শেষের পাতা

দিল্লিতে ৩০-৩১শে জানুয়ারি বৈঠক

দু’বছর পর আলোচনার টেবিলে বিবিআইএন

মিজানুর রহমান

২৩ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:১৭ পূর্বাহ্ন

প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর চতুর্দেশীয় যোগাযোগ উদ্যোগ বিবিআইএন নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে চলতি মাসে। ভুটানকে ছাড়াই ওই আলোচনার সময়ক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। ৩০ ও ৩১শে জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের আওতায় অনুষ্ঠেয় সেই আলোচনায় বাংলাদেশ অংশ নিতে আগ্রহী। আলোচনায় ঢাকার অবস্থান কী হবে- তা ঠিক করতে গতকাল সেগুনবাগিচায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। দিল্লির বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে যাওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কতৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ঢাকার প্রস্তুতির বিস্তারিত আলোচনা হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, দিল্লির জেডব্লিউজি’র বৈঠকের উদ্দেশ্য হচ্ছে- ২০১৫ সালের ১৫ই জুন ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে সই হওয়া বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় প্যাসেঞ্জার ভেহিক্যাল প্রটোকল এবং কার্গো ভেহিক্যাল প্রটোকল চূড়ান্তকরণ। কিন্তু ওই চতুর্দেশীয় উদ্যোগ থেকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় ভুটান। বাংলাদেশ ভারত ও নেপালের সংসদ ওই চুক্তির অনুমোদন দিলেও ভুটানের উচ্চকক্ষ তা আটকে দেয়। ফলে ভুটান বিবিআইএন-এ অংশগ্রহণ স্থগিত করে। এবং এটা আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাসহ অন্যদের জানিয়েও দেয়। পরবর্তীতে ভুটানকে ছাড়াই বিবিআইএন এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল ত্রিদেশীয় বাস সার্ভিসের ট্রায়েল রান হয় ২০১৮ সালের এপ্রিলে। কিন্তু সেখানে বিপত্তি দেখা দেয়। নেপাল তখন ত্রিদেশীয় উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে অনাগ্রহ দেখায়।

কাঠমাণ্ডুর ওই অনাগ্রহের কারণে থমকে থাকায় তিন-জাতির ওই উদ্যোগও। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ভুটান এখনও তার আগের অবস্থান অর্থাৎ নিজেদের সরিয়ে রাখলেও নেপালের অবস্থান পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। আসন্ন দিল্লির জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে নেপালের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন এবং বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল প্রটোকল চূড়ান্তকরণে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রটোকল চূড়ান্ত হলে ঢাকা থেকে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়ি যেমন ভারত যাবে, আবার ভারত হয়ে নেপালও যেতে পারবে। তিনটি দেশই পরস্পরের সড়কপথ ব্যবহার করতে পারবে। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে পরীক্ষামূলক চালান হিসেবে কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় গেছে ডিএইচএল এক্সপ্রেসের একটি চালান। কয়েক মাস পর তৈরি পোশাকবাহী দুটি ট্রাক ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লি গেছে। এ সবই ছিল ট্রায়াল রান।

বিবিআইএন না এগোলে ঢাকা-দিল্লি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হবে: এদিকে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যে মোটরযান চলাচলের উদ্যোগ প্রত্যাশিত গতিতে না এগোলে বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয়ভাবে এ চুক্তি সইয়ের চিন্তা করছে। অর্থাৎ বিবিআইএন নিয়ে নেপাল ও ভূটানের অবস্থান পরিবর্তন না হলে অর্থাৎ ভুটানের পথ ধরে নেপালও বিবিআইন চুক্তি বাস্তবায়নে আগ্রহী না হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি হবে। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি মোটরযান চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে। গত বছরের সমাপনীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে এ নিয়ে  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দুই নেতা চুক্তি সইয়ের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতও হয়েছে। শীর্ষ বৈঠকে এমন আলোচনা এবং সম্মতিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন কর্মকর্তারা। তবে পুরো বিষয়টি পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status