ভারত

করোনায় বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে বাঁচাতে খরচই একমাত্র পথ

কলকাতা প্রতিনিধি

১৬ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৭:১৪ পূর্বাহ্ন

একদিন করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারলেও ততদিনে  গরীব মানুষগুলি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে শেষ হয়ে যাবে নাতো ? একইভাবে দেশের অর্থনীতিও কি সচল থাকবে ততদিন ? এই সব নিয়েই বিশ্ব জুড়ে অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীরা ভেবে চলেছেন।  একবদল অর্থনীতিবিদের অভিমত, করোনার ধাক্কা সামলাতে সরকারের  উচিত হবে বুদ্ধিমানের মতো খরচ করা । আর যাঁদের সত্যিই প্রয়োজন তাঁদের ক্ষেত্রে খরচে কোনও কার্পণ্য করা চলবে না। করোনার মোকাবিলা করতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ফলে সামগ্রিকভাবেই ভারতের অর্থনীতি গতিহীন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের দুই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় এবং ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাবেক গভর্ণর ও অর্থনীতিবিদ রঘুনাথ রাজন অর্থনীতির সঙ্কট মোচনে নানা প্রস্তাব দিয়েছেন। ইন্ড্য়িান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রে তারা লিখেছেন, সংক্রমণ রোখার জন্য দেশে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ভাবে লকডাউন চলবে। কিন্তু এই সময়ে দেশের বিরাট অংশের মানুষ যেন দারিদ্র বা অনাহারের গহ্বরে না প্রবেশ করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তা না হলে লকডাউনের বিধি লঙ্ঘিত হবে। কারণ ওই শ্রেণির মানুষের হারানোর কিছু নেই। তেমন ঘটনা ঘটলে তা হবে ট্র্যাজেডি। তাই সমাজের ওই অংশের মানুষের ন্যূনতম চাহিদা যাতে পূরণ হয় সে ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিন অর্থনীতিবিদই। একই সঙ্গে তারা সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, সমাজের নিচুতলায় বাস করা মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর সামর্থ্য সরকারের রয়েছে। তিন  অর্থনীতিবিদ তথ্যসহ জানিয়েছেন, ভারতে মজুত করা খাদ্য ভান্ডার কম নয়। তাই দেশের এই জরুরি পরিস্থিতিতে মজুত খাদ্যশস্য জন সাধারণকে বিলিয়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সরকার আগামী তিন মাসের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাসে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সরকারের রেশন বিলির প্রক্রিয়ার  বাইরেও বহু মানুষ রয়ে গিয়েছেন। ঝাড়খন্ড রাজ্যের উল্লেখ করে তারা বলেছেন, সেখানে  ৭ লক্ষ মানুষ রেশন কার্ড পাননি। এ ছাড়াও বহু মানুষ এখনও ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার ফাঁসে আটকে রয়েছেন। ওই সব মানুষের হাতে দ্রুত রেশন কার্ড তুলে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ক্যান্টিন চালানোর পরামর্শও দিয়েছেন। স্কুল পড়–ুয়া শিশুদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে তারা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, অনাহার হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আসল সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে অন্যত্র। বহু মানুষের আয় এখন শূন্যে নেমে গিয়েছে। এই সময় খাবার নিশ্চিত করা গেলেও, কৃষকদের বীজ কিনতে টাকার দরকার। মুদিখানার দোকানদারের নানা পণ্য কিনতে অর্থের প্রয়োজন। এ ছাড়াও অনেকের মাথায় ঋণ পরিশোধের চিন্তা রয়েছে। শুধু কৃষক নয়, ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের হাতেও সরকারি অর্থ দেওয়া দরকার। এছাড়া লকডাউনের শুরু থেকেই একশো দিনের কাজ বন্ধ। তাই অনেকের হাতেই টাকা নেই। এই সব বিষয়গুলিকে কখনও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এই সঙ্কটের দিকে সরকারের মনোযোগ আকর্ষনের কথা বলেছেন তিন অর্থনীতিবিদই।  


করোনায় বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে বাঁচাতে খরচই একমাত্র পথ
কলকাতা প্রতিনিধি : একদিন করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারলেও ততদিনে  গরীব মানুষগুলি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে শেষ হয়ে যাবে নাতো ? একইভাবে দেশের অর্থনীতিও কি সচল থাকবে ততদিন ? এই সব নিয়েই বিশ্ব জুড়ে অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীরা ভেবে চলেছেন।  একবদল অর্থনীতিবিদের অভিমত, করোনার ধাক্কা সামলাতে সরকারের  উচিত হবে বুদ্ধিমানের মতো খরচ করা । আর যাঁদের সত্যিই প্রয়োজন তাঁদের ক্ষেত্রে খরচে কোনও কার্পণ্য করা চলবে না। করোনার মোকাবিলা করতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ফলে সামগ্রিকভাবেই ভারতের অর্থনীতি গতিহীন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের দুই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় এবং ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাবেক গভর্ণর ও অর্থনীতিবিদ রঘুনাথ রাজন অর্থনীতির সঙ্কট মোচনে নানা প্রস্তাব দিয়েছেন। ইন্ড্য়িান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রে তারা লিখেছেন, সংক্রমণ রোখার জন্য দেশে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ভাবে লকডাউন চলবে। কিন্তু এই সময়ে দেশের বিরাট অংশের মানুষ যেন দারিদ্র বা অনাহারের গহ্বরে না প্রবেশ করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তা না হলে লকডাউনের বিধি লঙ্ঘিত হবে। কারণ ওই শ্রেণির মানুষের হারানোর কিছু নেই। তেমন ঘটনা ঘটলে তা হবে ট্র্যাজেডি। তাই সমাজের ওই অংশের মানুষের ন্যূনতম চাহিদা যাতে পূরণ হয় সে ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিন অর্থনীতিবিদই। একই সঙ্গে তারা সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, সমাজের নিচুতলায় বাস করা মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর সামর্থ্য সরকারের রয়েছে। তিন  অর্থনীতিবিদ তথ্যসহ জানিয়েছেন, ভারতে মজুত করা খাদ্য ভান্ডার কম নয়। তাই দেশের এই জরুরি পরিস্থিতিতে মজুত খাদ্যশস্য জন সাধারণকে বিলিয়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সরকার আগামী তিন মাসের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাসে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সরকারের রেশন বিলির প্রক্রিয়ার  বাইরেও বহু মানুষ রয়ে গিয়েছেন। ঝাড়খন্ড রাজ্যের উল্লেখ করে তারা বলেছেন, সেখানে  ৭ লক্ষ মানুষ রেশন কার্ড পাননি। এ ছাড়াও বহু মানুষ এখনও ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার ফাঁসে আটকে রয়েছেন। ওই সব মানুষের হাতে দ্রুত রেশন কার্ড তুলে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ক্যান্টিন চালানোর পরামর্শও দিয়েছেন। স্কুল পড়–ুয়া শিশুদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে তারা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, অনাহার হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আসল সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে অন্যত্র। বহু মানুষের আয় এখন শূন্যে নেমে গিয়েছে। এই সময় খাবার নিশ্চিত করা গেলেও, কৃষকদের বীজ কিনতে টাকার দরকার। মুদিখানার দোকানদারের নানা পণ্য কিনতে অর্থের প্রয়োজন। এ ছাড়াও অনেকের মাথায় ঋণ পরিশোধের চিন্তা রয়েছে। শুধু কৃষক নয়, ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের হাতেও সরকারি অর্থ দেওয়া দরকার। এছাড়া লকডাউনের শুরু থেকেই একশো দিনের কাজ বন্ধ। তাই অনেকের হাতেই টাকা নেই। এই সব বিষয়গুলিকে কখনও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এই সঙ্কটের দিকে সরকারের মনোযোগ আকর্ষনের কথা বলেছেন তিন অর্থনীতিবিদই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status