শেষের পাতা

কুষ্ঠরোগীদের জন্য ওষুধ তৈরি করতে দেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার

১২ ডিসেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

দেশ থেকে ২০৩০ সালের আগেই কুষ্ঠ রোগ নির্মূল করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা প্রদানে কুষ্ঠরোগীদের জন্য ওষুধ তৈরি এবং বিনামূল্যে বিতরণ করার জন্য স্থানীয় ওষুধ কোম্পানীগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে ‘২০৩০ সালের মধ্যে শূন্য কুষ্ঠ উদ্যোগ’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন ২০১৯ উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি লোকজনকে বলতে চাই যে, তারা আমাদের সমাজেরই অংশ। তাই তাদের দূরে ঠেলে দেয়া সঠিক নয়। কোন ব্যক্তির দেহে কুষ্ঠ রোগ সনাক্ত হলে, আপনাদের সহানুভূতির সঙ্গে তার সঙ্গে আচরণ করতে হবে এবং তিনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন সে লক্ষ্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি খুবই জরুরি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ডাব্লিওএইচও গুডউইল এ্যাম্বাসেডর ইওহেই সাসাকাওয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। কুষ্ঠ রোগ ও এর চিকিৎসার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি প্রামাণ্য চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুষ্ঠ রোগের কারণে প্রতিবন্ধী লোকদের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মসংস্থানের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন,কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চাকুরি থেকে অবশ্যই বাদ দেয়া যাবে না,বরং প্রতিবন্ধী লোকের জন্য একটি অনুকুল কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন,উত্তরবঙ্গ ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা বেশি। এই রোগের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আমাদেরকে ওই এলাকাগুলোতে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এবং কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি আমরা এটা করতে পারি তবে ২০৩০ সালের মধ্যেই আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত দেশ গড়তে পারব ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে ৩৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ কুষ্ঠ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসত। তবে এই হার হ্রাস পেয়ে আট শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এটা তার সরকারের একটি অনেক বড় অর্জন বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন,এখন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তার সরকার এই হারকে শূন্যে নামিয়ে আনতে চাইছে।  তিনি বলেন, কুষ্ঠরোগের বিররুদ্ধে সামাজিক বৈষম্য দূরের মাধ্যমে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য ব্রিটিশ সরকার প্রবর্তিত পুরনো আইন পরিবর্তন করে ২০১১ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার কুষ্ঠরোগী আক্রান্ত লোক সনাক্ত হচ্ছে এবং উপজেলা সদর হাসপাতাল ও কুষ্ঠ হাসপাতালগুলোতে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কুষ্ঠরোগ নিরাময় কার্যক্রমে অংশগ্রহনকারী সকল বেসরকারী সংস্থাকে তাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং কুষ্ঠরোগী তথা কমিউনিটির সেবার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ঢাকা, সিলেট ও নীলফামারী জেলায় সরকারের তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতাল কুষ্ঠ আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সেবা সুবিধা প্রদান করছে। সর্বোপরি কুষ্ঠরোগ নিরাময়ে দাতা দেশগুলোর সহযোগিতায় অনেকগুলো এনজিও বিভিন্ন জেলায় হাসপাতাল ও অন্যান্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status