দেশ বিদেশ

নিষিদ্ধ পারদযুক্ত ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম বিক্রি করছে অ্যামাজন এবং ই-বে

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন

আইনত নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও পারদযুক্ত (যা একটি ভারী বস্তু এবং বিপজ্জনক নিউরোটক্সিন) ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, এখনও বিভিন্ন দোকান ও অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। পারদ দূষণ রোধকারীর কাজে নিয়োজিত এনজিও জোটের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় এটি প্রকাশিত হয়েছে। ১২ই ডিসেম্বর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন,  ১২টি দেশের ১৫৮টি পণ্যের মধ্যে ৯৫টি ক্রিমে নির্ধারিত সীমার ১ পিপিএম এর চেয়ে বেশি এবং প্রায় ৪০ থেকে ১,৩০,০০০ পিপিএম পর্যন্ত পারদের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই সব পণ্যের দুই-তৃতীয়াংশ (৯৫টির মধ্যে ৬৫টি) অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। আর তা বিপণন করছে অ্যামাজন, ই-বে, ইরফড়ৎনুঁ, খধুধফধ, দারাজ, ফ্লিপকার্ট এবং জুপিয়া। বাংলাদেশের শীর্ষ অনলাইন শপিং সাইট ‘দারাজ’ নিষিদ্ধ ও উচ্চমাত্রার পারদযুক্ত (৯৩৪.৩৩-১,১৬,৬০০ পিপিএম পারদ) ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম বিক্রি করছে বলে তারা অভিযোগ করেন।  কিছু ক্রিমে নির্দিষ্ট সীমার কয়েক হাজার গুণ বেশি পারদের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিষ বাণিজ্য বন্ধের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সরকারকে আন্তর্জাতিক এনজিও জোট আহবান জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ১৬টি পণ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়, এতে সবগুলোতেই  বিপজ্জনক ও নিষিদ্ধ পণ্যগুলিতে উচ্চমাত্রায় পারদ উপস্থিত পাওয়া যায়। ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট ব্যুরোর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা জিরো মার্কারি ওয়ার্কিং গ্রুপের সহ-সমন্বয়কারীর বরাত দিয়ে তারা বলেন, পারদ (অবশ্যই একটি বিপজ্জনক নিউরোটক্সিন) কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। অনলাইন পণ্য বিপণনকারী যেমন: অ্যামাজন এবং ই-বে এর এইসব নিষিদ্ধ ক্রিম বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো পারদযুক্ত ক্রিম বিপণন বন্ধ করবে বলে জানিয়েছে। গত সালে শীর্ষ অনলাইন বিক্রেতারা ক্ষতিকারক পণ্যগুলো অপসারণের লক্ষ্যে পণ্য সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিভিন্ন বছরে বিভিন্ন রকম নমুনার তথ্যের উপর ভিত্তি করে জানা গেছে, একই ব্র্যান্ডের অনেকগুলো পণ্যতে উচ্চমাত্রায় পারদ আছে, যেগুলোই-কমার্সে বেচাকেনা হয়। প্যাকেজিং অনুযায়ী বেশির ভাগই তৈরি হয় এশিয়া মহাদেশে, তারমধ্যে পাকিস্তান (৬২ শতাংশ), থাইল্যান্ড (১৯ শতাংশ), এবং চীন (১৩ শতাংশ) উল্লেখযোগ্য। কসমেটিকস সহ অন্যান্য পণ্যে মার্কারী বাতিল এবং সীমাবদ্ধতার লক্ষ্যে ১১০টিরও বেশি দেশ মিনামাতা সম্মেলনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। এই সম্মেলনের সমর্থনকারী দেশগুলোর জন্য ২০১৯ সালে জেনেভায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসডো’র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এই সব বিপজ্জনক ও নিষিদ্ধ পণ্যগুলিতে উচ্চমাত্রায় পারদ উপস্থিত পাওয়া গেছে। মূলতঃ যারা এই পণ্যগুলোকে বার বার ব্যবহার করছে ও তাদের সন্তানেরা এই পারদ দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। উচ্চমাত্রার পারদযুক্ত ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম এবং এই বিষ বাণিজ্য বন্ধের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। অনুষ্ঠানে এসডোর চেয়ারপার্সন ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম, এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন, বিএসটিআই’র সহকারী পরিচালক আবু সাঈদ, এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status