প্রথম পাতা
সরজমিন
পাপিয়ার ভয়ঙ্কর নরসিংদী অধ্যায়
পিয়াস সরকার, নরসিংদী থেকে
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন
শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ। এ মুহূর্তে দেশ জুড়ে আলোচিত নাম। তাকে নিয়ে তুমুল আলোচনা তার জন্ম শহর নরসিংদীতেও। অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান পাপিয়ার পাল্টে পাওয়া শুরু কলেজ জীবন থেকে। সাজ-পোশাকে নিজেকে আলাদা করে প্রকাশ করতো পাপিয়া। এতে এলাকার মানুষজনেরও কটু দৃষ্টি পরে তার ওপর। কলেজ জীবনেই একাধিক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। তাদেরই একজন মফিজুর রহমান ওরফে সুমন। যার সঙ্গে বিয়ে হয় পাপিয়ার। সুমন ছাত্রলীগের রাজনীতি করত। এলাকায় প্রভাব ছিল বেশ। দুই জনের পছন্দে পালিয়ে বিয়ে করে তারা।
পরে অবশ্য পরিবার সম্পর্ক মেনে নিয়ে বাসায় নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারে। পরে স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে রাজনীতিতে নামেন। অংশ নিতে থাকেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তৈরি করতে থাকেন নিজস্ব বলয়। স্থানীয় রাজনীতিতে মেরুকরণের সূত্র ধরে তারা একটি বলয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন। স্থানীয় পৌর মেয়র পক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দফায় দফায় ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়েছে পাপিয়া দম্পতিকে। এক পর্যায়ে হামলার শিকার হন তারা। পরে অবশ্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর সান্নিধ্য পেয়ে এলাকায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নেন। নজরুল ইসলাম হিরুর প্রতিপক্ষের অভিযোগ এলাকায় জনসমর্থন না থাকায় তিনি পাপিয়াদের মতো নেতা-নেত্রীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল দিনভর নরসিংদীর শহরে ব্রাহ্মণদি ও বাগদি এলাকায় ঘুরে পাপিয়া ও সুমন সম্পর্কে পাওয়া গেছে নানা তথ্য। ব্রাহ্মণদিতে পাপিয়ার স্বামী সুমনের বাড়ি।
এক সময় কিছু না থাকলেও এখন চার তলা বাড়িতে থাকেন তার স্বজনরা। বাগদিতে পাপিয়ার বাবার ভিটা। কয়েক বছর আগে এখানে একটি টিন শেডের ঘর থাকলেও এখন তিন তলা সুরম্য বাড়ি করে দিয়েছেন পাপিয়া। পাপিয়ার বাবা সাইফুল বারী। পেট্রোবাংলায় গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি করতেন। তার চার ছেলে মেয়ে। পাপিয়ার বড় ভাই ব্যবসায়ী, ছোট ভাই সোহাগ খান অর্ক। তিনি ছাত্রলীগ কর্মী। বোনের দাপটে তিনিও বেপরোয়া। কিছু দিন পর পর নতুন বাইক কিনে দাপিয়ে বেড়ান এলাকা। পাপিয়ার বড় বোন বিধবা। দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকেন। স্থানীয়দের দাবি পাপিয়ার মেয়ের মৃত্যুর পর তার জীবন অনেকটা পাল্টে যায়। বিয়ের পর অনেক দিন তার কোন সন্তান হয়নি। এজন্য আজমীর শরীফসহ বিভিন্ন মাজারে যাতায়াত করেছে। তিন বছর আগে তার জমজ সন্তানের জন্ম হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ে। এক বছরের মাথায় বাসার ছাদ থেকে পড়ে পাপিয়ার মেয়ে সন্তান মারা যায়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পাপিয়া। সে সময় মানসিক সমস্যা থেকে আত্মহত্যার চেষ্টাও চালিয়ে ছিল। মেয়ের শোক কাটিয়ে এক পর্যায়ে রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হন পাপিয়া। নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে এলাকায় গড়ে তুলেন কিউ এন্ড সি গ্রুপ। সবার হাতে বিশেষ ট্যাটু করা থাকতো তার দলের। তার টার্গেট ছিল কম বয়সী ছেলে। তাদের বেতন দেয়া হয় মাসিক ভিত্তিতে। স্থানীয় একজন সাবেক ছাত্রনেতা বলেন, তাদের সবার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে রাখে পাপিয়া এবং বলে কোন সমস্যা হবে না। পুলিশ ধরবে না। ধরলেও ছেড়ে দেবে। সে অনেককে কিনে দিয়েছে মোটরসাইকেল। তাদের ট্যাটু করা ছেলের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ জন। এছাড়াও ট্যাটু ছাড়া কর্মীর সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০ জন। পাপিয়ার সাথে থাকতো প্রায় ১০ জন নারী কর্মী।
প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় চলাচলের সময় চারপাশে বিশাল গাড়িবহর থাকতো। মাঝে কালো গাড়িতে থাকতো পাপিয়া। আর সেই সাথে থাকতো আরো ২টি গাড়ি। মোটর সাইকেল থাকতো অন্তত ২০টি। সড়কে চলার সময় আগে থেকে রাস্তার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতো তার কর্মীরা।
গতকাল বাগদি এলাকায় পাপিয়ার পৈত্রিক বাড়িতে গেলে সেখানে পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখা মিলেনি। পাপিয়ার মা সেলিনা বারি অসুস্থ। তার সঙ্গে কথা হয় পাপিয়ার বিষয়ে। বাড়িটি ৩ তলা। সাজসজ্জা মন্ডিত। প্রতিটি তলায় আধুনিক উপকরণে সজ্জিত। বসার ঘরে দামী আসবাবপত্র। ঝাড় বাতি, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন আগে এখানে একটি টিনের ঘর ছিল। এ বাড়িতেই পাপিয়া পরিবারের সঙ্গে থাকতো। অবৈধ অর্থের উৎস পাওয়ার পর পাপিয়াই এই বাড়িটি নির্মাণ করে দেয়। সেলিনা বারি বলেন, মানুষের ভালো মন্দ সব দিক আছে। আমার মেয়ে রাজনীতি করত কিছু হয়ত খারাপ কাজ করেছে। তার বিচার হোক। কিন্তু অযথা যাতে কোন হেনস্থার শিকার না হয়। যারা তাকে ব্যবহার করেছে তারাও যেন বিচারের সম্মুখিন হয়।
পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনও ছোট বেলা থেকেই এলাকায় আলোকিত ছিলেন। তার এক বন্ধু বলেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থা থেকেই আসতে শুরু করে নানা অভিযোগ। এরপর ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হবার পর থেকে কাঁচা টাকার মালিক হতে শুরু করেন। তার সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা একবন্ধু বলেন, সরকার পরিবর্তন হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একবার অস্ত্র নিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করেছিলেন আমাদের এক বন্ধুকে। তিনি বলেন, এরপর সে জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসায়। তার হাত ধরেই নরসিংদীতে ইয়াবা আসে। কক্সবাজারে পিকনিকের নাম করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে যেতেন ভাড়া করা মাইক্রোবাসে। ওই গাড়িতেই আসতো ইয়াবা। নানা অপকর্ম প্রকাশ পাওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগে তাকে নিয়ে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। নেতাদের পাশে ভিড়তে পারতেন না। এরপর নেতারা তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। আরেক সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ফায়দা লুটতে ২০১২ সালে ‘নাটক’ করে। নিজের স্ত্রীর ওপর গুলির নাটক সাজায় সুমন। এরপর এলাকা ছেড়ে চলে যায় ঢাকা। পাপিয়া ঢাকায় সহানুভূতি আদায় করতে সক্ষম হয়। যার ফল স্বরূপ ২০১৪ সালে স্থানীয় নেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও যুব মহিলা লীগের পদ পান। সুমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ৪ তলা নতুন বাড়ি। ১৪ মাস আগে হয়েছে এই বাড়ি। সুমনের বাবা মতিউর রহমান গানের শিক্ষক।
স্থানীয়রা জানান, মাদক বিরোধী অভিযানের সময় পাপিয়া সুমনের মাদক ব্যবসায় ভাটা পড়ে। তখন মনোযোগ দেয় নির্যাতন করে টাকা আদায়ে। কে এম সি কার ওয়াশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলেও এটি ব্যবহার হতো টর্চার সেল হিসেবে। একজন ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করে বলেন, তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে বোনের অংশ কম হওয়ায় পাপিয়ার কাছে নালিশ করেন। এরপর পুরো জমি দখল করে পাপিয়া বোনের নামে করে দেন। যার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আরেকজন বলেন, একবার ব্যবসার কাজে ঢাকা যাচ্ছিলাম। বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় তুলে নিয়ে যায় তাদের লোকজন। নির্যাতন করার পর ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পাই। পাপিয়া গ্রেপ্তারের কয়েক দিন আগেও অবৈধ কাগজ বানিয়ে একজনের জমি দখলের চেষ্টা করে।
পরে অবশ্য পরিবার সম্পর্ক মেনে নিয়ে বাসায় নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারে। পরে স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে রাজনীতিতে নামেন। অংশ নিতে থাকেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তৈরি করতে থাকেন নিজস্ব বলয়। স্থানীয় রাজনীতিতে মেরুকরণের সূত্র ধরে তারা একটি বলয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন। স্থানীয় পৌর মেয়র পক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দফায় দফায় ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়েছে পাপিয়া দম্পতিকে। এক পর্যায়ে হামলার শিকার হন তারা। পরে অবশ্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর সান্নিধ্য পেয়ে এলাকায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নেন। নজরুল ইসলাম হিরুর প্রতিপক্ষের অভিযোগ এলাকায় জনসমর্থন না থাকায় তিনি পাপিয়াদের মতো নেতা-নেত্রীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল দিনভর নরসিংদীর শহরে ব্রাহ্মণদি ও বাগদি এলাকায় ঘুরে পাপিয়া ও সুমন সম্পর্কে পাওয়া গেছে নানা তথ্য। ব্রাহ্মণদিতে পাপিয়ার স্বামী সুমনের বাড়ি।
এক সময় কিছু না থাকলেও এখন চার তলা বাড়িতে থাকেন তার স্বজনরা। বাগদিতে পাপিয়ার বাবার ভিটা। কয়েক বছর আগে এখানে একটি টিন শেডের ঘর থাকলেও এখন তিন তলা সুরম্য বাড়ি করে দিয়েছেন পাপিয়া। পাপিয়ার বাবা সাইফুল বারী। পেট্রোবাংলায় গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি করতেন। তার চার ছেলে মেয়ে। পাপিয়ার বড় ভাই ব্যবসায়ী, ছোট ভাই সোহাগ খান অর্ক। তিনি ছাত্রলীগ কর্মী। বোনের দাপটে তিনিও বেপরোয়া। কিছু দিন পর পর নতুন বাইক কিনে দাপিয়ে বেড়ান এলাকা। পাপিয়ার বড় বোন বিধবা। দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকেন। স্থানীয়দের দাবি পাপিয়ার মেয়ের মৃত্যুর পর তার জীবন অনেকটা পাল্টে যায়। বিয়ের পর অনেক দিন তার কোন সন্তান হয়নি। এজন্য আজমীর শরীফসহ বিভিন্ন মাজারে যাতায়াত করেছে। তিন বছর আগে তার জমজ সন্তানের জন্ম হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ে। এক বছরের মাথায় বাসার ছাদ থেকে পড়ে পাপিয়ার মেয়ে সন্তান মারা যায়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পাপিয়া। সে সময় মানসিক সমস্যা থেকে আত্মহত্যার চেষ্টাও চালিয়ে ছিল। মেয়ের শোক কাটিয়ে এক পর্যায়ে রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হন পাপিয়া। নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে এলাকায় গড়ে তুলেন কিউ এন্ড সি গ্রুপ। সবার হাতে বিশেষ ট্যাটু করা থাকতো তার দলের। তার টার্গেট ছিল কম বয়সী ছেলে। তাদের বেতন দেয়া হয় মাসিক ভিত্তিতে। স্থানীয় একজন সাবেক ছাত্রনেতা বলেন, তাদের সবার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে রাখে পাপিয়া এবং বলে কোন সমস্যা হবে না। পুলিশ ধরবে না। ধরলেও ছেড়ে দেবে। সে অনেককে কিনে দিয়েছে মোটরসাইকেল। তাদের ট্যাটু করা ছেলের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ জন। এছাড়াও ট্যাটু ছাড়া কর্মীর সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০ জন। পাপিয়ার সাথে থাকতো প্রায় ১০ জন নারী কর্মী।
প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় চলাচলের সময় চারপাশে বিশাল গাড়িবহর থাকতো। মাঝে কালো গাড়িতে থাকতো পাপিয়া। আর সেই সাথে থাকতো আরো ২টি গাড়ি। মোটর সাইকেল থাকতো অন্তত ২০টি। সড়কে চলার সময় আগে থেকে রাস্তার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতো তার কর্মীরা।
গতকাল বাগদি এলাকায় পাপিয়ার পৈত্রিক বাড়িতে গেলে সেখানে পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখা মিলেনি। পাপিয়ার মা সেলিনা বারি অসুস্থ। তার সঙ্গে কথা হয় পাপিয়ার বিষয়ে। বাড়িটি ৩ তলা। সাজসজ্জা মন্ডিত। প্রতিটি তলায় আধুনিক উপকরণে সজ্জিত। বসার ঘরে দামী আসবাবপত্র। ঝাড় বাতি, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন আগে এখানে একটি টিনের ঘর ছিল। এ বাড়িতেই পাপিয়া পরিবারের সঙ্গে থাকতো। অবৈধ অর্থের উৎস পাওয়ার পর পাপিয়াই এই বাড়িটি নির্মাণ করে দেয়। সেলিনা বারি বলেন, মানুষের ভালো মন্দ সব দিক আছে। আমার মেয়ে রাজনীতি করত কিছু হয়ত খারাপ কাজ করেছে। তার বিচার হোক। কিন্তু অযথা যাতে কোন হেনস্থার শিকার না হয়। যারা তাকে ব্যবহার করেছে তারাও যেন বিচারের সম্মুখিন হয়।
পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনও ছোট বেলা থেকেই এলাকায় আলোকিত ছিলেন। তার এক বন্ধু বলেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থা থেকেই আসতে শুরু করে নানা অভিযোগ। এরপর ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হবার পর থেকে কাঁচা টাকার মালিক হতে শুরু করেন। তার সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা একবন্ধু বলেন, সরকার পরিবর্তন হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একবার অস্ত্র নিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করেছিলেন আমাদের এক বন্ধুকে। তিনি বলেন, এরপর সে জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসায়। তার হাত ধরেই নরসিংদীতে ইয়াবা আসে। কক্সবাজারে পিকনিকের নাম করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে যেতেন ভাড়া করা মাইক্রোবাসে। ওই গাড়িতেই আসতো ইয়াবা। নানা অপকর্ম প্রকাশ পাওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগে তাকে নিয়ে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। নেতাদের পাশে ভিড়তে পারতেন না। এরপর নেতারা তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। আরেক সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ফায়দা লুটতে ২০১২ সালে ‘নাটক’ করে। নিজের স্ত্রীর ওপর গুলির নাটক সাজায় সুমন। এরপর এলাকা ছেড়ে চলে যায় ঢাকা। পাপিয়া ঢাকায় সহানুভূতি আদায় করতে সক্ষম হয়। যার ফল স্বরূপ ২০১৪ সালে স্থানীয় নেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও যুব মহিলা লীগের পদ পান। সুমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ৪ তলা নতুন বাড়ি। ১৪ মাস আগে হয়েছে এই বাড়ি। সুমনের বাবা মতিউর রহমান গানের শিক্ষক।
স্থানীয়রা জানান, মাদক বিরোধী অভিযানের সময় পাপিয়া সুমনের মাদক ব্যবসায় ভাটা পড়ে। তখন মনোযোগ দেয় নির্যাতন করে টাকা আদায়ে। কে এম সি কার ওয়াশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলেও এটি ব্যবহার হতো টর্চার সেল হিসেবে। একজন ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করে বলেন, তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে বোনের অংশ কম হওয়ায় পাপিয়ার কাছে নালিশ করেন। এরপর পুরো জমি দখল করে পাপিয়া বোনের নামে করে দেন। যার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আরেকজন বলেন, একবার ব্যবসার কাজে ঢাকা যাচ্ছিলাম। বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় তুলে নিয়ে যায় তাদের লোকজন। নির্যাতন করার পর ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পাই। পাপিয়া গ্রেপ্তারের কয়েক দিন আগেও অবৈধ কাগজ বানিয়ে একজনের জমি দখলের চেষ্টা করে।