বাংলারজমিন
যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
দুই লাখ টাকা যৌতুন না দেয়ায় স্বামী, শাশুড়ি ও দুই মামা শ্বশুর গৃহবধূ মুন্নি আক্তারের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে ঘরে আটক করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামীসহ তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলো, স্বামী সাঈম আহমেদ (২৬), শ্বাশুড়ি জাহানারা বেগম (৪৫), মামা শ্বশুর আতাবুর রহমান (৪২) ও হাবিবুর রহমান (৩৮)। পুলিশ রোববার দিবাগত মধ্য রাতে আতাবুর রহমানকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গৃহবধূ মুন্নির বরাত দিয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এখলাছ উদ্দিন জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের সালেহ আহমেদ এর ছেলে সাঈম আহমেদের সাথে ইসলামী শরিয়াহ মতে একই উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে মোয়াজ্জেম নামে আড়াই বছরের একজন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে গৃহবধূ নয়নপুর এলাকার অটো স্পিনিং মিলে চাকরি শ্রমিকের চাকরি নেয়। তার বেতনের সম্পূর্ণ টাকা স্বামীর হাতে তুলে দেয়। ছেলে মোয়াজ্জেম জন্ম হওয়ার মাসখানেক পর থেকে স্বামী সাঈম পরিবারের লোকজনের কু-পরামর্শে ও প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। গৃহবধূ বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে অপারগতা জানালে স্বামী, শ্বাশুড়ি ও দুই মামা শ্বশুর প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। গৃহবধূর দরিদ্র বাবা মজিবুর রহমান যৌতুকের টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য না থাকায় সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী ও তার পারিবারের সদস্যদের আমনুষিক নির্যাতন সহ্য করেও সংসার করতে থাকেন। গত ৯ই ফেব্রুয়ারি স্বামী আবারো বাবার বাড়ি থেকে সেই দুই লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য তাকে চাপ দেয়। গৃহবধূ বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে পারবেনা বলে স্বামীকে জানায়। পরে স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন তাকে মারধোর করে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ঘরে আটকে রাখে। পরে ১২ই ফেব্রুয়ারি বুধবার স্বামী বাড়িতে না থাকায় কৌশলে ছেলে মোয়াজ্জেমকে নিয়ে ওই গৃহবধূ শিমুলতলা গ্রামের বাবার বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে গিয়ে বাবাকে ঘটনা খুলে বলার পর মেয়ে ও একমাত্র নাতির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এখলাছ উদ্দিন আরো বলেন, মামলা হওয়ার পর ওইদিন রাতেই একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।