শেষের পাতা

নতুন ৬ জনসহ আক্রান্ত ৩৯

করোনায় আরো একজনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার

২৫ মার্চ ২০২০, বুধবার, ৮:৩২ পূর্বাহ্ন

করোনা আতঙ্কে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ ছবি: জীবন আহমেদ

দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। করোনা ভাইরাসে নতুন করে আরো ছয়জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। ফলে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে। গতকাল বিকেলে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ছয়জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই ছয়জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। তিনি বহুদিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা চার। নতুন মৃত ব্যক্তির বয়স ৭০ বছরের বেশি। আক্রান্ত বাকি পাঁচজনের একজন ওমরাহ করে ফিরেছেন। বাকি চারজন আগের রোগীদের সংস্পর্শে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। ডা. ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে এক হাজার ৭০০টি কল এসেছে। এর সবই করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে, যাদের কেউ নিশ্চিত শনাক্ত অথবা সন্দেহভাজন, এমন আছেন ৪০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ জন। ব্রিফিংয়ে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নাগরিকদের করণীয়ও তুলে ধরেন তিনি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ২৭ হাজার ১৮০ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ৬ হাজার ২৩৫ জনকে। করোনা পরীক্ষার জন্য ৭টি স্থান নির্দিষ্ট করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ধনাঢ্য ব্যক্তি, সমাজসেবীদের বিমামূল্যে মাস্ক বিতরণের আহবান জানিয়েছেন। সাধারণ রোগে আক্রান্তদের এখন হাসপাতালে না যাওয়াই ভালো বলে তিনি উল্লেখ করেন। এখন থেকে দেশের কোনো হাসপাতালে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। অন্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, যাদের অস্ত্রোপচার কয়েক মাস পর করলেও চলবে, তাদের এখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিৎ হবে না মহাপরিচালক মনে করেন।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরের চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে চার লাখের বেশি এবং মারা গেছেন ১৬ হাজারের বেশি। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক লাখের ওপরে। বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ই মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন চারজন।
সচিবালয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ জোরদার: সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হয়েছে। গতকাল দুপুর থেকে এই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এর আগে গত ২৩শে মার্চ থেকে দর্শানার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সূত্রে জানায়, বিকেল থেকে অস্থায়ী পাসধারীদের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে সংবাদ সংগ্রহের স্বার্থে অ্যক্রিডিটিশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের প্রবেশ শিথিল রাখা হয়েছে। সোমবার থেকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল হাজিরা ব্যবস্থাও বন্ধ করা হয়েছে। ফিঙ্গার প্রিন্ট থেকে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে আশঙ্কায় এ ব্যবস্থা করা হয়। সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রাজিব দাস গণমাধ্যমকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগেই দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দেয়া অস্থায়ী পাস যাদের রয়েছে তাদের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যারা সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের প্রবেশ করানো হচ্ছে জ্বর পরীক্ষা করে। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে সচিবালয়ের প্রত্যেকের হাত ধোয়াসহ স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান রাজিব দাস। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার কক্ষ ছাড়া অন্য যেকোনও রুমে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জনসংযোগ কর্মকর্তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। ইতিমধ্যে সচিবালয়ে সব ধরনের সংবাদ সম্মেলন করা বন্ধ করেছে মন্ত্রণালয়গুলো। মন্ত্রণালয় থেকে ভিডিও বার্তাসহ প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status