বাংলারজমিন
সেনবাগের ৪ শহীদ এখনো পায়নি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
’৬৯-এর আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে শহীদ সেনবাগের ৪ সূর্য সন্তান এখনো পাননি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। ৬৯’ এর এই দিনে দেশমাতৃকার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেন তারা। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও নোয়াখালীর সেনবাগের ৪ শহীদ আর আহত সংগ্রামীদের কথা ইতিহাসের পাতায় আজও উঠে আসেনি। দীর্ঘ এ সময়ে তারা পায়নি কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। এমনকি কারো কারো সমাধির চিহ্নও অবশিষ্ট নেই এখন। পুর্নবাসন করা হয়নি আহত ও শহীদ পরিবারকে। স্থানীয়রা জানায়, ৬৯’ এর ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে সে সময় সেনবাগও গণআন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি নোয়াখালীর সন্তান সার্জেন্ট জহুরুল হক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহাকে হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে সেনবাগের মানুষ। ১৯শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। কালো পতাকা উত্তোলনের দাবিতে থানা ঘেরাও করে। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ঘটনাস্থলে এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান সেনবাগের অর্জুনতলা গ্রামের মফিজুর রহমান, বাবুপুর গ্রামের আবুল কালাম, জিরুয়া গ্রামের সামছুল হক ও মোহাম্মদপুর গ্রামের খুরশিদ আলম। ঐ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন আরো ১৮ জন। এদিকে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ায় ও শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে কোনো উদ্যোগ না থাকায় তাদের গৌরবদীপ্ত ভূমিকার কথা ভুলতে বসেছে তরুণ প্রজন্ম। তবে জিরুয়া গ্রামের শহীদ সামছুল হকের স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে গ্রামের বাড়ির সামনে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। ৪ শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে ও স্বীকৃতির দাবিতে কাজ করে যাওয়া সেনবাগ লেখক ফোরামের সভাপতি মুহম্মদ আবু তাহের মানবজমিনকে জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত ও অগণিত ছাত্র-যুবক আহত হবার ঘটনার কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। তাদের দাবি এ দিবসকে সেনবাগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হোক এবং ৪ জন শহীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। প্রতি বছর সেনবাগের মানুষ আশা করেন সরকারের পক্ষ থেকে শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও স্বীকৃতির উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ঘটনায় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৬৯’ এর গণ আন্দোলনে সেনবাগের ৪ শহীদ স্মরণে গত বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেনবাগ লেখক ফেরামের সভাপতি মুহম্মদ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম মজুমদার, সেনবাগ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কবির, সেনবাগ উপজেলা প্রেস ক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আমির হোসেন লিটনসহ অনেকেই।