খেলা

এসএ গেমসে আবারো ব্যর্থ শুটার বাকী

স্পোর্টস রিপোর্টার, কাঠমান্ডু (নেপাল) থেকে

৬ ডিসেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

আবদুল্লাহ হেল বাকীর আক্ষেপের নাম এসএ গেমস। এবারও দক্ষিণ ‘এশিয়ার অলিম্পিক’ খ্যাত এ গেমসে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন কমনওয়েলথ গেমসে জোড়া রৌপ্য জয়ী এই শুটার। গতকাল সাদদোপাতোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও শুটিং রেঞ্জে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ফাইনালে শেষ দুই শুটে প্রত্যাশা অনুযায়ী স্কোর করতে না পারায় ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এই ইভেন্টে ২৪৯.২ স্কোর করে স্বর্ণ জেতেন ভারতের পংকজ কুমার। রবিউল হোসেন এবং রাব্বি হাসানকে নিয়ে দলগত ইভেন্টেও ব্রোঞ্জ পান বাকী।
কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডের পর রুমে গিয়ে শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকীকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করার জন্য  চেষ্টা করেন সাবেক তারকা সাইফুল আলম রিংকি। ফাইনালে যেন চাপে ভেঙে না পড়েন, বারবার বাকীকে সাহস যোগাচ্ছিলেন এসএ গেমসে চার বারের স্বর্ণ জয়ী এই শুটার। সাউথ এশিয়ান গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ব্যক্তিগত ইভেন্টে কখনোই পদক জিততে না পারা বাকী ফাইনালের শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন। তৃতীয় শুটে পিছিয়ে পড়লেও পরের শুটে আবারও এক নম্বরে উঠে যান। গ্যালারিতে বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা। আর দুটি শুট ঠিকমতো মারলেই এবারের আসরে পঞ্চম সোনার পদক আসবে। একই সঙ্গে বাকীর হবে স্বপ্নপূরণ। কিন্তু পূরনো সেই রোগটি আবারও পেয়ে বসে এ শুটারকে। তাতেই ভেঙে যায় স্বপ্ন। ২২৮ স্কোর করে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি। ২০১০ এসএ গেমসে দলগত ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিলেন। এবার ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্নের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন বাকী। মাত্র ০.১ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকায় স্বর্ণের লড়াই থেকে ছিটকে পড়েন। প্রত্যাশার চাপ নাকি অন্য কিছু। বারবার কেন এমন হচ্ছে। উত্তর জানা নেই দেশসেরা এ শুটারের। বাকী বলেন, ‘নার্ভাসনেস। যেটা ফাইনালে সবসময় সবারই থাকে। আমারও এটা ছিল। আমিও নিজে নিজে এটা কাটানোর চেষ্টা করেছিলাম। নিজেকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় পুরো প্রতিযোগিতায় আমি এই চেষ্টা করেছিলাম। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি। শেষ দুটি শুট ১০.০ এবং ১০.১ মেরেছি; এটা খারাপ নয়। তবে গোল্ড জেতার জন্য যথেষ্ট নয়।’ তাহলে এসএ গেমসে ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ জিততে না পারাটা বাকীর জন্য আক্ষেপ হয়েই রইলো। বাকীও এটা মানছেন, ‘অবশ্যই স্বর্ণ না পাওয়ায় একটা আক্ষেপ তো আছেই। কারণ আমি ওই পজিশনেই ছিলাম। শেষ চার-পাঁচটি শটে আমি ওপরে ছিলাম। তারপরে চাপ ধরে রাখার ব্যাপারটি আমি পারিনি। আমার মনে হয়, এটা নিয়ে আমাকে কাজ করতে হবে। আমি দুর্ভাগা। আপনি দেখেন লিডে থেকে স্বর্ণ জিততে পারলাম না।’
প্রথম দিনে দুর্দান্ত শুরু। শেষ দিকে খেই হারিয়ে ফেলা। বাকীর মনযোগ চলে গিয়েছিল তখন স্কোরের দিকে, ‘শেষ শুটটা সবসময় একটু চাপের থাকে। যদিও আমি দেখি নাই, তারপরেও কে কত স্কোর মেরেছি সেদিকে মনযোগ চলে গিয়েছিল। আমি নিজের সেরা শুটটা মারার চেষ্টা করেছি। জানি না কেন এমনটা হচ্ছে।’ বড় আসরে পদক জিততে হলে আরও বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বাকী, ‘আরও বেশি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। আপনি দেখেছেন তারা (ভারতের শুটাররা) আমার সঙ্গে কাতারে খেলেছে। এসএ গেমসে খেলার আগে চায়না গিয়েছে। জার্মানিতে, নেদারল্যান্ডসে লীগ খেলেছে। তারা সবসময় খেলার মধ্যে থাকে। এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। শুধুমাত্র পার্থক্যটা বোঝালাম। আমি দুই বছরে ফাইনাল প্র্যাকটিশ করছি দুই দিন আর ওরা করছে দশদিন। এটাই আসলে তাদের সঙ্গে আমাদের বড় পার্থক্য।’
আগামীকাল ১০ মিটার এয়ার রাইফেল মিক্সড ইভেন্টে  সৈয়দ আতকিয়া হাসান দিশাকে নিয়ে স্বর্ণের লড়াইয়ে খেলবেন বাকী। এই দু’জনের হাত ধরে আজারবাইজানের বাকুতে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ।

মেয়েদের ৫০ মিটার রাইফেলে রৌপ্য
মেয়েদের ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে দলগত ইভেন্টে রৌপ্য পদক জিতেছে বাংলাদেশ। সৈয়দা আতকিয়া হাসানা দিশা, উম্মে জাকিয়া সুলতানা টুম্পা এবং শারমিন আক্তার রত্না একসঙ্গে দেশকে এই ইভেন্টে রৌপ্য পদক এনে দেন। আগের দিন মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে দলগত ইভেন্টে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন তারা। মেয়েদের ৫০মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনের এককে দিশা ষষ্ঠ এবং টুম্পা সপ্তম হন। রত্না ফাইনালে যেতে পারেননি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status