খেলা
প্রাপ্তির সঙ্গে আছে হতাশাও
সামন হোসেন, কাঠমান্ডু (নেপাল) থেকে
১১ ডিসেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৯:২২ পূর্বাহ্ন
সাউথ এশিয়ান গেমসে (এসএ) নিজেদের সাফল্যে নতুন ইতিহাস লিখেছে বাংলাদেশ। ১৯ সোনা জয়ে ছাড়িয়ে গেছে আগের সব আসরকে। কাঠমান্ডু-পোখারার আগে এসএ গেমসে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ছিল ২০১০ সালে। সেবার দেশের মাটিতে প্রাপ্তি ছিল ১৮টি সোনা। দেশের বাইরের গেমসে আগের সেরা সাফল্যকে পেরিয়ে এবার অনেকটাই এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১৯৯৫’র মাদ্র্রাজ আসরে পাওয়া ৭ সোনা ছিল আগের সেরা। পদকের সংখ্যাটাও বেড়েছে। এক আরচারিতেই দশটি সোনা জিতেছে বাংলাদেশ। কারাতের তিন, ক্রিকেট-ভারোত্তোলনে দুটি করে সোনা এসেছে। একটি সোনা জিতেছে তায়কোয়ান্দো। সোনা জিতে সবাইকে চমকে দিয়েছে আলোচনার বাইরে থাকা ফেন্সিং। তবে প্রাপ্তির মাঝে হতাশাও আছে। বিরাট বহর নিয়ে কোনো পদকের দেখা পায়নি সাইক্লিং। ভলিবল, বাস্কেটবল, টেনিসেও পদকের দেখা মেলেনি। পদক হারিয়েছে কাবাডি. ভলিবল, হ্যান্ডবল। গেমসের আকর্ষণীয় দুই ডিসিপ্লিন অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতারের পারফরমেন্স ছিল যাচ্ছেতাই। শুটিংও প্রত্যাশার ধারে কাছে যেতে পারেনি। ভারত-পাকিস্তান বিহীন আসরে ফেভারিটের তকমা নিয়ে অংশ নেয়া ফুটবল দল ব্রোঞ্জেই থেকে গেছে।
২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসের ১১তম আসরে ১৮ সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। গত আসরে প্রাপ্তি ছিল চার সোনা ১৫ রুপা ও ২৭ ব্রোঞ্জ। গত দুটি আসরকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় তৃপ্তির ঢেকুর গিলছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)-এর কর্মকর্তারা। ১৯ সোনা জয়ের পর বিওএ’র মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, আমি সত্যি খুব খুশি। প্রত্যাশা যা নিয়ে এসেছিলাম এর খুব কাছাকাছি গেছে। আমি খুব খুশি।’ ঢাকার আসরকে ছাড়িয়ে যাওয়া নিয়ে বিওএ’র এই কর্মকর্তা বলেন, ঢাকার গেমসকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিল সবার। সেই চেষ্টা থেকেই আমাদের এতো মেডেল এসেছে।’ সোনা জয়ের দিক দিয়ে ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেলেও পরিসংখ্যান কিন্তু সেটা বলছে না! ঢাকার আসরে ১৫৮টি সোনার লড়াইয়ে ১৮টিতে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ৩১৭টি ইভেন্টের মধ্যে বাংলাদেশের সোনার পদক ১৯টি। তাছাড়া ঢাকার আসরে ডিসিপ্লিন ছিল ২৩টি। কাঠমান্ডু-পোখারার আসরে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে ২৫ ডিসিপ্লিনে। সাঁতারের ৩৮ সোনা জয়ের লড়াইয়ে সাগর-জুনাইনারা অংশ নিয়েছেন ২২টি ইভেন্টে। শিলং-গৌহাটির গত আসরে সাঁতারে জোড়া সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার সাঁতারের পারফরমেন্স একেবারে হতাশাজনক। ২২ ইভেন্টে সাঁতারুদের প্রাপ্তি মাত্র তিনটি রূপা ও ছয় ব্রোঞ্জ। সাউথ এশিয়ান গেমসের শুরুর ৩৫ বছরে মাত্র একবার শুটিংয়ে স্বর্ণ বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৬ কলম্বো গেমস থেকে খালি হাতে ফিরেছিল শুটাররা। কলম্বোর পুনরাবৃত্তি ঘটলো কাঠমান্ডুতে। কাঠমান্ডুর সাদদোবাতোর শুটিং কমপ্লেক্সের রেঞ্জে শুটিংয়ে অর্জন বলতে ৬ রুপা ও সাত ব্রোঞ্জ। ২৪ সোনার লড়াইয়ে অংশ নেয়া অ্যাথলেটিক্সে প্রাপ্তি এক রৌপ্য ও এক ব্রোঞ্জ। খালি হাতে আসর শেষ করে লজ্জা দিয়েছে সাইক্লিং, টেনিস, ভলিবল, বাস্কেটবল ও স্কোয়াশ। আসর শুরু হওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে জোড়া স্বর্ণ জয়ের প্রত্যাশা জানিয়ে কাঠমান্ডু আসে সাইক্লিং দল। আট ইভেন্টে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে সাইক্লিষ্টরা। কিন্তু কোনো পদকের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ট্রেনিং এন্ড ডেভোলোপমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব একে সরকারের বাস্কেটবল নারী ও পুরুষ দুই বিভাগেই লজ্জা দিয়েছে। বিওএ-এর আরেক কর্মকর্তা আশিকুর রহমান মিকুর ভলিবলেও পদক হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেনিসে পাঁচ দেশের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে ভলিবল দল। শাহেদ রেজা বলেন, কিছু কিছু ডিসিপ্লিন খারাপ করেছে। কিন্তু এতে আমরা হতাশ হইনি। তাছাড়া যেসব ইভেন্টে রুপা গুলো পেয়েছি এর মধ্যে সোনার প্রত্যাশা ছিল। গতবারের চেয়ে ডাবল রুপা পেয়েছি। সাঁতারে কিছু ব্যর্থতা আছে। ওরা যেভাবে চেয়েছিল একইভাবে ওদের প্রত্যাশা পূরণ করেছি। তারা কোচ চেয়েছিল। তাদের কোরিয়ান কোচ দিয়েছি। ওদের পেছনে অনেক টাকা যেটা খরচ হয়েছে। ফ্রান্সে আরিফুল, থাইল্যান্ডে সাগরকে পাঠালাম। কিন্ত ওরা ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি। শুটিংয়ের ব্যাপারে বলবো- বাকীর ব্যাডলাক। শেষ শটের আগ পর্যন্ত টপে ছিল। এভাবে খারাপ করলে কিছু বলার নেই। ওদের মতো এতো ফ্যাসালিটিজ নেই কারো। কিন্তু ওদের কাছে কী পেলাম। আমরা এসব নিয়ে ঢাকা গিয়ে বসবো’। গত আসরে পুরুষ ও নারী কাবাডিতে রৌপ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার বিদেশি কোচের অধীনে বিদেশে ট্রেনিং করে পুরুষ কাবাডিতে পদক হারিয়েছে দল। চতুর্থ হয়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছে নারীরা। পুরুষ হ্যান্ডবলে পদক হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পদক
ডিসিপ্লিন স্বর্ণ রৌপ্য ব্রোঞ্জ মোট
অ্যাথলেটিক্স ০ ১ ১ ২
আরচারি ১০ ০ ১ ১১
ব্যাডমিন্টন ০ ০ ১ ১
বাস্কেটবল ০ ০ ০ ০
বক্সিং ০ ১ ৬ ৭
ক্রিকেট ২ ০ ০ ২
সাইক্লিং ০ ০ ০ ০
ফেন্সিং ১ ৩ ৭ ১১
ফুটবল ০ ০ ১ ১
গলফ ০ ৪ ০ ৪
হ্যান্ডবল ০ ০ ১ ১
জুডো ০ ০ ১১ ১১
কাবাডি ০ ০ ২ ২
কারাতে ৩ ৩ ১২ ১৮
খো-খো ০ ১ ১ ২
শুটিং ০ ৬ ৪ ১০
স্কোয়াশ ০ ০ ০ ০
সাঁতার ০ ৩ ৮ ১১
টেবিল টেনিস ০ ০ ২ ২
তায়কোয়ান্দো ১ ০ ১০ ১১
টেনিস ০ ০ ০ ০
ভলিবল ০ ০ ০ ০
ভারোত্তোলন ২ ৬ ৫ ১৩
কুস্তি ০ ২ ৭ ৯
উশু ০ ৩ ১০ ১৩
সর্বমোট ১৯ ৩৩ ৯০ ১৪২
২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসের ১১তম আসরে ১৮ সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। গত আসরে প্রাপ্তি ছিল চার সোনা ১৫ রুপা ও ২৭ ব্রোঞ্জ। গত দুটি আসরকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় তৃপ্তির ঢেকুর গিলছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)-এর কর্মকর্তারা। ১৯ সোনা জয়ের পর বিওএ’র মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, আমি সত্যি খুব খুশি। প্রত্যাশা যা নিয়ে এসেছিলাম এর খুব কাছাকাছি গেছে। আমি খুব খুশি।’ ঢাকার আসরকে ছাড়িয়ে যাওয়া নিয়ে বিওএ’র এই কর্মকর্তা বলেন, ঢাকার গেমসকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিল সবার। সেই চেষ্টা থেকেই আমাদের এতো মেডেল এসেছে।’ সোনা জয়ের দিক দিয়ে ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেলেও পরিসংখ্যান কিন্তু সেটা বলছে না! ঢাকার আসরে ১৫৮টি সোনার লড়াইয়ে ১৮টিতে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ৩১৭টি ইভেন্টের মধ্যে বাংলাদেশের সোনার পদক ১৯টি। তাছাড়া ঢাকার আসরে ডিসিপ্লিন ছিল ২৩টি। কাঠমান্ডু-পোখারার আসরে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে ২৫ ডিসিপ্লিনে। সাঁতারের ৩৮ সোনা জয়ের লড়াইয়ে সাগর-জুনাইনারা অংশ নিয়েছেন ২২টি ইভেন্টে। শিলং-গৌহাটির গত আসরে সাঁতারে জোড়া সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার সাঁতারের পারফরমেন্স একেবারে হতাশাজনক। ২২ ইভেন্টে সাঁতারুদের প্রাপ্তি মাত্র তিনটি রূপা ও ছয় ব্রোঞ্জ। সাউথ এশিয়ান গেমসের শুরুর ৩৫ বছরে মাত্র একবার শুটিংয়ে স্বর্ণ বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৬ কলম্বো গেমস থেকে খালি হাতে ফিরেছিল শুটাররা। কলম্বোর পুনরাবৃত্তি ঘটলো কাঠমান্ডুতে। কাঠমান্ডুর সাদদোবাতোর শুটিং কমপ্লেক্সের রেঞ্জে শুটিংয়ে অর্জন বলতে ৬ রুপা ও সাত ব্রোঞ্জ। ২৪ সোনার লড়াইয়ে অংশ নেয়া অ্যাথলেটিক্সে প্রাপ্তি এক রৌপ্য ও এক ব্রোঞ্জ। খালি হাতে আসর শেষ করে লজ্জা দিয়েছে সাইক্লিং, টেনিস, ভলিবল, বাস্কেটবল ও স্কোয়াশ। আসর শুরু হওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে জোড়া স্বর্ণ জয়ের প্রত্যাশা জানিয়ে কাঠমান্ডু আসে সাইক্লিং দল। আট ইভেন্টে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে সাইক্লিষ্টরা। কিন্তু কোনো পদকের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ট্রেনিং এন্ড ডেভোলোপমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব একে সরকারের বাস্কেটবল নারী ও পুরুষ দুই বিভাগেই লজ্জা দিয়েছে। বিওএ-এর আরেক কর্মকর্তা আশিকুর রহমান মিকুর ভলিবলেও পদক হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেনিসে পাঁচ দেশের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে ভলিবল দল। শাহেদ রেজা বলেন, কিছু কিছু ডিসিপ্লিন খারাপ করেছে। কিন্তু এতে আমরা হতাশ হইনি। তাছাড়া যেসব ইভেন্টে রুপা গুলো পেয়েছি এর মধ্যে সোনার প্রত্যাশা ছিল। গতবারের চেয়ে ডাবল রুপা পেয়েছি। সাঁতারে কিছু ব্যর্থতা আছে। ওরা যেভাবে চেয়েছিল একইভাবে ওদের প্রত্যাশা পূরণ করেছি। তারা কোচ চেয়েছিল। তাদের কোরিয়ান কোচ দিয়েছি। ওদের পেছনে অনেক টাকা যেটা খরচ হয়েছে। ফ্রান্সে আরিফুল, থাইল্যান্ডে সাগরকে পাঠালাম। কিন্ত ওরা ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি। শুটিংয়ের ব্যাপারে বলবো- বাকীর ব্যাডলাক। শেষ শটের আগ পর্যন্ত টপে ছিল। এভাবে খারাপ করলে কিছু বলার নেই। ওদের মতো এতো ফ্যাসালিটিজ নেই কারো। কিন্তু ওদের কাছে কী পেলাম। আমরা এসব নিয়ে ঢাকা গিয়ে বসবো’। গত আসরে পুরুষ ও নারী কাবাডিতে রৌপ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার বিদেশি কোচের অধীনে বিদেশে ট্রেনিং করে পুরুষ কাবাডিতে পদক হারিয়েছে দল। চতুর্থ হয়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছে নারীরা। পুরুষ হ্যান্ডবলে পদক হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পদক
ডিসিপ্লিন স্বর্ণ রৌপ্য ব্রোঞ্জ মোট
অ্যাথলেটিক্স ০ ১ ১ ২
আরচারি ১০ ০ ১ ১১
ব্যাডমিন্টন ০ ০ ১ ১
বাস্কেটবল ০ ০ ০ ০
বক্সিং ০ ১ ৬ ৭
ক্রিকেট ২ ০ ০ ২
সাইক্লিং ০ ০ ০ ০
ফেন্সিং ১ ৩ ৭ ১১
ফুটবল ০ ০ ১ ১
গলফ ০ ৪ ০ ৪
হ্যান্ডবল ০ ০ ১ ১
জুডো ০ ০ ১১ ১১
কাবাডি ০ ০ ২ ২
কারাতে ৩ ৩ ১২ ১৮
খো-খো ০ ১ ১ ২
শুটিং ০ ৬ ৪ ১০
স্কোয়াশ ০ ০ ০ ০
সাঁতার ০ ৩ ৮ ১১
টেবিল টেনিস ০ ০ ২ ২
তায়কোয়ান্দো ১ ০ ১০ ১১
টেনিস ০ ০ ০ ০
ভলিবল ০ ০ ০ ০
ভারোত্তোলন ২ ৬ ৫ ১৩
কুস্তি ০ ২ ৭ ৯
উশু ০ ৩ ১০ ১৩
সর্বমোট ১৯ ৩৩ ৯০ ১৪২