ষোলো আনা

মাঠে যাওয়ার এই তো সময়

শাওন শেখ শুভ, খুবি প্রতিনিধি

৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

তখনও সূর্যের আলো এসে পড়েনি মাঠে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পুরো মাঠ। কিন্তু তারুণ্যের ছুটে চলা শুরু। মাঠের মধ্যে চলছে ব্যায়াম। চলছে এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ছুটে চলা। কারো হাতে ভলিবল, কারো হাতে ব্যাট, বল। লক্ষ্য একটাই খেলাধুলার প্রতিটি ইভেন্টে নিজ ডিসিপ্লিনের জয়। বলছি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।

একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয় ১লা জানুয়ারি। কিন্তু বছরের প্রথমদিন থেকে এখানে শুধু পড়াশোনাই নয়, একই সঙ্গে শুরু হয় খেলাধুলার উৎসব। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে এবং শেষ হওয়ার পরে খেলোয়াড়েরা তো বটেই, অন্য শিক্ষার্থীরাও চলে আসেন মাঠে। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে অনুশীলন আর আড্ডা। যেন এটাই তাদের প্রতিদিনের রুটিন। সবার যে মাঠে হাজির হতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু বিকালবেলা মাঠে হাজির হয়ে সবাই উৎসবের অংশ হতে চায়।

খুবিতে খেলাধুলা নিয়ে সবার মধ্যে একটা বাড়তি আগ্রহ আছে। সহপাঠী আর সিনিয়রদের সঙ্গে পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এই খেলার মাঠেই। স্কুল-কলেজে যারা খেলাধুলা করতেন, তারা প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর একটা সুযোগ পেয়ে যান। আবার যারা আগে খেলাধুলা করেননি, তাদের অনেকে অনুশীলন করে হয়ে যান দলের অপরিহার্য অংশ।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্রী লোপা ফেরদৌসী বলেন, নিজে কোনো খেলায় অংশগ্রহণ না করলেও প্রতিদিনই মাঠে আসছি, খেলোয়াড়দের সাহায্য করছি, পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গেও সময়টা ভালো কাটাচ্ছি এবং মাঠ থেকেই সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠছে।

খুবিতে বছর শুরু হয় ভলিবল, ব্যাটমিন্টন প্রতিযোগিতা দিয়ে। আন্তঃডিসিপ্লিন ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় ছেলেদের খেলায় ইএস ডিসিপ্লিন এবং মেয়েদের খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলা ডিসিপ্লিন। আন্তঃডিসিপ্লিন ভলিবল প্রতিযোগিতার প্রথম পর্ব ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

সব শেষে সবাই মেতে ওঠেন ক্রিকেট নিয়ে। কেন্দ্রীয় মাঠের পাশ দিয়ে হাঁটলেই দেখা যায় প্রশিক্ষণ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঠে হাঁটাই তখন মুশকিল, এই বুঝি বল এসে লাগলো। ক্রিকেটপ্রিয় জাতি হিসেবে ক্রিকেটের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ একটু বেশিই। তবে সব ছাপিয়ে ক্রিকেটে আকর্ষণের কেন্দ্র থাকে প্রতিপক্ষ দর্শকদের স্লেজিং।

নিজের ডিসিপ্লিনকে জেতানোর জন্য প্রত্যেক খেলোয়াড় প্রাণপণ চেষ্টা করেন, মাঠে ঘাম ঝরান। তবে মাঠের বাইরের দর্শকরাও কম যান না। মাঠের বাইরে হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে চিৎকার করে করে ক্লান্ত হয় দর্শক-শিক্ষার্থীর দল। স্লোগান দিতে দিতে কারও কারও গলা ভেঙে গেলেও ড্রামস আর ভুভুজেলার শব্দ থামে না।

সার্বিক বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেমিস্টারের প্রথম তিন মাস অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর বিভিন্ন খেলাধুলা চলে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই খেলাধুলায় সব রকম সহোযোগিতা করে। আর শুরুর দিকে পড়ার চাপ কম থাকে। তাই এই সময়টাতেই আমরা খেলাধুলার আয়োজন করি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status