শেষের পাতা
শহীদ মিনারের স্রোত গ্রন্থমেলায়
স্টাফ রিপোর্টার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
ভাষার মাস, মাতৃভাষাকে আবর্তিত করেই গ্রন্থমেলা। ১৯৫২’র একুশে ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল এদেশের দামাল ছেলেরা। শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল তারা। বিনিময়ে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার ছিনিয়ে এনেছে শাসকশ্রেণির কাছ থেকে।
ভাষা আন্দোলনের সেই অমর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। গতকাল ছিল অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। এদিন সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে শহীদদের স্মৃতির রক্ষার্থে নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ফুলে ফুলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদী ভরে দিয়েছে বাংলা ভাষাবাসীরা। নিরবে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা এদিন জনতার স্রোত ছিল অনেক দীর্ঘ। আর সেই স্রোত এসে ঠেকেছে গ্রন্থমেলায়। এদিন মেলায় আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে আগের সবদিনকে। সহস্র মানুষের ভিড় ছিল গ্রন্থমেলায়। বিকিকিনিও ছিল বেশ। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের অধিকাংশই বই নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে, মাসব্যাপী এ গ্রন্থমেলায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন বই। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, রম্যরচনা, অনুবাদ, শিশুতোষ, বিজ্ঞান, খেলাধুলা- কত রকমের বই, সবই আসছে গ্রন্থমেলায়। চলতি মেলায় নতুন বইয়ের সংখ্যা তিন হাজার ছুঁই ছুঁই। কিন্তু যে ভাষা শহীদদের স্মরণে গ্রন্থমেলা, সেখানে অপ্রতুল ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের। শুধু চলতি গ্রন্থমেলা নয়, গত কয়েকবছর ধরে গ্রন্থমেলায় একুশের বইয়ের আকাল চলছে। প্রকাশকরা বলছেন, ভালো মানের পাণ্ডুলিপি নিয়ে আসছেন না আগ্রহী লেখকরা। তাই তারা এসব বই ছাপাতেও সাহস পান না। অন্যদিকে, একুশের বইয়ের চাহিদাও কম, তাই নামিদামি লেখকদের এ বিষয়ে লেখতে চাপও দিতে পারেন না তারা। যদিও পাঠক বলছেন অন্যকথা। তাদের মতে, মেলায় ভালো মানের ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বই আসছে না। যা আসছে তাতেও খুব আগ্রহী হওয়া যাচ্ছে না। পাঠকদের মতে, ভালো মানের বই বাজারে আসলে সেটি পাঠক খুঁজে নেবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই প্রকাশকদের এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত।
এদিকে চলতি মেলায় প্রায় ৬’শ প্রকাশনাকে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। কিন্তু এসব প্রকাশনার ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের সংখ্যা একেবারেই কম। বেশিরভাগ প্রকাশনারই এ বিষয়ে কোন নতুন বই মেলায় আসেনি। সেটি বড় কিংবা ছোট প্রকাশনা হোক। শুধু তাই নয়, খোদ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ২৬টি নতুন বইয়ের মধ্যে ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বই মাত্র দু’টি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্নধার আরিফুর রহমান নাঈম বলেন, প্রথমত; ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের চাহিদা কম। দ্বিতীয়ত; এ বিষয়ে ভালো মানের পাণ্ডুলিপি তারা পাচ্ছেন না। তাই যেন তেন বই মুদ্রণে আগ্রহী নয় তার প্রকাশনা। কাকলী প্রকাশনীর কর্ণধার নাসির উদ্দিন সেলিম বলেন, ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের চাহিদা কম। যার কারণে ভালো মানের লেখকদের এ বিষয়ে লেখতে চাপও দিতে পারছেন না তারা। অন্যপ্রকাশের জনসংযোগ কর্মকর্তা আলা উদ্দিন টিপু বলেন, আমাদের এখানে উপন্যাস, কবিতা, গল্প এসব বইই বেশি চলছে। পাঠক ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের প্রতি তেমন আগ্রহী নন, ভালো মানের পাণ্ডুলিপিও পাওয়া যায় না তাই এ বিষয়ে লেখা বই আসেনি। স্টুডেন্ট ওয়েজ এর প্রকাশক মো. লেয়াকত উল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে লেখতে হলে অধিক পড়াশোনা প্রয়োজন। খুব ভালো না জেনে যে কেউ বই প্রকাশে আগ্রহী হন না। মেলায় বেশ কয়েকটি স্টল ও প্যাভেলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একুশের বইয়ের সংখ্যা হাতেগোনা। বেশিরভাগ প্রকাশনারই এ বিষয়ে নতুন কোন বই মেলায় আসেনি। যেসব প্রকাশনার এসেছে তাও দু’একটির মধ্যে সীমাবদ্ধ। অন্তত ১৫টি স্টল ও প্যাভেলিয়ন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। চলতি বছর মেলায় আসা ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উল্লেখযোগ্য নতুন বইয়ের মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমির একুশের প্রবন্ধ, ভাষার গান; প্রথমা প্রকাশনীর ‘একুশের শহীদ : ছয় ভাষাশহীদের জীবনকথা’; আগামী প্রকাশনী থেকে ভাষাসংগ্রামী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ভাষাতত্ত্ব, ভাষাসাম্রাজ্যবাদ ও মানবাধিকার; কথা প্রকাশের ভাষাসংগ্রামী এম এ ওয়াদুদ; বিশ্বসাহিত্যভবনের ভাষা আন্দোলন কিশোর ইতিহাস ইত্যাদি। এদিকে পাঠক বলছেন, ভালো মানের বই মেলায় আসলে অবশ্যই পাঠক সেটি কিনে নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, মানসম্মত যেকোন জিনিস বাজারে আনলে সেটি মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। এখানেও বিষয়টি অনেকটা সেরকম। ভালোমানের একুশের বই আসলে পাঠক কেন নেবো না সেটির উত্তর আমি খুঁজে পাই না। আমি মনে করি, প্রকাশকদের বইয়ের মানের ওপর নজর দিতে হবে। তাহলে পাঠকও বাড়বে। পাঠক আগ্রহী নয়, এমন কথা আমি বিশ্বাস করি না।
ভাষা আন্দোলনের সেই অমর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। গতকাল ছিল অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। এদিন সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে শহীদদের স্মৃতির রক্ষার্থে নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ফুলে ফুলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদী ভরে দিয়েছে বাংলা ভাষাবাসীরা। নিরবে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা এদিন জনতার স্রোত ছিল অনেক দীর্ঘ। আর সেই স্রোত এসে ঠেকেছে গ্রন্থমেলায়। এদিন মেলায় আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে আগের সবদিনকে। সহস্র মানুষের ভিড় ছিল গ্রন্থমেলায়। বিকিকিনিও ছিল বেশ। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের অধিকাংশই বই নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে, মাসব্যাপী এ গ্রন্থমেলায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন বই। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, রম্যরচনা, অনুবাদ, শিশুতোষ, বিজ্ঞান, খেলাধুলা- কত রকমের বই, সবই আসছে গ্রন্থমেলায়। চলতি মেলায় নতুন বইয়ের সংখ্যা তিন হাজার ছুঁই ছুঁই। কিন্তু যে ভাষা শহীদদের স্মরণে গ্রন্থমেলা, সেখানে অপ্রতুল ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের। শুধু চলতি গ্রন্থমেলা নয়, গত কয়েকবছর ধরে গ্রন্থমেলায় একুশের বইয়ের আকাল চলছে। প্রকাশকরা বলছেন, ভালো মানের পাণ্ডুলিপি নিয়ে আসছেন না আগ্রহী লেখকরা। তাই তারা এসব বই ছাপাতেও সাহস পান না। অন্যদিকে, একুশের বইয়ের চাহিদাও কম, তাই নামিদামি লেখকদের এ বিষয়ে লেখতে চাপও দিতে পারেন না তারা। যদিও পাঠক বলছেন অন্যকথা। তাদের মতে, মেলায় ভালো মানের ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বই আসছে না। যা আসছে তাতেও খুব আগ্রহী হওয়া যাচ্ছে না। পাঠকদের মতে, ভালো মানের বই বাজারে আসলে সেটি পাঠক খুঁজে নেবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই প্রকাশকদের এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত।
এদিকে চলতি মেলায় প্রায় ৬’শ প্রকাশনাকে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। কিন্তু এসব প্রকাশনার ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের সংখ্যা একেবারেই কম। বেশিরভাগ প্রকাশনারই এ বিষয়ে কোন নতুন বই মেলায় আসেনি। সেটি বড় কিংবা ছোট প্রকাশনা হোক। শুধু তাই নয়, খোদ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ২৬টি নতুন বইয়ের মধ্যে ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বই মাত্র দু’টি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্নধার আরিফুর রহমান নাঈম বলেন, প্রথমত; ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের চাহিদা কম। দ্বিতীয়ত; এ বিষয়ে ভালো মানের পাণ্ডুলিপি তারা পাচ্ছেন না। তাই যেন তেন বই মুদ্রণে আগ্রহী নয় তার প্রকাশনা। কাকলী প্রকাশনীর কর্ণধার নাসির উদ্দিন সেলিম বলেন, ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের চাহিদা কম। যার কারণে ভালো মানের লেখকদের এ বিষয়ে লেখতে চাপও দিতে পারছেন না তারা। অন্যপ্রকাশের জনসংযোগ কর্মকর্তা আলা উদ্দিন টিপু বলেন, আমাদের এখানে উপন্যাস, কবিতা, গল্প এসব বইই বেশি চলছে। পাঠক ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বইয়ের প্রতি তেমন আগ্রহী নন, ভালো মানের পাণ্ডুলিপিও পাওয়া যায় না তাই এ বিষয়ে লেখা বই আসেনি। স্টুডেন্ট ওয়েজ এর প্রকাশক মো. লেয়াকত উল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে লেখতে হলে অধিক পড়াশোনা প্রয়োজন। খুব ভালো না জেনে যে কেউ বই প্রকাশে আগ্রহী হন না। মেলায় বেশ কয়েকটি স্টল ও প্যাভেলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একুশের বইয়ের সংখ্যা হাতেগোনা। বেশিরভাগ প্রকাশনারই এ বিষয়ে নতুন কোন বই মেলায় আসেনি। যেসব প্রকাশনার এসেছে তাও দু’একটির মধ্যে সীমাবদ্ধ। অন্তত ১৫টি স্টল ও প্যাভেলিয়ন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। চলতি বছর মেলায় আসা ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উল্লেখযোগ্য নতুন বইয়ের মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমির একুশের প্রবন্ধ, ভাষার গান; প্রথমা প্রকাশনীর ‘একুশের শহীদ : ছয় ভাষাশহীদের জীবনকথা’; আগামী প্রকাশনী থেকে ভাষাসংগ্রামী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ভাষাতত্ত্ব, ভাষাসাম্রাজ্যবাদ ও মানবাধিকার; কথা প্রকাশের ভাষাসংগ্রামী এম এ ওয়াদুদ; বিশ্বসাহিত্যভবনের ভাষা আন্দোলন কিশোর ইতিহাস ইত্যাদি। এদিকে পাঠক বলছেন, ভালো মানের বই মেলায় আসলে অবশ্যই পাঠক সেটি কিনে নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, মানসম্মত যেকোন জিনিস বাজারে আনলে সেটি মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। এখানেও বিষয়টি অনেকটা সেরকম। ভালোমানের একুশের বই আসলে পাঠক কেন নেবো না সেটির উত্তর আমি খুঁজে পাই না। আমি মনে করি, প্রকাশকদের বইয়ের মানের ওপর নজর দিতে হবে। তাহলে পাঠকও বাড়বে। পাঠক আগ্রহী নয়, এমন কথা আমি বিশ্বাস করি না।