বাংলারজমিন

ঘাটাইল হাসপাতালের এম্বুলেন্স বিকল, ভোগান্তিতে রোগীরা

আতিকুর রহমান, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

ঘাটাইল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক মাত্র এম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে পড়ে আছে প্রায়  তিন বছর। এতে সীমাহীন দর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী রোগীরা। একমাত্র এম্বুলেন্সটি বিকল হওয়ার কারণে এর প্রভাব পড়েছে ৫ লাখ লোকের গোটা উপজেলায়। ওপর মহলে চেষ্টা তদবির করেও কোন লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে জরুরী রোগীদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সরা। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, জরুরী রোগীরা হাসপাতালের বেডে পড়ে মরে গেলেও এটি দেখার কেউ নেই। চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধির জন্য ২০১২ সালে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এ হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত অ্যাম্বুলেন্সটি তিন বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। পরে পাশের উপজেলা বাসাইল থেকে ধারে আনা হয় একটি পুরোনো অ্যাম্বুলেন্স। কিছুদিন আগে সেটিও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে গ্যারেজে। ফলে অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী নিয়ে ২০১৭ সালে ২০শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। মধুপুর উপজেলার কাকরাইদ নামক স্থানে পৌঁছালে ওভারটেক করার সময়  একটি ট্যাঙ্ক ওপরে তুলে দেয় বলে জানান চালক মজিবর রহমান। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। সেই থেকে সেটি খোলা আকাশের নিচে বিকল হয়ে পড়ে আছে। পরে ২০১৮ সালের ২৫শে নভেম্বর টাঙ্গাইল সিভিল সার্জনের মাধ্যমে বাসাইল উপজেলা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ধারে করে আনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেটিও ২০১৮ সালের ২২শে ডিসেম্বর বিকল হয়ে যায়, যা মেরামত করতে অনেক খরচ হবে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। ঘাটাইল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মজিবর রহমান জানান, ঘাটাইল থেকে রোগী নিয়ে ঢাকায় যেতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে টাকা লাগে দুই হাজার ৯০০। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেখানে নেয় ছয় হাজার টাকা। ময়মনসিংহ যেতে যেখানে লাগে এক হাজার ৬০০ টাকা, সেখানে তারা নেয় তিন হাজার টাকা। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে গরিব রোগীদের জন্য এত টাকা দেওয়া কষ্টকর। ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন রহিজ উদ্দিন জানান, আগে সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিয়ে ময়মনসিংহ গিয়েছি এক হাজার ৬০০ টাকা ভাড়া দিয়ে। এখন বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিলে ভাড়া দিতে হয় তিন হাজার টাকায়। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকায় বাইরের অ্যাম্বুলেন্স নিতে হচ্ছে।
কি আর করার, রোগীও আমার, টাকাও যাচ্ছে আমার। বিচার করবে কে। যার ব্যথা সেই জানে কি কষ্ট হয়। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুর রহমান খান বলেন, অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। তাদের বাইরে থেকে মোটা অঙ্কের টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে। গত বছর অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা দেওয়া হলেও এখনো আমরা পাইনি। তবে শিগগিরই কর্তৃপক্ষ সাধারণ গরিব মানুষের কথা বিবেচনা করে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করি।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status