অনলাইন

‘ইলিয়াস কাঞ্চনের ‘অবৈধ সম্পদের’ প্রমাণ দিতে শাজাহান খানকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলো নিসচা

স্টাফ রিপোর্টার

৯ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১১:২২ পূর্বাহ্ন

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে শাজাহান খানের মিথ্যাচারে বিস্ময় প্রকাশ করেছে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলছে, ইলিয়াস কাঞ্চন সম্পর্কে শাজাহান খান জঘন্যতম একটি মিথ্যাচার করেছেন। শাজাহান খানের বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ দিতে আগামী ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে নিসচা। অন্যথায় আইনী ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা।

নিসচা’র যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ স্বাক্ষরিত গতরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

এর আগে গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের ১৩ নম্বর সেক্টর এলাকায় ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন আয়োজিত ডাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারের (ডিটিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাজাহান খান বলেছিলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন কোথা থেকে কত টাকা পান, কি উদ্দেশ্যে পান, সেখান থেকে কত টাকা নিজে নেন, পুত্রের নামে নেন, পুত্রবধূর নামে নেন সেই হিসেবটা আমি জনসম্মুখে তুলে ধরবো।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিসচা বলছে, আমরা ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দিচ্ছি তাকে (শাজাহান খান)। এই সময়ের মধ্যে তার দেয়া এই তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। নতুবা আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।

আমরা মনে করি, সমাজের একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, জাতীয় পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সম্মানিত মানুষের বিরুদ্ধে শাজাহান খানের এমন মিথ্যাচার শুধুমাত্র নিজের দুর্বলতা ঢাকার জন্যই বলছেন। তিনি এই মানহানীকর কথা বলেছেন জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য।

একটি কথা না বললেই নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুগোপযোগী সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে নির্দেশ দিলেন, তখন কি করে শাজাহান খান সরকারে থেকে এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন- সেই প্রশ্ন জাতির কাছে রাখছি।

এতে বলা হয়- আমরা মনে করি, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কে বাধাগ্রস্ত করতে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে শাজাহান অবান্তর এসব প্রশ্নের অবতারণা করছেন। আমরা বিশ্বাস করি এদেশের মানুষ এসবের যোগ্য জবাব  দেবে।

সেইসঙ্গে উল্টো প্রশ্ন রাখছি পরিবহন সেক্টরে বছরে বিভিন্ন খাতের নামে যে টাকা উত্তোলন (চাঁদা আদায়) করা হয় সেই টাকার কত অংশ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে, ক’টা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের দক্ষ করার জন্য, ক’টি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য, ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য, ক’টি আবাসন পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে শ্রমিকদের আবাসনের জন্য, তাদের জীবনমান উন্নয়নে এই টাকার কত অংশ ব্যয় করা হয়?

তিনি (শাজাহান খান) প্রশ্ন করেছেন, নিরাপদ সড়ক চাই কতজন দক্ষ চালক তৈরি করেছে? এই প্রশ্নে জাতিকে জানাচ্ছি, আমাদের সীমিত ক্ষমতায় চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, বিনা ফি’তে দারিদ্র এসএসসি পাস বেকার শ্রেণিকে চালক প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইসেন্স পাইয়ে কর্মক্ষম করার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আমরা মনে করি আমরা পথ দেখাতে পারি এবং সেই পথেই আছি।

অতীতেও এই শাজাহান খান দেশে নানান ঘটনার জন্মদিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছর বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার সংবাদ শোনার পরও তৎকালীন এই নৌমন্ত্রীর মুখের হাসি দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। তিনি দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে নিছক ঘটনা ভেবে হেলাফেলায় গুরুত্বহীন বক্তব্য দিতে গিয়ে দেশবাসীর মর্মমূলে আঘাত করেছেন। তার এই হীন কর্মকা-ের কারণেই আজ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বার বার বাধার সৃষ্টি হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। শাজাহান খান কি কারণে, কি উদ্দেশ্যে বারবার এমন লাগামহীন বক্তব্য দিয়ে সমাজে একটি বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করেন তা আমাদের কারোর-ই বোধগম্য নয়।

পূর্বেও এই শাজাহান খান শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের কুশপুত্তলিকায় আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন।  এরপর গোটা দেশ প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়লে শাজাহান খান ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। সেইসঙ্গে বলছি এবারও রাস্তায় ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবি পোড়ানো ও অসম্মান করাকে দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমাদের আস্থার জায়গা এই দেশবাসী।

পরিশেষে আবারও আমরা তার (শাজাহান খান) দেয়া আজকের বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ দেশবাসীকে দেখানোর আহবান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, তিনি কেন এমন মিথ্যাচার করলেন তার জবাব দেশবাসীর সামনে তাকেই দিতে হবে এবং এমন কাজের জন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে এই মিথ্যা ও জঘন্যতম বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে নিসচা কর্মী ও ভক্তসমাজ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status