‘বিষয়টি এখন অনেকের মধ্যেই নেই’

বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে যে সকল শিল্পী পরিচিতি অর্জন করেন তাদের মধ্যে তানভীন সুইটিও একজন। এ কারণে এখনো বিটিভির নাটকের প্রতি রয়েছে তার বিশেষ আগ্রহ। বিটিভি থেকে কোনো কাজের প্রস্তাব পেলে সেটি মন দিয়েই করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বিটিভির বুদ্ধিজীবী দিবসের জন্য ‘মেঘ ভাঙ্গা রোদ’ শিরোনামের একটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এটি লিখেছেন বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক। সুইটি বলেন, এখন আগের মতো অভিনয়ে আমি নেই। কিন্তু বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রতি অন্যরকম একটা ভালোবাসা আছে। এখান থেকে আমার টিভি নাটকের যাত্রা শুরু। তাই অন্য সব ব্যস্ততার মধ্যেও বিটিভির বিশেষ নাটকগুলোতে কাজ করার চেষ্টা করি। এদিকে বিটিভিতে প্রচার হচ্ছে সুইটি অভিনীত ‘কালের যাত্রা’ শিরোনামের একটি ধারাবাহিক নাটক। মামুনুর রশীদের উপন্যাস অবলম্বনে সবুজ ওয়ালিদের চিত্রনাট্যে নাটকটি নির্মাণ করছেন আকরাম খান। এতে তার বিপরীতে আছেন চঞ্চল চৌধুরী। এটি পুরোপুরি একটি ফ্যামিলি ড্রামা বলে জানান সুইটি। তার ভাষ্য, এই সময়ে পারিবারিক গল্পের নাটক তেমন পাওয়া যায় না। নির্মাতাদের পারিবারিক নাটকে আগ্রহ কম। অনেক দিন পর এমন একটি ভালো গল্প পেয়ে কাজ করছি। বিটিভিতে কাজের আগে রিহার্সেল থেকে শুরু করে সব কিছুতে স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়া যায়। ১৯৯৫ সালে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর বিপরীতে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ শিরোনামের একটি নাটকে জুটি বেঁধে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন এ অভিনেত্রী। প্রথম নাটকেই সবার নজর কাড়েন তিনি। এরইমধ্যে পার করেছেন ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময়। এ প্রসঙ্গে সুইটির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের শুরুর দিকে সব সময় কাজের আগে সবার মধ্যে আলোচনা হতো। চরিত্র অনুযায়ী কে কি ভাবে অভিনয় করবো তা নিয়ে কথা হতো। এ বিষয়টি এখন অনেকের মধ্যেই নেই। চরিত্র কিংবা পুরো নাটকের গল্প নিয়ে আলোচনা করার সুযোগও  হয় না। যে যার মতো নিজের চরিত্রটির শুটিং শেষ করে চলে যাচ্ছে। সবার মধ্যে যখন একটা সুন্দর সম্পর্ক থাকে তখন যেকোনো কাজ সুন্দর হয় বলে আমি মনে করি। অভিনয়ের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছেন সুইটি। টিভি নাটকের বাইরে মঞ্চেও নিয়মিত কাজ করছেন। মঞ্চ নিয়ে তিনি বলেন, মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করছি। এ থেকে দূরে থাকতে পারি না। মঞ্চনাটকে প্রত্যেক শিল্পীর একটা স্বাতন্ত্র্যবোধ থাকে। নিজের সত্তাকে এখানে খুঁজে পাওয়া যায়। ছোট পর্দার বাইরে এই অভিনেত্রীকে একটি চলচ্চিত্রে দেখা গেছে। আবু সাঈদের ‘বাঁশি’ চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন। পরবর্তীতে আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় না করার কারণ কি? এই বিষয়ে তিনি বলেন, ছোট পর্দার কাজ নিয়ে সেই সময় ব্যস্ত ছিলাম আমি। এছাড়া আমার মনের মতো চলচ্চিত্রের গল্প ও চরিত্র পাইনি বলেও ছবিতে কাজ করা হয়নি। আলাপনে এ অভিনেত্রী চলতি বছর নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি সব সময় ভালো চিন্তা করি। ভালো-মন্দ সব সময় থাকে। আমাদেরকে ভালোর পথে হাঁটতে হবে। চলতি বছরে আমাদের টিভি নাটকের সংগঠনগুলো বেশকিছু ভালো কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। চুক্তি করে অভিনয় শুরু করাসহ আরো কিছু নিয়মনীতি  মেনে কাজ করার জন্য সংগঠনগুলো সবার কাছে অনুরোধ করছে। আমিও চাই সবাই নিয়ম-নীতি অনুযায়ী কাজ করুক। আমাদের নাট্যাঙ্গনে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক।