনো। প্রথম নামকরণ শুরু হয় প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিকের ক্ষেত্রে। ১৯৫৩ সালে শুরু হয়েছিল টাইফুন বা হারিকেনের নামকরণ। শুরুতে বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড়ের নাম হতো মেয়েদের নামে। পরে ছেলেদের নামের চল দেখা যায়। গোটা বিশ্বেই যে দেশগুলিতে ঝড়ের প্রভাব পড়ে তারাই নামকরণ করে। যেমন, দক্ষিণ চিন সাগরে সৃষ্ট টাইফুনের নাম ঠিক করে ওই অঞ্চলের দেশগুলি। আমেরিকা ও তার প্রতিবেশি দেশ মিলে ঠিক করে আটলান্টিকের হারিকেনের নাম। টাইফুন বা হারিকেনের আনাগোনা সাইক্লোনের চেয়ে বেশি। তাই একই নাম ঘুরে-ফিরে আসার চল রয়েছে। সাইক্লোনের ক্ষেত্রে অবশ্য এক নাম দু’বার ব্যবহারের চল নেই। তবে নাম নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে বারে বারে। হুদহুদ, তিতলির মতো নাম নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। পাখি বা প্রজাপতির নাম কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঝড়ের নাম কেন নিসর্গ, নতুন তালিকার প্রথম নামও নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status