এক্সক্লুসিভ

করোনা ভাইরাসে

নতুন চিকিৎসা ১২ ঘণ্টায় সফলতা!

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৭:০৫ পূর্বাহ্ন

রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করে করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে চীন। এ পদ্ধতিতে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়ে গেছেন এমন ব্যক্তির দেহ থেকে রক্তের প্লাজমা সংগ্রহ করে নতুন আক্রান্তদের দেহে সেই প্লাজমা ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে অভূতপূর্ব ফল পাওয়া গেছে। মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এতে সাফল্য আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে একটি অত্যন্ত বৈধ উপায় বলে আখ্যায়িত করেছে। মালয়েশিয়ার অনলাইন দ্য স্টার এ খবর দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ বলেছেন, প্লাজমা ব্যবহার করে এই চিকিৎসার পরীক্ষা খুবই কার্যকর পদ্ধতি। সময়মতো রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সর্বোচ্চে পৌঁছে দেয়া এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হয়, করোনা ভাইরাসের মহামারি শুরু হয়েছে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের সামুদ্রিক বাজার থেকে।

এতে মারা গেছেন প্রায় ১৮০০ মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজারেরও বেশি। চীনের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র সাংহাইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩২ জন। এখানে সম্প্রতি একজন মারা গেছেন। সাংহাই পাবলিক হেলথ ক্লিনিক্যাল সেন্টারের প্রফেসর ও সহ-পরিচালক লু হং ঝৌ বলেছেন, ১৮৪ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা সিরিয়াস ও আশঙ্কাজনক। তিনিই বলেছেন, তার হাসপাতাল প্লাজমা থেরাপি ব্যবহারের জন্য একটি বিশেষায়িত ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। যারা রক্ত দিতে চান তাদের তালিকাভুক্ত করে নির্বাচিত করা হয়। দাতা রক্ত দিতে রাজি হলেই তাকে প্রথমে চেক করা হচ্ছে তিনি হেপাটাইটিস বি বা সি-এর মতো কোনো রোগে আক্রান্ত কিনা। রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করে চিকিৎসাকে তিনি অত্যন্ত কার্যকর বলে দাবি করেছেন।

এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা করার জন্য লাইসেন্স পায়নি কোনো ওষুধ। আসেনি কোনো টিকা। এক্ষেত্রে ওষুধ তৈরি ও তার পরীক্ষা চালাতে কয়েক মাস এমন কি বছরও লাগতে পারে। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচির প্রধান ড. মাইক রিয়ান বলেছেন, র‌্যাবিস এবং ডিপথেরিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে প্লাজমা পদ্ধতি প্রমাণিত হয়েছে কার্যকর ও জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা হিসেবে। তিনি আরো বলেন, হাইপার ইমিউন গ্লোবিউলিন যা করে তাহলো, আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ একজন ব্যক্তির দেহে এন্টিবডি ঘনীভূত করে। নতুন করে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করতে দেয়া হয় এন্টিবডি। এটা দেয়া হলে কঠিন অবস্থা থেকে তারা বেঁচে উঠতে পারেন। তবে তা দিতে হবে উপযুক্ত সময়ে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো স্বীকৃত চিকিৎসা নেই এখনো। চিকিৎসকরা এর সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ দেখে তার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু চীনের ডাক্তারা এ চিকিৎসায় ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন। তারা সুস্থ মানুষের দেহের রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিচ্ছেন। এর শুরুতেই রক্তের প্লাজমা দিয়েছেন ২০ জন ডাক্তার ও নার্স। তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে এ কাজ করেছেন। চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্লাজমা পদ্ধতিতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। এ পদ্ধতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে খবরে বলা হয়েছে। প্রথমে রক্তের প্লাজমা নেয়া হয় গত ১লা ফেব্রুয়ারিতে। ৯ই ফেব্রুয়ারি তা দেয়া হয় এক রোগীর দেহে। উহানের জিয়াংসির একটি হাসপাতালে ওই রোগীকে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। ফলে আরো ১০ জন রোগীকে একই চিকিৎসা দেয়া হয়। তারা মারাত্মক অবস্থা থেকে এখন অনেক সুস্থ হয়েছেন। চীনের ন্যাশন্যাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এই পদ্ধতিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে প্লাজমা দেয়ার ফলে কিছুটা দুর্বল হয়ে যান রক্তদাতা। যদিও এতে ভয়ের কিছু নেই। উহানের পেকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাজমা দাতা স্বাভাবিক হয়ে যান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status