প্রথম পাতা

ঢাকা সিটি নির্বাচন

রিটার্নিং কর্মকর্তার গেজেট প্রকাশ নিয়ে বিতর্ক

শাকিল আহমেদ

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মাঝে। নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিধি অনুয়ায়ী সিটি নির্বাচনের ফলের গেজেট কমিশন থেকে প্রকাশ করার কথা। তবে দুই সিটির ফলের গেজেটে সরাসরি দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার সরাসরি সাক্ষর ছিল। কমিশনের নির্দেশ ক্রমে তাদের সাক্ষর থাকলেও এ বিতর্ক হতো না বলে মনে করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। যদিও নির্বাচন কমিশন বলছে কমিশনের পক্ষ থেকেই এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনেই কাজ করছেন।
বিধি ভেঙে গেজেট প্রকাশ হয়েছে এমনটি উল্লেখ করে তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন করেছেন ঢাকা উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছিলেন তিনি। আবেদনপত্রে তাবিথ আওয়াল উল্লেখ করেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৩৬ ধারা এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৪৩ বিধি অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীর নাম “নির্বাচন কমিশন” কর্তৃক বা ‘নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে’ গেজেট প্রকাশ করারই বিধান রয়েছে। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথাকথিত নির্বাচিত ঘোষিত প্রার্থীদের তালিকা ‘নির্বাচন কমিশন’ প্রকাশ না করে বা নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে প্রকাশিত না হয়ে ২রা ফেব্রুয়ারি রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক তার নামেই প্রকাশিত হয়েছে,যা আইন সম্মত নয়।
এদিকে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৩৬ ধারায় বলা হয়েছে,  মেয়র এবং কাউন্সিলর হিসাবে নির্বাচিত সকল ব্যক্তির নাম নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন, যথাশিগগির সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে’ এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৪৩ বিধি বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার বিধি ২১ এর অধীন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এবং বিধি ৪২ এর অধীন এবং নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর, নির্বাচিত বলিয়া ঘোষিত সকল প্রার্থীর নাম ও ঠিকানা সম্বলিত একটি তালিকা ফরম ‘ড’ তে প্রস্তুত করিবেন এবং উক্ত তালিকা কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং নির্বাচিত প্রার্থীর নাম সম্বলিত উক্ত তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে’। কিন্তু দুই সিটি করপোরেশনের প্রকাশিত গেজেটের ‘ড’ ফরম এর নিচে উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম ও দক্ষিণের আব্দুল বাতেনের নাম উল্লেখ রয়েছে।  একজন রিটানির্ং কর্মকর্তা তার নামে গেজেট প্রকাশ করতে পারে কিনা জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন মানবজমিনকে বলেন, গেজেট প্রকাশ করবে কমিশন। এটা কমিশনের তরফ থেকে করা হয়। রিটানির্ং কর্মকর্তা তার নামে গেজেট প্রকাশ করতে পারেন না। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, রিটানির্ং কর্মকর্তা তার নামে গেজেট প্রকাশ করতে পারেন। যেহেতু তারা কমিশনের কর্মকর্তা এ কারণে তারা এটা করতে পারেন। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, কমিশনের অনুমোদন থাকলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাক্ষরে খসড়া গেজেট প্রকাশ হতে পারে। তবে মূল গেজেটটি নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমেই হতে হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. শাহাদত হোসেন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফরম ‘ড’ যেটা, সেটাই গেজেটে চলে যায়। সেখানে রিটানির্ং কর্মকর্তার নাম থাকে। কিন্তু এগুলো প্রতিটি কমিশনের কাছ থেকে ফাইলে অনুমোদন নিয়ে প্রকাশ করতে হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে সব স্টাস্পগুলো পাঠায় তার উপর ভিত্তি করে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে সেখানে কমিশনের আদেশ বা নির্দেশক্রমে সচিবের নাম উল্লেখ থাকে।  সিটি নির্বাচনের ফলের যে গেজেট হয়েছে এখানে আইনগত কোন সমস্যা নেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status