বাংলারজমিন
কোয়ারেন্টিনে কয়েক হাজার মানুষ
২৪ মার্চ ২০২০, মঙ্গলবার, ৮:০১ পূর্বাহ্ন
কিশোরগঞ্জে ৩৭১
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে: কিশোরগঞ্জে নতুন করে ৭৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই ৭৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই সময়ে ৪১ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। এ নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট কোয়ারেন্টিনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮৭ জনে। তাদের মধ্যে মোট ২১৬ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। বর্তমানে জেলায় মোট ৩৭১ জন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং বাকি ৩৪১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের সবাই বিদেশ ফেরত। কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৮ জন, হোসেনপুরে ২৪ জন, করিমগঞ্জে ২১ জন, তাড়াইলে ৯ জন, পাকুন্দিয়ায় ৩০ জন, কটিয়াদীতে ১০২ জন, কুলিয়ারচরে ২৫ জন, ভৈরবে ৭৭ জন, নিকলীতে ৩ জন, বাজিতপুরে ১৩ জন, ইটনায় ১১ জন, মিঠামইনে ১২ জন ও অষ্টগ্রামে ১৬ জন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এর মধ্যে অষ্টগ্রাম উপজেলার ১৬ জনই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং ভৈরব উপজেলার ১৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জে কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে মোট ২১৬ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। এই সময়ে তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
জ্বর-সর্দি নিয়ে বৃদ্ধ হাসপাতালে
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: সীতাকুণ্ডে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রবাসীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে মোট ৬০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ পিতা জ্বর ও সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসে। এ ছাড়া দুই জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছে বিআইটিআইডি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মোট ৬০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখেছে প্রশাসন। কিন্তু কোনো কোনো প্রবাসী কোয়ারেন্টিনের নিয়ম না মেনে এলাকায় ঘুরছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার সলিমপুর আবদুল্লাঘাটা এলাকার মৃত ইয়াকুব ড্রাইভারের ছেলে কুয়েক প্রবাসী মো. শাহজাহানও কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। ঐ এলাকার মেম্বার মো. ইউসুফ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি কথা শুনতে চান না বলে অভিযোগ। একইভাবে আরো অনেকে কোয়ারেন্টিন না মেনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এসব কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ বাবা জ্বর ও সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। তার মধ্যে কোনো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে কিনা নিশ্চিত না হলেও তাকে আপাতত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। এ ছাড়া আরো দুইজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার রোগতত্ত্ব নিরূপণ কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নুরনবী রাশেদ জানান, সীতাকুণ্ডে আসা প্রবাসীদের খবর পেলেই তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত ৬০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ পিতা জ্বর-সর্দি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাইলেও তিনি ভর্তি না হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু তার মধ্যে করোনা লক্ষণ আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, প্রবাসীরা এতদিন বিদেশে থাকতে পারেন কিন্তু দেশে আসার পর স্বজনদের কাছ থেকে দূরে থেকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে চান না। অনেকেই নিয়ম না মেনে পরিবারের সবার স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে ঘুরে বেড়ান। এমন অনেককে আমরা বাধ্য করেছি কোয়ারেন্টিনে থাকতে। তবুও কয়েকজন কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে খবর আসছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সবার নির্দেশনা মেনে চলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, কোন সন্দ্বিগ্ধ রোগী যদি হাসপাতালে আসেন তাকে অবশ্যই ভর্তি করাতে হবে। নইলে তার মাধ্যমে আরো রোগ ছড়াতে পারে- এমন নিয়মেই আমরা চলছি। আর যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাচ্ছি আমরা। গত শুক্রবার তিনজন ও শনিবার দুই জনের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি কোথাও কোনো রোগী এমন থাকে যার মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে সেক্ষেত্রে রোগীকে আসতে হবে না। আমাদেরকে খবর দিলে আমরাই লোক পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবো।
কুড়িগ্রামে ১৬৮
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রামে সোমবার নতুন করে ১৮ জনসহ ১৬৮ জনকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি বিদেশ ফেরত কেউ বাইরে ঘোরাফেরা করছেন কিনা। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সহায়তায় কাজটি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভাণ্ডারিয়ায় বাজার বন্ধ
ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে দোকানপাটসহ সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবারের দু’দিনের বাজার বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত ২২শে মার্চ রোববার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত উপজেলার কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান বাদে অন্য সকল প্রকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় এবং ২৩শে মার্চ সোমবার সকালে সকল প্রকারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কার্যকরের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ভাণ্ডারিয়া বন্দরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের সতর্কতার জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দর ব্যবসায়ী নেতা মো. মিজানুর রহমান নিপু জোমাদ্দারসহ অন্যরা। এদিকে ইমিগ্রেশনের তথ্যমতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ২৮৫ জন প্রবাসী দেশে আসলেও তাদের মধ্য থেকে ৫১ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাকিদের পাওয়া যাচ্ছে না। তারা হয়তো দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান।
মাগুরায় টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে
সেবা নেয়ার জন্য আহ্বান
মাগুরা প্রতিনিধি: করোনার ভাইরাসের প্রার্দুভাব মোকাবিলায় সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের ভিড় এড়াতে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রদীপ কুমার সাহা। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি সাধারণ রোগীদের প্রতি এ আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি, জ্বরজনিত রোগের জন্য সদর হাসপাতালে না এসে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা প্রদানকারী চিকিৎসকগণ হলেন ডা. শামান্তা আমিন, ডা. মো. আজিজুর রহমান, ডা. মো. আল মুস্তাকিম, ডা. মো. আহসান হাসিব, ডা. মো. আলি মিতুল, ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, ডা. সৌভিক ভট্টাচার্য, ডা. গৌরব ব্যানার্জি, ডা. নাজমুন সাকিব ও ডা. মিথুন সাহা প্রমুখ। এসব চিকিৎসকগণের নাম ও মোবাইল নম্বর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
জয়পুরহাটে ৮৪
জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটে বিদেশ থেকে আসা ৮৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তারা ইতালি, জর্ডান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা জানান, এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ বিদেশ থেকে এসেছেন কিন্তু এর মধ্যে ৮৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন আইনে রাখা হয়েছে এবং আক্কেলপুর হাসপাতালে ১জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জেলার সর্বত্রই সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এদিকে হোম কোয়ারেন্টিন নির্দেশনা না মানায় জেলায় ৪ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আসছে বলে জানানো হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে: কিশোরগঞ্জে নতুন করে ৭৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই ৭৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই সময়ে ৪১ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। এ নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট কোয়ারেন্টিনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮৭ জনে। তাদের মধ্যে মোট ২১৬ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। বর্তমানে জেলায় মোট ৩৭১ জন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং বাকি ৩৪১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের সবাই বিদেশ ফেরত। কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৮ জন, হোসেনপুরে ২৪ জন, করিমগঞ্জে ২১ জন, তাড়াইলে ৯ জন, পাকুন্দিয়ায় ৩০ জন, কটিয়াদীতে ১০২ জন, কুলিয়ারচরে ২৫ জন, ভৈরবে ৭৭ জন, নিকলীতে ৩ জন, বাজিতপুরে ১৩ জন, ইটনায় ১১ জন, মিঠামইনে ১২ জন ও অষ্টগ্রামে ১৬ জন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এর মধ্যে অষ্টগ্রাম উপজেলার ১৬ জনই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং ভৈরব উপজেলার ১৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জে কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে মোট ২১৬ জন তাদের কোয়ারেন্টিন সমাপ্ত করেছেন। এই সময়ে তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
জ্বর-সর্দি নিয়ে বৃদ্ধ হাসপাতালে
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: সীতাকুণ্ডে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রবাসীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে মোট ৬০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ পিতা জ্বর ও সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসে। এ ছাড়া দুই জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছে বিআইটিআইডি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মোট ৬০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখেছে প্রশাসন। কিন্তু কোনো কোনো প্রবাসী কোয়ারেন্টিনের নিয়ম না মেনে এলাকায় ঘুরছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার সলিমপুর আবদুল্লাঘাটা এলাকার মৃত ইয়াকুব ড্রাইভারের ছেলে কুয়েক প্রবাসী মো. শাহজাহানও কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। ঐ এলাকার মেম্বার মো. ইউসুফ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি কথা শুনতে চান না বলে অভিযোগ। একইভাবে আরো অনেকে কোয়ারেন্টিন না মেনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এসব কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ বাবা জ্বর ও সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। তার মধ্যে কোনো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে কিনা নিশ্চিত না হলেও তাকে আপাতত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। এ ছাড়া আরো দুইজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার রোগতত্ত্ব নিরূপণ কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নুরনবী রাশেদ জানান, সীতাকুণ্ডে আসা প্রবাসীদের খবর পেলেই তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত ৬০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল এক প্রবাসীর বৃদ্ধ পিতা জ্বর-সর্দি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাইলেও তিনি ভর্তি না হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু তার মধ্যে করোনা লক্ষণ আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, প্রবাসীরা এতদিন বিদেশে থাকতে পারেন কিন্তু দেশে আসার পর স্বজনদের কাছ থেকে দূরে থেকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে চান না। অনেকেই নিয়ম না মেনে পরিবারের সবার স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে ঘুরে বেড়ান। এমন অনেককে আমরা বাধ্য করেছি কোয়ারেন্টিনে থাকতে। তবুও কয়েকজন কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে খবর আসছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সবার নির্দেশনা মেনে চলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, কোন সন্দ্বিগ্ধ রোগী যদি হাসপাতালে আসেন তাকে অবশ্যই ভর্তি করাতে হবে। নইলে তার মাধ্যমে আরো রোগ ছড়াতে পারে- এমন নিয়মেই আমরা চলছি। আর যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাচ্ছি আমরা। গত শুক্রবার তিনজন ও শনিবার দুই জনের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি কোথাও কোনো রোগী এমন থাকে যার মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে সেক্ষেত্রে রোগীকে আসতে হবে না। আমাদেরকে খবর দিলে আমরাই লোক পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবো।
কুড়িগ্রামে ১৬৮
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রামে সোমবার নতুন করে ১৮ জনসহ ১৬৮ জনকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি বিদেশ ফেরত কেউ বাইরে ঘোরাফেরা করছেন কিনা। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সহায়তায় কাজটি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভাণ্ডারিয়ায় বাজার বন্ধ
ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে দোকানপাটসহ সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবারের দু’দিনের বাজার বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত ২২শে মার্চ রোববার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত উপজেলার কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান বাদে অন্য সকল প্রকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় এবং ২৩শে মার্চ সোমবার সকালে সকল প্রকারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কার্যকরের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ভাণ্ডারিয়া বন্দরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের সতর্কতার জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দর ব্যবসায়ী নেতা মো. মিজানুর রহমান নিপু জোমাদ্দারসহ অন্যরা। এদিকে ইমিগ্রেশনের তথ্যমতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ২৮৫ জন প্রবাসী দেশে আসলেও তাদের মধ্য থেকে ৫১ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাকিদের পাওয়া যাচ্ছে না। তারা হয়তো দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান।
মাগুরায় টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে
সেবা নেয়ার জন্য আহ্বান
মাগুরা প্রতিনিধি: করোনার ভাইরাসের প্রার্দুভাব মোকাবিলায় সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের ভিড় এড়াতে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রদীপ কুমার সাহা। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি সাধারণ রোগীদের প্রতি এ আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি, জ্বরজনিত রোগের জন্য সদর হাসপাতালে না এসে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা প্রদানকারী চিকিৎসকগণ হলেন ডা. শামান্তা আমিন, ডা. মো. আজিজুর রহমান, ডা. মো. আল মুস্তাকিম, ডা. মো. আহসান হাসিব, ডা. মো. আলি মিতুল, ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, ডা. সৌভিক ভট্টাচার্য, ডা. গৌরব ব্যানার্জি, ডা. নাজমুন সাকিব ও ডা. মিথুন সাহা প্রমুখ। এসব চিকিৎসকগণের নাম ও মোবাইল নম্বর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
জয়পুরহাটে ৮৪
জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটে বিদেশ থেকে আসা ৮৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তারা ইতালি, জর্ডান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা জানান, এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ বিদেশ থেকে এসেছেন কিন্তু এর মধ্যে ৮৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন আইনে রাখা হয়েছে এবং আক্কেলপুর হাসপাতালে ১জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জেলার সর্বত্রই সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এদিকে হোম কোয়ারেন্টিন নির্দেশনা না মানায় জেলায় ৪ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আসছে বলে জানানো হয়।