অনলাইন

আড়াইহাজারে থমকে গেছে শ্রমজীবী মানুষের কর্মযজ্ঞ

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

৩ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন

প্রাণঘাতি (কভিড-১৯) করোনার ভাইরাস সংক্রমণ প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার লাখো শ্রমজীবি মানুষের দৈনিন্দন বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ। উপজেলা জুড়েই যেন এক অচেনা পরিবেশ। বিরাজ করছে থমথমে ভাব। মানুষের মাঝে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠ। দিনভর টিভি দেখে কিংবা পত্রিকা পড়ে সময় কাটছে অনেকের। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় অনেক এলাকায় পৌঁছে না পত্রিকাও। এতে করে পত্রিকা পীপাসুরা খবর জানতে এখন মোবাইলে অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে কর্মব্যস্ত মানুষগুলোর চোখে মুখে এখনই শুধ্ইু দুচিন্তার ছাপ। করোনার আতঙ্ককে ছাপিয়ে তাদের মধ্যে চিন্তা কিভাবে চলবে সংসার। আসলে কি হতে যাচ্ছে আমাদের ভাগ্যে, এমন প্রশ্ন শুনা গেছে অনেকের। এই উপজেলা ২টি পৌরসভা ১০টি ইউনিয়নে প্রায় ৭ লাখ মানুষের বসবাস। লোকসমাগম ঠেকাতে এরই মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে খাবার হোটেল, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান, চায়ের স্টল, গ্রেজ, ওয়ার্কসপ ও স্থানীয় কাপড় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পাওয়ারলুম সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন প্রায় ২ লাখেরও বেশি নারী-পুরুষ শ্রমিক। ক্রমেই তারা বেকার হয়ে পড়ছেন। তবে অনেকেই এখানো পায়নি সরকারের ত্রাণ সহযোগিতা। এতে জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধ্যানে বিভিন্নস্থানে ঘুরাঘুরি করছেন। রিকশা চালকরা মিলাতে পারছেনা যাত্রী। রাস্তার মোড়ো মোড় অসংখ্য চালক যাত্রীর অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। তাদের নেই করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। তাদের যেন ক্ষুধার জ্বালাই বড় আতঙ্ক। তবে বাইরে বের হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাঁধার মুখে পড়তে হচ্ছে। মাইকিং করে সবাইকে সামাজিক দ্রæত বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে। উপজেলা জুড়েই চলছে সেনা সদস্যদের টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের তৎপরতা। শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন গেলে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। উপজেলা গোপালদী পৌরসভা, রামচন্দ্রী, শাহলমদী, কালিবাড়ি, দুপ্তারা, আড়াইহাজার পৌরসভা ও বান্টি এলাকায় বিপুল সংখ্যক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক এখন বেকার হয়ে পড়ছে। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারায় এবং ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বন্ধ করে দিয়েছেন। বান্টি এলাকায় বেশ কিছু শ্রমিক বলেন, তাদের সঞ্চিত অর্থ ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে। সংসার চলবে কিভাবে এমন দুচিন্তায় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের। এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ  থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতাই তাদের মধ্যে অনেকেই পায়নি বলে জানান।  স্থানীয় বিপুল সংখ্যক রিকশা চালকদের মধ্যে অনেকেই এখনো পায়নি ত্রাণ সামগ্রী। বৈলারকান্দী এলাকার রিকশা চালক বাছেদ জানান, সারাদিনে মাত্র ৯০ টাকা আয় করেছি। রিকশার জমা দিতে ১০০টাকা। সংসারে চারজন জন সদস্য। এতে আমার সংসার চলবে না। আগে এই সময়টাতে ৩০০ থেকে ৪০০টাকা আয় করতে পারতাম। এখন তা হচ্ছে না। তার মতো অনেকেই আয় করতে না পেয়ে এমন আক্ষেপ করেছেন। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সোহাগ হোসেন বলেন, খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রলালয়ের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায়  প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে আরো বৃদ্ধি করা হবে। আড়াইহাজার থানার ওসি তদন্ত আমীর হোসেন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের দুইটি দল জনসমাগম ঠেকাতে কাজ করছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status